করোনা: আলোচনা অনুষ্ঠানেই সীমাবদ্ধ এবারের বিজয়মেলা
৯ ডিসেম্বর ২০২০ ২৩:৫১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে আলোচনা অনুষ্ঠানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা হচ্ছে এবারের মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা। প্রতিবছরের মতো পণ্যমেলা এবার হচ্ছে না।
বুধবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য দিয়েছে ‘মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা পরিষদ’।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পণ্যমেলা বন্ধ থাকলেও প্রতিবছরের মতো ১০ ডিসেম্বর বিজয় শিখা প্রজ্জ্বলন হবে। এছাড়া বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসের আলোচনা সভা এবং বিজয় মেলা পরিষদের প্রয়াত চেয়ারম্যান এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্মরণসভার আয়োজন থাকছে।
লিখিত বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, বৈশ্বিক করোনাভাইরাস মহামারির প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে সংক্ষিপ্ত পরিসরে এবারের আয়োজন করা হয়েছে। দীর্ঘদিনের ধারাবাহিকতা রক্ষার পাশাপাশি করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে জনস্বাস্থ্যের নিরাপত্তার কথা ভেবে এভাবে আয়োজন করা হলো।
এতে জানানো হয়, ১০ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের গোল চত্বরে বিজয় শিখা প্রজ্জ্বলন করা হবে।
১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। ১৫ ডিসেম্বর বিজয় মেলার প্রয়াত চেয়ারম্যান এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হবে এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
তবে প্রতিবছরের মত পণ্যমেলা, স্মৃতিচারণামূলক অনুষ্ঠান, শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা, চলচ্চিত্র প্রদর্শনীসহ নানা আয়োজন এবার থাকছে না।
মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, ‘আগামী বছর জাতি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবে। এরূপ পরিস্থিতিতে স্বাধীনতাবিরোধী একাত্তরের ঘাতক-দালাল যুদ্ধাপরাধীরা তাদের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের যোগসাজোশে সুকৌশলে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকে টার্গেট করেছে। ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে তারা এ দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায়।’
‘মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল তার পিতা চট্টলার সিংহ পুরুষ এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ন্যায় মৌলবাদ প্রতিরোধে চট্টগ্রাম থেকে প্রথম সোচ্চার হয়েছেন। পরবর্তী সময়ে এই প্রতিরোধ কর্মসূচি সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে’— বলেন তিনি।
মোহাম্মদ ইউনুস আরও বলেন, আমরা চট্টগ্রামবাসী, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধারা ও মুক্তিযোদ্ধাদের পরবর্তী প্রজন্ম তার সঙ্গে আছি। দেশ মাতৃকার বৃহত্তর প্রয়োজনে যদি জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ ও একাত্তরের পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে সদলবলে যদি মাঠে নামতে হয়, তাহলে তাদের মোকাবিলায় আমরা সদা প্রস্তুত।
করোনা পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনকে ইস্যু করে যারা ফায়দা হাসিল করতে চায়, তারা প্রকৃত আলেম নয় বলেও মন্তব্য করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুস। তিনি বলেন, আমরা এ মোল্লাদের বিরুদ্ধে। আমরা সব সম্প্রদায়ের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাসী। এর ব্যত্যয় হলে আমরা রুখে দাঁড়াব, যেভাবে একাত্তর সালে অস্ত্র হাতে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলাম।
সংবাদ সম্মেলনে নগর মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি হাসিনা মহিউদ্দিন, নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, নগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ, শ্রমিক লীগ নেতা আবুল হোসেন আবু ও নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরসহ মেলা পরিষদের সংগঠকরা উপস্থিত ছিলেন।
‘মুক্তিযুদ্ধের বিজয় বীর বাঙালির অহংকার’ এই স্লোগান নিয়ে ১৯৮৯ সাল থেকে বিজয়ের মাসে চট্টগ্রামে আয়োজিত হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা।
আলোচনা অনুষ্ঠান চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা পণ্যমেলা স্থগিত বিজয়মেলা মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা