আদালত থেকে পালালো খুনের আসামি, ৫ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার
১০ ডিসেম্বর ২০২০ ১৬:৫৮
সুনামগঞ্জ: জেলা আদালতে হাজিরা দিতে আসা খুনের মামলার এক আসামি পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৫ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঘটনা খতিয়ে দেখার জন্য ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
পালিয়ে যাওয়া আসামির নাম ইকবাল হোসেন (৩৫)। সে দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের উস্তেংগের গ্রামের রমজান আলীর ছেলে। ২০১৭ সালের ১৩ জুন স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে হত্যার দায়ে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে পুলিশের পক্ষ থেকে পাঁচ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহারের বিষয়টি জানানো হয়। পাশাপাশি কীভাবে আসামি পালিয়েছে, এতে কারও অবহেলা ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হায়াতুন নবীকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন- জেলা গোয়েন্দা কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন মৃধা ও শহর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মাসুদ আহমেদ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৭ সালে ১৩ জুন স্ত্রীকে হত্যার পর পালিয়ে গেলে ২৫ দিন পর মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে সিলেট শহরে কোতয়ালী থানা এলাকায় থেকে ইকবাল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এরপর থেকে স্ত্রী হত্যা মামলায় কারাগারেই ছিল সে। গত বুধবার (৯ ডিসেম্বর) জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজিরা ছিল তার।
সুনামগঞ্জ শহরতলির হালুয়ারগাঁওয়ের জেলা কারাগার থেকে আদালতে হাজির করার জন্য নিয়ে আসে কোর্ট পুলিশ। দুপুরে আদালত শেষে কোর্ট হাজতে নেওয়া হয়। কোর্ট হাজতে থাকাকালীন অবস্থায় পুলিশের চোঁখ ফাকি দিয়ে পালিয়ে যায়। এই বিষয়টি পুলিশের প্রথমে নজরে না এলেও সন্ধ্যার পর অন্য আসামিদের ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য জেলা কারাগারে নেওয়ার সময় গাড়িতে আসামি সংখ্যা একজন কম হলে বিষয়টি ধরা পড়ে।
সন্ধ্যার পর অন্য আসামিদের ফিরিয়ে দেওয়া হলেও ইকবাল হোসেনকে ফেরৎ দেওয়া হয়নি। বিষয়টি পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসককে জানান জেলা সুপার। পলাতক ইকবালকে ধরতে সুনামগঞ্জ জেলায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে পুলিশ। বিভিন্ন স্থানে চলছে খোঁজ-তল্লাশি।
জেল সুপার নূরশেদ আহমেদ ভূইয়া বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন আসামিদের কোর্ট পুলিশের জিম্মায় দেই। পুলিশ আসামিদের কাভার্ড ভ্যানে করে কোর্ট নিয়ে যায়। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, একজন আসামি মিসিং। আমি জেলা প্রশাসককে বিষয়টি জানিয়েছি।’
পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, হাজিরা দেবার আগে পরে কোন এক সময় এই আসামী পালিয়ে গেছে। আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তদন্ত কমিটিকে দ্রুত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। তদন্তে যারা দোষী সাব্যস্ত হবেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ জানান, পুলিশ সুপার ও জেল সুপারের কাছ তেকে আদালতে হাজিরা দেওয়ার সময় আসামির পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানা গেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করা হয়েছে। আসামিকে গ্রেফতারে সংশ্লিষ্টরা পদক্ষেপ নিচ্ছে বলেও জানান তিনি।
খুনের মামলা তদন্ত কমিটি নিরাপত্তার দায়িত্ব প্রত্যাহার হাজিরা