ঢাকা: সেচ মৌসুমে বিদ্যুৎ-জ্বালানির চাহিদা বাড়তি থাকায় এই সময়ে বিদ্যুৎ ও ডিজেল সরবরাহের ক্ষেত্রে জটিলতা এড়াতে সম্ভাব্য জায়গাগুলোতে কঠোর মনিটরিংয়ের পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী। অন্যদিকে এই সেচ মৌসুমে পরিকল্পিতভাবে বিদ্যুৎ ও ডিজেলের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ অব্যাহত রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে উপদেষ্টা ও প্রতিমন্ত্রী এসব পরামর্শ ও নির্দেশনা দিয়েছেন।
বৈঠকে জানানো হয়, দেশে ব্যবহৃত মোট জ্বালানির প্রায় ৭৩ দশমিক ১১ শতাংশ ডিজেল। এই ডিজেলের ১৮ শতাংশ ব্যবহার হয় কৃষিতে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে কৃষি মৌসুমে সেচ কাজের জন্য ডিজেলচালিত মেশিনের জন্য ডিজেলের চাহিদা ১৯ লাখ ৩৯ হাজার ৩৭০ মেট্রিক টন। অন্যদিকে লুব্রিকেটিং অয়েলের চাহিদা ৫৪ দশমিক ০৩৪ মেট্রিক টন। ডিসেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত এই চাহিদা আরও বাড়তি থাকে। ফলে সরবরাহ ঠিক রাখতে না পারলে সেচ কাজ ব্যাহত হয়।
ভার্চুয়াল বৈঠকে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বলেন, কৃষি আমাদের অর্থনীতির লাইফলাইন। কৃষি যন্ত্রপাতির এনার্জি সেভিং করা প্রয়োজন। সেচ মৌসুমকে সামনে রেখে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে প্রয়োজনীয় তেল/গ্যাস সরবরাহ ও প্রাপ্তি সমন্বিতভাবে নিশ্চিত করতে হবে। সৃজনশীল চিন্তা করে যেকোনো সমস্যা স্থানীয়ভাবে সমাধান করা উচিত। যেসব স্থানে সমস্যা দেখা দিতে পারে, সেসব স্থানে মনিটরিং বাড়ানো উচিত।
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, মহামারিতে অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন আমাদের কৃষকেরা। কৃষিতে সারাবছর জ্বালানি তেলের চাহিদা থাকলেও সেচ মৌসুমে এর চাহিদা বাড়ে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে বেশি বাড়ে। এই সময়ে যেকোনো মূল্যে জ্বালানি তেল সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। পরিকল্পিতভাবে সেচ মৌসুমে সারাদেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও ডিজেল সরবরাহ অব্যাহত রাখতে হবে।
জানা গেছে, দেশে ডিজেলসহ অন্যান্য জ্বালানি পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত রয়েছে। বিপিসি/বিপণন কোম্পানি পর্যায়ে প্রায় ৮৪ শতাংশ জ্বালানি তেল নৌপথে, ৯ শতাংশ রেলপথে ও ৭ শতাংশ সড়কপথে পরিবহন হয়ে থাকে।
ভার্চুয়াল বৈঠকে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর রহমান, বিপিসি চেয়ারম্যান আবুবকর সিদ্দিকীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যুক্ত ছিলেন।