Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হিলি হানাদারমুক্ত হয়েছিল এই দিনে


১১ ডিসেম্বর ২০২০ ০৯:৪৩

হিলি (দিনাজপুর): আজ ১১ ডিসেম্বর। হিলি মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে হিলি পাাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়। আজকের দিনে দিনাজপুরের হিলির মুহাড়াপাড়া এলাকায় বড় ধরনের সম্মুখযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল।

স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা জানিয়েছেন, যুদ্ধ চলাকালীন এখানে প্রায় সাত হাজার পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। শহিদ হন প্রায় ১৩শ মুক্তিযোদ্ধা এবং মিত্র বাহিনীর ৩৪৫ জন সদস্য। আহত হন অনেকে। প্রচণ্ড যুদ্ধের পর ১১ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের ৭ নম্বর সেক্টরের আওতায় দিনাজপুরের হিলি শত্রুমুক্ত হয়।

বিজ্ঞাপন

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বিভিন্ন স্থানে সম্মুখ ও গেরিলা যুদ্ধে হাকিমপুর উপজেলার বোয়ালদাড় গ্রামের মোস্তফা, একরাম উদ্দিন, বানিয়াল গ্রামের মুজিব উদ্দিন শেখ, ইসমাইলপুর গ্রামের মনিরউদ্দিন, মমতাজ উদ্দিন, বৈগ্রামের ইয়াদ আলী ও চেংগ্রামের ওয়াসিম উদ্দিন শহিদ হন।

স্থানীয় বেশ কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা জানান, ১৯৭১ সালে দেশে যখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল।, বিশেষ করে ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণে স্পষ্ট হয়ে ওঠে— যেকোনো মুহূর্তে পাকিস্তানি হানাদারদের সঙ্গে আমাদের সংঘর্ষ বাধতে পারে। এ অবস্থায় সারাদেশের সঙ্গে হাকিমপুর তথা হিলি এলাকার নেতাদের আহ্বানে সমাজসেবক খলিলুর রহমান ও ডা. আবুল কাশেমকে স্বেচ্ছাসেবক কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। স্কুল-কলেজের উৎসাহী তরুণ, আনসার ও মুজাহিদদের সমন্বয়ে বাংলা হিলি বালিকা বিদ্যালয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবক কমিটি গঠন করা হয়।

২৫ মার্চ পাকহানাদার বাহিনীর হামলায় ঢাকা আক্রমণের পর পাক বাহিনীরা যেন হাকিমপুরে প্রবেশ করতে না পারে, সেই লক্ষ্যে হিলির স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সদস্যরা আগে থেকেই সড়কে গাছ কেটে ও রাস্তাঘাটে খনন করে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন এবং বিভিন্ন প্রতিরক্ষামূলক প্রস্তুতি নিতে থাকেন। একপর্যায়ে থানা ও ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস) ক্যাম্প থেকে সেচ্ছাসেবক বাহিনীর কাছে ৩০৩টি রাইফেল হস্তান্তর করা হয়।

বিজ্ঞাপন

এ সময় তৃতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্টের মেজর নিজাম উদ্দিন ১৭টি গাড়িবহরসহ বেশ কিছু অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে ফুলবাড়িতে এসে অবস্থান নেন। ওই স্বেচ্ছাসেবক দলকে হিলি ইপিআর ক্যাম্পের সুবেদার শুকুর আলীর নেতৃত্বে কয়েকজন ইপিআরকে বিহারী অধ্যুষিত পার্বতীপুরের হাবড়ায় খান সেনাদের প্রতিরোধ করার জন্য পাঠায়। এসময় সেখানে স্বেচ্ছাসেবক দলের সঙ্গে পাকহানাদারদের সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয়। প্রচন্ড শেলিং ও বিভিন্ন ধরনের গোলার আঘাতে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৯ জন যোদ্ধা সে সময় শহিদ হন। ৯ মাস যুদ্ধ শেষে ১১ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনীর সহযোগিতা ও মুক্তিবাহিনীর বীরত্বে হিলি শত্রুমুক্ত হয়।

আজ হিলি মুক্ত দিবস উপলক্ষে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠনগুলোর আয়োজনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা সকাল থেকেই বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন।

একাত্তর মুক্তিযুদ্ধ সম্মুখযুদ্ধ হিলি হিলি মুক্ত দিবস

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর