‘দেশের রাজনীতিতে মাস্তানতন্ত্রের জনক বিএনপি’
১২ ডিসেম্বর ২০২০ ১৬:৪৬
ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি জন্মলগ্ন থেকে ক্ষমতার মোহে ধারাবাহিকভাবে যে মানবতাবিরোধী অপরাধ করে আসছে, তার জন্য তাদের মানবতাবিরোধী ট্রাইব্যুনালে বিচার হওয়া উচিত। বিএনপি এদেশের রাজনীতিতে মাস্তানতন্ত্রের জনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শনিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি। ওবায়দুল কাদের তার বাসভবন থেকে ভিডিওকলে সম্মেলনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি নেতারা স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের কথা বলে, মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও জন্ম থেকে অগণতান্ত্রিক চর্চাই তাদের ঐহিত্য। তাদের দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা নেই। তারা দেশে কীভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেন।’
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতা, বিচার বন্ধে ইমডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি, জেল হত্যা, গ্রেনেড হামলা, আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যাসহ মানবতাবিরোধী এমন কোন জঘন্য কাজ নেই যা বিএনপি করেনি বলে সমালোচনা করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি জন্মলগ্ন থেকে ক্ষমতার মোহে ধারাবাহিকভাবে মানবতাবিরোধী অপরাধ তারা করে আসছে। জনগণ মনে করে, মানবতাবিরোধী ট্রাইব্যুনালে তাদেরও বিচার হওয়া উচিত।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির ষড়যন্ত্রের ইতিহাস- তাদের হাতে রক্তের দাগ, পোড়া মানুষের গন্ধ। এদেশের রাজনীতিতে মাস্তানতন্ত্রের জনক। হিযবুল বাহারে নিয়ে কারা মেধাবী ছাত্রদের বিপথে নিয়ে গিয়েছিল? কারা অস্ত্র হাতে তুলে দিয়ে হাজার হাজার মেধাবী তরুণকে বিপথগামী করেছিল? মাস্তানি তো তারাই করে। মাস্তানি করে যারা আজ জনবিচ্ছিন্ন। মাস্তানি তাদের হাতিয়ার। তাদের রাজনীতির সাথে দেশের মাটি ও মানুষের সম্পর্ক নেই।’
তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবকে বলতে চাই, ভোটের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হবে। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। জনগণ যে রায় দেবে তা মেনে নেওয়ার সৎ সাহস শেখ হাসিনার আছে। তাই বলব, জনগণের কাছে যান, বিদেশি শক্তি আপনাদের ক্ষমতায় বসাতে পারবে না। সরকারবিরোধী প্রচারণায় যা ব্যয় করছেন, লবিষ্ট নিয়োগে ব্যয় করছেন, সে অর্থ জনগণের জন্য ব্যয় করুন।’
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘একটি বড় রাজনৈতিক দলের প্রতিযোগিতা থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই প্রতিযোগিতা হতে হবে সাংগঠনিক নিয়ম-নীতির আওতায়, শৃঙ্খলার মধ্যে। দলকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এমন কোনো কাজ করা যাবে না। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা এখন দলীয়-শৃঙ্খলার বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে। দলের শৃঙ্খলা না মানলে যত বড় নেতা জনপ্রতিনিধি হোন না কেন দল ছাড় দেবে না। যারা এর আগে দলের সিদ্ধান্ত না মেনে বিদ্রোহ করেছিল, তারা জয়ী হোক বা পরাজিত হোক; তাদের এবার পৌরসভায় আমরা মনোনয়ন দিইনি। কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের জন্য এটা শেখ হাসিনার এক কঠোর বার্তা।’
নিজের অবস্থান ভারী করার জন্য নিজের লোক দিয়ে পকেট কমিটি গঠন না করার নির্দেশনা দিয়ে ওবায়দুল কাদের আবারও বলেন, ‘দলকে শক্তিশালী করতে হলে নিবেদিত প্রাণ কর্মীদের দলে টেনে আনতে হবে, কাজে লাগাতে হবে।’ চিহ্নিত বিতর্কিত ব্যক্তিদেরও দলে না টানার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
আদমদিঘী উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কুদরত ই ইলাহীর সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিবুল আলম রিপুসহ দলের নেতাকর্মীরা।