এই দিনে ভৈরব রেলওয়ে সেতুটি ধ্বংস করে পাকসেনারা
১৩ ডিসেম্বর ২০২০ ১০:৪৮
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) : আজ ১৩ ডিসেম্বর। একাত্তরের এই দিনে সকাল নয়টার দিকে পাকবাহিনী এ দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে মেঘনা সেতুটি শক্তিশালী ডিনামাইট দিয়ে ধ্বংস করে দেয়। এতে রেল সেতুর ভৈরব পাড়ের দুটি স্প্যান ও আশুগঞ্জ পাড়ের একটি স্প্যানের জয়েন্ট খুলে পানিতে পড়ে যায়। বাংলার সম্পদ ধ্বংস করার হীন মানসে হানাদার বাহিনী এ সেতুটি ধ্বংস করে।
এর আগে ২ ডিসেম্বর ভৈরবে দখলদার পাক বাহিনীর ওপর কয়েক দফায় হামলা চালায় ভারতীয় যুদ্ধবিমান। ৮ ডিসেম্বর সম্মুখ যুদ্ধে ভৈরবের চাঁনপুর গ্রামে তিন ও মধ্যেরচর গ্রামের দুই হানাদার সেনা মুক্তিবাহিনীর হাতে বন্দী হয়। আখাউড়া ও বি.বাড়িয়ায় ধরাশায়ী হয়ে ১০/১২ হাজার পাকসেনা আশুগঞ্জ দিয়ে মেঘনা নদী পাড় হয়ে ভৈরবে আশ্রয় নেয়। ভৈরবে শক্ত ঘাঁটি হতে পাকিস্তানি সেনারা প্রাণভয়ে আত্মরক্ষার জন্য চতুর্দিকে শীলা বৃষ্টির মত ট্যাংক, কামান, মর্টার ও রকেট শেল অবিরাম এক নাগারে সাতদিন পর্যন্ত নিক্ষেপ অব্যাহত রাখে। হানাদার বাহিনীর ধারণা ছিল ভারতীয় মিত্রবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা মেঘনা রেল সেতু দিয়ে হেঁটে ভৈরবে আক্রমণ করবে। এজন্য ১৩ ডিসেম্বর সকালে তারা রেল সেতুর তিনটি স্প্যান ভেঙে দেয়। এছাড়াও এদিন তারা ভৈরবের তৎকালীন ন্যাশনাল ব্যাংকের ট্রেজারি ডিনামাইটের মাধ্যমে উড়িয়ে দিয়ে টাকা পয়সায় আগুন লাগিয়ে দেয়। অন্যান্য ব্যাংকের টাকা পয়সাও পাকসেনারা ক্ষতিসাধনসহ লুট করে নিয়ে যায়। এসব ছাড়াও এদিন হানাদাররা ভৈরব টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, রেলওয়ের স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের মারাত্মক ক্ষতি করে।
ভৈরব উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. সিরাজ আহমেদ জানান, প্রাণভয় ও এদেশের সম্পদ ধ্বংস করার হীন মানসেই এ সেতুটি সেদিন ধ্বংস করা হয়েছিল।