ইসলামকে ধর্ম ব্যবসায়ীদের কাছে লিজ দেওয়া হয়নি: তথ্যমন্ত্রী
১৩ ডিসেম্বর ২০২০ ২২:১০
ঢাকা: ইসলাম ধর্মকে কোনো ধর্ম ব্যবসায়ীর কাছে লিজ দেওয়া হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ভাস্কর্য নিয়ে ইসলামি দলগুলোসহ বিভিন্ন ব্যক্তির বিরোধিতার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মুসলমানেরা কয়েকজন ধর্ম ব্যবসায়ীর কাছে ইসলাম ধর্ম লিজ দেয় নাই। তারাই সব বোঝেন, আর কেউ কিছুই বোঝেন না! সৌদি আরবে ভাস্কর্য জাদুঘর আছে, রাস্তায় রাস্তায় প্রাণীর, এমনকি সৌদি বাদশার মুখাবায়ব সম্পন্ন ভাস্কর্যও আছে। মক্কা শরিফ, মদিনা শরিফের ইমাম সাহেব, গ্র্যান্ড মুফতিরা তো এ নিয়ে কখনো প্রশ্ন তোলেননি!
রোববার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে মুজিববর্ষ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত কৃতি শিল্পী সম্মাননা ও ‘বাঙালির তীর্থভূমি’ স্মরণিকার প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের এই কয়েকজন ধর্ম ব্যবসায়ী তাহলে মক্কা-মদিনার ইমামের চেয়েও বেশি জ্ঞানী, ধর্ম নিয়ে বেশি বোঝেন!
যারা ইসলামের নামে ভাস্কর্যের বিরোধিতা করছেন, তাদের ধর্ম ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, আসলে এরা ধর্ম ব্যবসায়ী। এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। আর এই দেশটি হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান— সবার মিলিত রক্তস্রোতের বিনিময়ে সবার আবাসস্থল হিসেবে স্বাধীন হয়েছে। সুতরাং এখানে ধর্মীয় বিষবাষ্প ছড়ানো সংবিধান লঙ্ঘন, এটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের সামিল বলেই এদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অতীতেও বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে। ২০১৩-১৪-১৫ সালে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। শাপলা চত্বরে কোমলমতি মাদরাসা ছাত্রদের নিয়ে এসে তাণ্ডব চালিয়ে বায়তুল মোকাররমে এমনকি পবিত্র কোরআন শরিফে আগুন দেওয়া হয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডের নেতৃত্বদানকারী ও তাদের অনুসারীরা সেই দায় এড়াতে পারেন না।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজ আবার নতুনভাবে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এই ভূখণ্ডে শত শত বছর ধরে ভাস্কর্য আছে। মোগল আমল থেকে স্বাধীনতার পর এখন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে বহুজনের, অনেক রাজনৈতিক নেতারও ভাস্কর্য স্থাপিত হয়েছে। তখন কোনো কথা ছিল না। হঠাৎ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে তারা প্রশ্ন তুললেন। এর বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখতে ও সারাদেশে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির জন্য সমস্ত সাংস্কৃতিক সংগঠনকে আহ্বান জানাই।