স্প্যান বসানো শেষ, বিদায় নিল তিয়ান-ই
১৩ ডিসেম্বর ২০২০ ২২:৫৮
মুন্সীগঞ্জ: ২০১৭ সালের মার্চে পদ্মাসেতু প্রকল্পের জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল চীন থেকে। এরপর কেটে গেছে প্রায় তিন বছর ৯ মাস। এতদিনে এসে শেষ হয়েছে তার কাজ। আর তাই যেখান থেকে আনা হয়েছিল, সেই চীনেই ফেরত যেতে হচ্ছে।
বলছিলাম ‘তিয়ান-ই’র কথা। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভাসমান ক্রেন এটি। চার হাজার টন ওজন ধারণক্ষমতার এই ক্রেন দিয়েই একে একে ৪১টি স্প্যান বসেছে স্বপ্নের পদ্মাসেতুতে। ৪১তম স্প্যান বসানোর পর শেষ পর্যন্ত মিলেছে তিয়ান-ই’র অবসর। তাই সে এখন পদ্মাসেতু প্রকল্প এলাকা ছেড়ে রওনা দিয়েছে দেশের পথে।
রোববার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে পদ্মাসেতু প্রকল্প এলাকা থেকে বিদায় দিয়েছে ভাসমান ক্রেনটি। পদ্মাসেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের জানিয়েছেন, তিয়ান-ই’র সঙ্গে এর অপারেটর ১২ চীনা নাগরিকও রওনা দিয়েছেন।
প্রকৌশলী আব্দুল কাদের জানিয়েছেন, রোববার মাওয়া থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে বিদায় নিয়েছে তিয়ান-ই। চট্টগ্রাম বন্দরে থেকে হংকং হয়ে জন্মভূমি চীনে পাড়ি জমাবে এটি।
সেতু সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মাওয়া থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত এই ক্রেনের যাত্রা নিরাপত্তায় থাকবেন পুলিশ, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সদস্যরা। সেখান থেকে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স শেষে বড় মাদার ভেসেলের সঙ্গে হংকংয়ের পথে রওনা হবে তিয়ান-ই। চীন পর্যন্ত পৌঁছাতে এর সময় লাগবে একমাসেরও বেশি।
পদ্মাসেতু প্রকল্পের কাজ শুরু হলে স্প্যান বসানোর জন্য চীন থেকে প্রায় দেড় মাস নিয়ে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়েছিল তিয়ান-ই’কে। দেশে এসে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই ভাসমান ক্রেনটি পৌঁছেছিল ২০১৭ সালের মার্চ মাসে। ওই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর সেতুর জাজিরা প্রান্তে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটির ওপর তিয়ান-ই’র সাহায্যে বসানো হয়েছিল প্রথম স্প্যানটি। এরপর তিন বছর দুই মাস ১০ দিন সময় পেরিয়ে গত ১০ ডিসেম্বর বসেছে সেতুর শেষ স্প্যানটি। এর মাধ্যমে স্বপ্নের এই সেতুর নির্মাণযজ্ঞের বড় একটি অংশের সমাপ্তি ঘটেছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রায় ২০ বছর আগে নির্মিত তিয়ান-ই’র দাম আড়াই হাজার কোটি টাকা। ব্যবস্থাপনা ও ভাড়াসহ পদ্মাসেতুতে এর ব্যবহারে খরচ পড়েছে প্রতিমাসে ৩০ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে পদ্মাসেতু প্রকল্পে থাকা অবস্থায় গত ৪৫ মাসে এর পেছনে খরচ সাড়ে ১৩ কোটি টাকা।