মানুষকে বাঁচাতে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে হবে: জি এম কাদের
১৭ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:০৮
ঢাকা: মানুষকে বাাঁচাতে হলে বিনামূল্যে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের।
তিনি বলেন, সরকার করোনা প্রতিরোধে তিন কোটি ভ্যাকসিন বুকিং দিয়েছে। কিন্তু দেশের মানুষ জানে না তিন কোটি ভ্যাকসিন তিন কোটি মানুষ পাবেন, নাকি দেড় কোটি মানুষ দু’টি করে টিকা পাবেন। দেশের বাকি ১৪ থেকে ১৫ কোটি মানুষ কিভাবে টিকা পাবেন, তা সরকারকেই পরিষ্কার করে বলতে হবে।
বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টি আয়োজিত আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নকল টিকায় যেন বাজার সয়লাব না হয়, ভ্যাকসিন নিয়ে যেন কোনো প্রতারণা না হয়, সেজন্য সরকারকে সজাগ থাকতে আহ্বান জানান তিনি।
জি এম কাদের বলেন, বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছে, তারা তাদের দেশের মানুষকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে। এমন বাস্তবতায় আমাদের দেশের ৯০ ভাগ মানুষ পয়সা খরচ করে টিকা নিতে পারবে না। তাই দেশের সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে বিনামূল্যে টিকা সরবরাহ করতে হবে। টিকা সংরক্ষণ ও পরিবহনের সার্বিক প্রস্তুতি নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির আহ্বায়ক শেরিফা কাদেরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় জাপা চেয়ারম্যান আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু মুক্তির জন্য স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, কিন্তু মুক্তি পাইনি। এখনো সমাজে বৈষম্য ও বঞ্চনা বিদ্যমান। ১৯৯১ পরবর্তী সরকারগুলোর শাসনামলে সরকারি দল না করলে চাকরি মেলে না, ব্যবসা মেলে না, সরকারি দল করলে অন্যায় করলে বিচারের মুখোমুখি হতে হয় না। সুশাসন ও আইনের শাসনের অভাবে সবার জন্য সমানভাবে আইন প্রয়োগ হয় না। অথচ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলে সামাজিক বৈষম্য ছিল না, জীবনের নিরাপত্তার অভাব ছিল না।
তিনি বলেন, কোনো দলবাজি ছিল না হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ৯ বছরের শাসনামলে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ স্বাধীনতার স্বাদ গণমানুষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিতে কাজ করেছেন। আমরা পল্লীবন্ধুর আদর্শে নতুন বাংলাদেশ গড়ে স্বাধীনতার সুফল গণমানুষের মাঝে পৌঁছে দেবো। শোষন, বঞ্চনা থেকে মুক্তি দিতেই জাতীয় পার্টির রাজনীতি।
এসময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, দেশের মানুষ স্বাধীনতার সুফল পায়নি। এখনো মানুষের বাকস্বাধীনতা নেই, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই। বলেন আমরা প্রাণ খুলে কথা বলতে চাই, আমাদের কষ্ট আর না পাওয়ার কথা নির্ভয়ে বলতে চাই।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সুসংহত করতেই হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কাজ করেছেন। আমরা সব বাধা-বিপত্তি উপক্ষো করে পল্লীবন্ধুর আদর্শ নিয়ে এগিয়ে যাব। কোনো ষড়যন্ত্র জাতীয় পার্টির ঐক্যে ফাটল ধরাতে পারবে না।
আরেক কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, ৩০ লাখ শহিদের রক্ত আর ২ লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে পল্লীবন্ধুর কল্যাণময় কর্মসূচি উজ্জল হয়ে আছে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশে কাজ করলে রাষ্ট্রক্ষমতা বেশি দূরে নয়। এরশাদের নতুন বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে আমরা সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করব।
জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির আহ্বায়ক ও চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরিফা কাদেরের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, মীর আব্দুস সবুর আসুদ। সভা পরিচালনা করেন জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সদস্য সচিব আলাউদ্দিন আহমেদ।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপার নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের পক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
ফাইল ছবি
করোনার ভ্যাকসিন জাতীয় পার্টি জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টি জি এম কাদের ভ্যাকসিন