Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আকাশ ছুঁয়েছে সালাউদ্দিনের স্বপ্ন


১৭ ডিসেম্বর ২০২০ ১০:০৭

ঠাকুরগাঁও: কৃষি বিভাগে পড়ালেখা করলেও ছোটবেলা থেকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি প্রচণ্ড ঝোঁক ছিল ছেলেটির। তা নিয়ে বন্ধুরা হাসি-ঠাট্টাও করেছে অনেকে। তার পরও থেমে যাননি, চেষ্টা চালিয়ে গেছেন ড্রোন তৈরির। শেষ পর্যন্ত উড়াতেও সক্ষম হলেন আকাশে। বলছিলাম ঠাকুরগাঁওয়ের সালাউদ্দিনের কথা।

রানীশংকৈল উপজেলার বলিদ্বাড়া গ্রামের দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান সালাউদ্দীন। গ্রামের কলেজ থেকেই উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শেখ হাসিনা কৃষি ইনস্টিটিউটের কৃষি বিভাগে। কৃষি বিভাগের ছাত্র হলেও বিজ্ঞান বিষয়ে বেশি আগ্রহ ছিল তার।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, ‘আমার স্বপ্ন বড় হয়ে বিমানের পাইলট হওয়া। কিন্তু পারবো কি না জানি না। ২০১৭ সালে পরীক্ষামূলকভাবে দূরপাল্লার চালক বিহীন বিমান তৈরির কাজ শুরু করি। দীর্ঘ চার বছর প্রচেষ্টার পর ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে নিজের তৈরি ড্রোন উড্ডয়ন করতে সক্ষম হই।’

বশেমুরবিপ্রবিতে ভর্তি হওয়ার পর কয়েকজন বিজ্ঞানমনস্ক বন্ধুকে নিয়ে ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠাতা করেন বশেমুরবিপ্রবি বিজ্ঞান ক্লাব। শুরু করেন ড্রোন বানানোর কাজ। গবেষণার শুরুর দিকে একটি ড্রোন তৈরি করেন যার ওজন ছিল পাঁচ কেজি ও লম্বায় পাঁচ ফুট। ড্রোনটি সর্বোচ্চ চার কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ১ হাজার ফুট উচ্চতায় ৩৫ মিনিট ধরে উড়তে সক্ষম হয়। এরপর সালাউদ্দিন বাঁশ, কাঠ, কর্কশিট, ফোমশিট ব্যবহার করে ছোট আকারের ড্রোন বানানোর চেষ্টা করেন এবং দীর্ঘ প্রচেষ্টার পরে সফলভাবে আরও একটি ড্রোন বানাতে সক্ষম হন। যার ওজন এক কেজি। পরীক্ষামূলক এই ড্রোনটি পাঁচ কিলোমিটার নিয়ন্ত্রণ রেখার ভিতরে সর্বোচ্চ ২ হাজার ফুট উচ্চতায় এবং ১০০ কিলোমিটার গতিতে ২০ মিনিট উড়তে পারে।

বিজ্ঞাপন

সালাউদ্দিনের তৈনি ড্রোনটি ঠাকুরগাঁও জেলা মাঠে (বড় মাঠ) উড়ানো হলে দেখতে ভিড় করেন স্থানীয়রা।

সালাউদ্দিনের ড্রোন উড়াতে দেখতে এসে স্থানীয়রা জানান, তার তৈরি ড্রোন উড়ানো দেখে আমরা বিষ্মিত-অভিভূত হয়েছি। তার ইনোভেশন এবং আবিষ্কার আমাদের গর্বের বিষয়। প্রথমে বিশ্বাসই হয়নি যে, বিমানটি আকাশে উড়বে। দেখার পরে মনে হয়েছে তার মধ্যে যে মেধা আছে। এই মেধাকে বিকশিত করার জন্য সরকারকে সাহায্য করা উচিত। ঠাকুরগাঁওয়ে এই প্রথম নিজেদের তৈরি প্লেন উড়তে দেখলাম, ঠাকুরগাঁওয়ের ছেলে প্রযুক্তির মাধ্যমে বিমান আবিষ্কার করতে পারবে ধারণাই ছিল না।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘তার মেধার মাধ্যমে একটা উড়োজাহাজ তৈরি করেছে। পরীক্ষামূলকভাবে সে সফল হয়েছে। তার এই উদ্ভাবন দেখে অবিভূত হয়েছি। কোনো কারিগরি শিক্ষা ছাড়াই এই বিশাল আবিস্কার করতে সক্ষম হয়েছে। তাকে সহযোগিতা করতে পারলে বিজ্ঞানের জগতে বড় ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।’

ড্রোন বশেমুরবিপ্রবি সালাউদ্দিন

বিজ্ঞাপন

খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমলো
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২১:০৮

আরো

সম্পর্কিত খবর