‘অটো পাস’ দিয়ে প্রজন্মকে ধ্বংস করছে ‘অটো পাস’ সরকার— রিজভী
১৭ ডিসেম্বর ২০২০ ১৮:২৬
ঢাকা: ‘অটো পাস‘ দিয়ে একটি প্রজন্মকে ধ্বংস করছে ‘অটো পাস সরকার’— এমনটিই মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘অটো পাস সরকার বরাবরই নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে একেকবার একেকটা নন-ইস্যুকে ইস্যু বানিয়ে দেশের মানুষ আর গণমাধ্যমকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখে। এ অবস্থায় জনগণের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রসঙ্গ তুলে ধরতে চাই।’
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এ মন্তব্য করেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘কোভিড-নাইনটিনের কারণে বিশ্বের সব দেশই একটি অপ্রত্যাশিত সময় পার করছে। কোয়ারেন্টাইন কিংবা লকডাউন দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। এখন চলছে ভ্যাকসিন কেনার প্রস্তুতি ও প্রতিযোগিতা।’
‘করোনাভাইরাসের কারণে বিকল্প পন্থা অবলম্বন করে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় চালু রেখেছে। অনলাইন অথবা অন্য কোনো বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অব্যাহত রেখেছে। শিক্ষার হাব নামে খ্যাত দেশগুলো যেমন— গ্রেট ব্রিটেন, ভারত, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা বা আমেরিকাসহ কোনো দেশেই আজকের বাস্তবতায় অটো পাস দেওয়া হয়নি। সব দেশেই শিক্ষার্থীর মেধার মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষার বিকল্প শুধু পরীক্ষাই রাখা হয়েছে। অন্য কিছু নয়,’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু বাংলাদেশ চলছে সম্পূর্ণ উল্টো পথে-উল্টো রথে। সব চলছে করোনাভাইরাসের অজুহাতে। শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ করে রাখা রয়েছে। সরকার সারাক্ষণ ডিজিটাল বাংলাদেশের স্লোগান দিলেও বাসায় থেকে কিংবা অন্য কোনো বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে কোনো পরিকল্পনা হাতে নেয়নি। অটো পাস আর ফটোকপি-পাস ব্যাবস্থা গ্রহণ করে একটি প্রজন্মকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘দেশের লক্ষ-কোটি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারের কোনো ভিশন নেই বলেই অন্ধকারের অতল গহব্বরে তলিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। অথচ অফিস, আদালত, শিল্প, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যানবাহন সবকিছুই খুলে দেওয়া হয়েছে।’
রিজভী বলেন, ‘বর্তমানে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে জ্যামিতিক হারে। প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। করোনা নিয়ে সরকার তথ্য গোপন করে অতি সামান্য আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রকাশ করছে। অথচ প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য নেতা-মন্ত্রীরা নিরাপদে আইসোলেশনে থেকে নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন। আর সাধারণ মানুষ বিনা চিকিৎসায় ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন, হাসপাতালের বেড ইত্যাদির অভাবে কাতরাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকাসহ কোথাও আইসিইউ খালি নেই। অক্সিজেনের অভাবে মায়ের কোলেই সন্তান মারা যাচ্ছে। বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে করোনা রোগীকে ফেরত দেওয়া হচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সরকারের কোনো দায়িত্ব নেই। সরকার যেন চোখ বুঁজে ধ্যান করছে।’
ফাইল ছবি