Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিদেশগামীদের করোনা টেস্টের ফি ৩০০ টাকা করার সিদ্ধান্ত


১৭ ডিসেম্বর ২০২০ ২৩:৩৭

ঢাকা: বিদেশগামী যাত্রীদের নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্তকরণে নমুনা পরীক্ষার ফি এক হাজার ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৩০০ টাকা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান।

বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আয়োজিত করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় চট্টগ্রাম বিভাগের প্রস্তুতি বিষয়ক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান তিনি।

স্বাস্থ্য সচিব বলেন, গতকাল (বুধবার) একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিদেশগামী যাত্রীদের করোনা টেস্টের ফি ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৩০০ টাকা করা হয়েছে।

সচিব বলেন, ‘আমি মাননীয় মন্ত্রীকে বললাম, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমার কথা বলুন। বলুন যে আমি প্রবাসীদের জন্য করোনা টেস্ট ফ্রি করে দিতে চাই। তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে ফ্রি করা ঠিক হবে না। সচিব চেয়েছে যেহেতু, ৩০০ টাকা করে দাও। এটা গতকালের সিদ্ধান্ত। এটা একটা বড় নিউজ আজকের জন্য।’

আব্দুল মান্নান আরও বলেন, আমি প্রবাসীকল্যাণ সচিব সালেহীনকে করোনা টেস্টের জন্য একটি কার্ড করে দিতে বলেছি, যেন এই কার্ড দেখালে বোঝা যায় যে তিনি বিদেশ যাবেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি তিনশ টাকা দেবেন। যদি তিনি মনে করে যে বাসা থেকে টেস্ট করাবেন, তাহলে সেই সুযোগও তিনি পাবেন।

স্বাস্থ্য সচিব বলেন, টিকার ব্যাপারে বাংলাদেশের পারদর্শিতা সারা দুনিয়ায় স্বীকৃত। প্রধানমন্ত্রী তিন তিনটি পুরস্কার পেয়েছেন। ‘ভ্যাকসিন হিরো’ খেতাব পেয়েছেন। আপনাদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি। যদি কোম্পানিতে ভ্যাকসিনটা আসে, তাহলে আপনারা সহযোগিতা করবেন। চট্টগ্রামে অনেক বড় বড় শিল্পপতি আছেন। তাদের কাছে আমি অনুরোধ করব, আপনারা আগে যেভাবে এগিয়ে এসেছেন, এবারও এগিয়ে আসবেন।

ফেব্রুয়ারিতে করোনাভাইরাসের ৫০ লাখ টিকা বাংলাদেশে আসবে জানিয়ে মো. আবদুল মান্নান বলেন, যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার তৈরি ৫০ লাখ ভ্যাকসিন ২৫ লাখ মানুষকে আমরা দিতে পারব। এর আয়োজন আমরা করেছি। সব প্রস্তুতি নিয়েছি। আমাদের ২৫ হাজার স্বাস্থ্য সহকারী প্রস্তুত আছেন। প্রায় ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক আমরা বিকল্প হিসেবে প্রস্তুত করে রেখেছি টিকার কাজে ব্যবহারের জন্য।

দেশের চিকিৎসকরা সবাই কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্য সচিব বলেন, আমাদের ৬১০টি হাসপাতাল একসঙ্গে সারাদেশে কাজ করছে। আমাদের ৩০ হাজার ক্যাডার ডাক্তার আছেন। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে আমাদের ৯০ হাজার ডাক্তার আছেন। তারা সবাই কিন্তু করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিয়েছেন। একজন সাধারণ করোনা রোগীর পেছনে সরকারের এক লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয় হচ্ছে। অক্সিজেন ও ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন হলে খরচ হয়েছে চার লাখ টাকা। ১৫ দিন হসপিটালে থাকলে চার লাখ টাকা ব্যয় হয়। সরকার হাজার হাজার মানুষকে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, পৃথিবীতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। পুরো চট্টগ্রাম বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণ করেছে দুই জন। এটা একটা অসাধারণ বিষয়। চট্টগ্রাম জেলাতে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণ করেছে একজন। জাতীয়ভাবে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর যে হার, তার তুলনায় চট্টগ্রামে কম।

তিনি বলেন, করোনা প্রতিরোধে মাস্ক অত্যস্ত কার্যকর— এটা প্রমাণিত। আমরা তিন জন একসঙ্গে বসলে যদি সবার মাস্ক থাকে, তাহলে ৯৮ শতাংশ নিরাপদ। আমার নেই, দু’জনের আছে— তাহলেও ৬০ শতাংশ নিরাপদ। কোনো ওষুধের দরকার নেই, আপাতত শুধুই মাস্ক ব্যবহার করুন। করোনার মধ্যেও দেশে ১৮ হাজার কোটি টাকার রেমিট্যান্স এসেছে বলে জানান স্বাস্থ্য সচিব।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার শংকর রঞ্জন সাহা। সভায় উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী ও মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। এছাড়াও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম, চট্টগ্রাম সিটি করপোরশনের (চসিক) প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কবির, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার এস এম মেহেদী হাসান, সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বিসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

করোনা পরীক্ষার ফি বিদেশগামী বিদেশগামী যাত্রী মতবিনিময় সভা স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর