Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেশে চিকিৎসার অভাবে মারা যায় ৮০% কিডনি রোগী


১৭ ডিসেম্বর ২০২০ ২৩:২৫

ঢাকা: দেশে প্রতিবছর ৪০ হাজার রোগীর কিডনি বিকল হয়। এর মধ্যে মাত্র ২০ শতাংশ কিডনি রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। বাকি ৮০ শতাংশ রোগী চিকিৎসার অভাবে মারা যায়। শুধু তাই নয়, গত ১০ বছরে দেশে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে যাওয়ার প্রভাবে কিডনি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ১০ বছর আগে দেশে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর হার ছিল ৫ থেকে ৬ শতাংশ। বর্তমানে তা বেড়ে ১১ থেকে ১২ শতাংশ হয়েছে। ১০ বছর আগে উচ্চ রক্তচাপের হার ছিল ১০ শতাংশ, এখন তা ২০ থেকে ২৫ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের দুই দিনব্যাপী ১৬তম বার্ষিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর কিডনি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। কেননা কিডনি রোগের প্রধান কারণ হচ্ছে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ। যাদের বয়স ৪০ বছরের বেশি, যাদের পরিবারে কিডনি, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের রোগী আছে, যারা ধুমপায়ী, যারা মুটিয়ে যাচ্ছে, অলসতায় দিন কাটায়, তাদের বছরে অন্তত দুই বার ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ মাপাসহ প্রস্রাবে প্রোটিন নির্গত হচ্ছে কি না— তা পরীক্ষা করা উচিত।

এছাড়া লবণ কম খাওয়া, চিনিজাতীয় খাবার ও ফাস্ট ফুড পরিহার করে কায়িক শ্রম বা ব্যায়াম করা ইত্যাদি নিয়মগুলো মেনে চললে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের পাশাপাশি কিডনি রোগের প্রকোপও কমে আসবে বলে জানানো হয় অনুষ্ঠানে।

হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক বলেন, অসংক্রামক রোগের ভয়াবহতা বেশি। কিডনি রোগ, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ— এই তিনটি রোগে একে অন্যের যোগসূত্র রয়েছে। এই রোগগুলো থেকে মুক্তি পেলে জীবনের ঝুঁকি অনেকাংশে এড়ানো যায়। দুর্ভাগ্যজনক হলো, বাংলাদেশে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ মানুষ জানেই না যে তাদের ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। ফলে তারা কখনো ডাক্তারের শরণাপন্ন হন না। যখন তারা ডাক্তারের শরণাপন্ন হন, তখন দেখা যায় যে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের কারণে তাদের কিডনির কার্যকারিতা ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। তখন আসলে কিছুই করার থাকে না।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে দিন দিন বাড়ছে ডায়াবেটিস রোগী। এ রোগের বিস্তার রোধে সবাইকে সতর্ক হয়ে এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ মিনিট হাঁটা ও ব্যায়াম করা ছাড়াও খাদ্যাভাস পরিবর্তন বা নিয়ন্ত্রণ, ফাস্টফুড পরিহার করতে পারলে ডায়াবেটিস বহুলাংশে রোধ করা যায়।

কিডনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদ বলেন, যখন কিডনির কার্যকারিতা কমে যায়, তখন ক্রমান্বয়ে হৃদরোগও বাড়ে। কিডনির কার্যকারিতা স্বাভাবিক থাকলে মাত্র ২ শতাংশ কিডনি রোগী হার্টের জটিলতায় ভোগে। কিন্তু কিডনির কার্যকারিতা ৮০ ভাগ কমে গেলে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা ৪০ শতাংশ বেড়ে যায়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদ। কিডনি ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মুহিবুর রহমান সহ দেশ-বিদেশের খ্যাতনামা কিডনি রোগ ও ট্রান্সপ্লান্ট বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। কিডনি রোগের নানা দিক, ডায়াবেটিস রোগীর চিকিৎসা, কিডনি অকেজো রোগীর দেহে মৃত ব্যাক্তির কিডনি সংযোজনসহ উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতির কথাএ ভার্চুয়াল আলোচনায় উঠে আসে।

১৬তম বার্ষিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন কিডনি কিডনি ফাউন্ডেশন কিডনি বিকল কিডনি রোগী

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর