Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তৈরি হচ্ছে নতুন রকমের জাল টাকা, নিরাপত্তা সুতা থাকায় বোঝা মুশকিল


১৮ ডিসেম্বর ২০২০ ০৯:৫১

ঢাকা: দেখতে আসল টাকার মতোই, এমনকি রয়েছে নিরাপত্তা সুতাও। দেখে সহজে বোঝার উপায় নেই যে, কোনটি আসল আর কোনটি নকল— এমনই জাল টাকা তৈরির একটি কারখানায় অভিযান চালিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর জুরাইন শহীদ শাহাদত হোসেন রোডের একটি ভাড়া বাসায় জাল টাকার কারখানার সন্ধান পেয়ে অভিযান চালায় ডিবি। সেখান থেকে ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- জাকির হোসেন, বাদল খান, জাহাঙ্গীর আলম, জসিম উদ্দিন, মালেক ফরাজী, শিহাব, ওবায়দুল, জামাল ও একজন নারী। জাকির হোসেন এই চক্রের মূলহোতা।

গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান বলেন, ‘চক্রের সদস্যরা এর আগেও বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হয়েছিল। জামিনে বের হয়ে আবার একই কাজে যুক্ত হয় তারা। বিভিন্ন উৎসবকে সামনে রেখে ঢাকাসহ সারাদেশে তারা জাল টাকা সরবরাহ করে। এবার তাদের টার্গেট ছিলো আসন্ন থার্টিফার্স্ট নাইট এবং নববর্ষ। এ উপলক্ষে তারা বিপুল পরিমাণ জাল নোট ও জাল রুপি তৈরি করছিল বাজারে সরবরাহের জন্য। নকল নোট এমনভাবে তৈরি করে যে, তা দেখে নকল বোঝার উপায় থাকে না। যে কারণে সহজেই চক্রটি বাজারে মানুষের কাছে নকল টাকা ছড়িয়ে দিতে পারে।’

গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ২০ লাখ ভারতীয় জাল রুপি, ৩২ লাখ জাল টাকা, বিপুল পরিমাণ জাল মুদ্রা তৈরির বিশেষ ধরনের কাগজ, নিরাপত্তা সুতা, প্রিন্টারসহ জাল টাকা তৈরির বিভিন্ন উপকরণ জব্দ করা হয়। এসব উপকরণ দিয়ে আরও কয়েক কোটি জাল টাকা ও রুপি তৈরি করা সম্ভব। তাদের কাছ থেকে ৪ লাখ পাঁচ হাজার আসল টাকাও উদ্ধার করা হয়। এই টাকা তারা জাল নোটের বিনিময়ে পেয়েছিল। জব্দ করা জাল টাকার মধ্যে এক হাজার ও পাঁচশ টাকা মূল্যমানের নোট এবং জাল রুপির মধ্যে পাঁচশ রুপির জাল নোট রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ডিবি জানিয়েছে, গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ডজনখানেক মামলা রয়েছে। আসামি জাকির ২০১৯ সালে স্ত্রী এবং অপর সহযোগীসহ গ্রেফতার হয়েছিল। জাকির জাল টাকা ও রুপি তৈরির বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। ওবায়দুল ও জসিম জাল টাকা তৈরির কারখানায় বিশেষ কাগজ, নিরাপত্তা সুতা তৈরি এবং অন্য কাজ করত। বাদল ঢাকা, সাভার ও মানিকগঞ্জের পাইকারি ডিলার। শিহাব রাজধানীর পাইকারি ডিলার। সাগর নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের ডিলার। জামাল বরিশালসহ দক্ষিণ অঞ্চলে জাল নোট সরবরাহকারীদের মূল হোতা।

ডিবি আরও জানিয়েছে, চক্রটি শক্তিশালী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জায়গার খোলাবাজার, বিপণিবিতান, যানবাহনের চালক ও হেলপারদের বিভিন্ন কৌশলে ধোঁকা দিয়ে জাল টাকা সরবরাহ করে। ঢাকা ছাড়াও তারা বাগেরহাট, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে জাল টাকা তৈরি করত।

মূলহোতা জাকির জানিয়েছে, নিরাপত্তা সুতা ভারত থেকে এনেছেন তারা। বাকি সরঞ্জাম তারা ঢাকা থেকেই সংগ্রহ করতো। করোনার কারণে দীর্ঘদিন জাল টাকা ও রুপি ছাপানো বন্ধ ছিল। এ মাসের শুরুতে তারা নতুন করে জাল টাকা ছাপানোর কাজ শুরু করেছে। বাজারে এরইমধ্যে প্রায় ৫০ লাখ টাকা ছড়িয়ে দিয়েছে। প্রতি এক লাখ টাকা তারা বিক্রি করতো ২৫ হাজার টাকায়।

গোয়েন্দা পুলিশ জাল টাকা নিরাপত্তা সুতা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর