Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পি কে হালদারকে গ্রেফতারে ইন্টারপোলের কাছে আবেদন


২০ ডিসেম্বর ২০২০ ১৫:৪৩

ঢাকা: ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পিকে) ধরতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইন্টারপোলের কাছে পাঠানো হয়েছে।F

বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি সারাবাংলাকে বলেন, `পিকে হালদারকে ধরতে গ্রেফতারি পরোয়ানা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ইন্টারপোলের কাছে পাঠানো হয়েছে।`

তিনি আরও বলেন, `ভুক্তভোগীদের কাজ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, পি কে হালদার অসংখ্য নারীর কাছে কোটি কোটি স্থানান্তর করেছেন। এদের মধ্যে অনেক নারীই তার গার্লফ্রেন্ড। এসব বিষয়ে আরও যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।`

আগামী ৩ জানুয়ারি পিকে হালদারের মামলার তদন্ত ও গ্রেফতারের বিষয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চে এসব বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের করা হবে বলে জানান তিনি।

এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের বিষয়ে পরবর্তী তথ্য জানাতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), স্বরাষ্ট্রসচিব, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স (বিএফআইডি) ইউনিটসহ সংশ্লিষ্টদের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

১৭ ডিসেম্বর শুনানির আগে দুদক, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইউ), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশের আইজি, এনবিআরসহ বেশ কয়েকটি সংস্থা অর্থ পাচারকারীদের বিষয়ে আদালতে লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

বিজ্ঞাপন

তারও আগে গত ৯ ডিসেম্বর পিকে হালদারের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার তদন্ত ও তাকে গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চান হাইকোর্ট। পরে এ বিষয়ে আগামী ৩ জানুয়ারি অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

ওইদিন উজ্জ্বল কুমার নন্দী এবং অমিতাভ অধিকারী নামে দুই ব্যক্তি পিকে হালদারের এ মামলায় নতুনভাবে পক্ষভুক্ত হওয়ার আবেদন করলে আদালত তাদেরকে পক্ষভুক্ত করেন।

আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

এর আগে তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা পাচার ও লোপাটের অভিযোগে বিদেশে পালিয়ে থাকা পিকে হালদারের বিরুদ্ধে গত ২ ডিসেম্বর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে নিম্ন আদালত।

গত ২ ডিসেম্বর পিকে হালদারের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার আড়াই মাস পরেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন হাইকোর্ট। এরপর ওইদিনই বিচারিক আদালত পিকে হালদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।

পিকে হালদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য গত ১৫ সেপ্টেম্বর নিম্ন আদালতে আবেদন করে দুদক। একই সঙ্গে বিদেশে পালিয়ে থাকা পিকে হালদারের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানায়।

এর আগে গত ১৯ নভেম্বর বিদেশে পালিয়ে থাকা পিকে হালদারকে বিদেশ থেকে দেশে আনতে এবং গ্রেফতারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।

দুদক চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ ও গোয়েন্দা বিভাগ, এনবিআর চেয়ারম্যান, পুলিশ মহাপরিদর্শক ও ঢাকা জেলা প্রশাসককে ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

দুদক সে বিষয়ে ২ ডিসেম্বর লিখিত ব্যাখ্যা আদালতে জমা দেয়।

এর আগে গত ১৮ নভেম্বর দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে ‘পিকে হালদারকে ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে দুদক’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে এ রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

পিকে হালদার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থেকে অন্তত সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

পরে দুই বিনিয়োগকারীর করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১৯ জানুয়ারি এক আদেশে পিকে হালদারসহ সংশ্লিষ্ট ২০ জনের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

এর মধ্যে দেশে ফিরতে পিকে হালদার এ বিষয়ে আদালতের কাছে আবেদন করতে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের কাছে একটি চিঠি দেন। এরপর কোম্পানিটি আদালতে আবেদন করে। গত ৭ সেপ্টেম্বর আদালত বলেছেন তিনি কখন কীভাবে আসবেন তা জানাতে। পরে গত ২০ অক্টোবর একটি আবেদন করেছে কোম্পানিটি। যেখানে নির্বিঘ্নে দেশে আসার কথা বলা হয়েছে এবং সেখানে গত ২৫ অক্টোবরের একটি টিকিটের কপিও সংযুক্ত করা হয়।

গত ২১ অক্টোবর হাইকোর্ট এ বিষয়ে এ আদেশ দেন। আদেশে দেশে আসার সঙ্গে সঙ্গে তার গ্রেফতার নিশ্চিত করতে বলা হয়।

পুলিশের মহাপরিদর্শক, ইমিগ্রেশন অথরিটিরি চিফ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতি এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

তবে গত ২৪ অক্টোবর ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের আইনজীবী জানিয়েছেন- পিকে হালদার গত ২৫ অক্টোবর দেশে ফিরছেন না।

প্রশান্ত কুমার হালদার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর