ভুয়া চিকিৎসকের সর্বোচ্চ সাজার বিধান চেয়ে রিট
২১ ডিসেম্বর ২০২০ ১৭:৩৬
ঢাকা: ভুয়া চিকিৎসকের সর্বোচ্চ সাজার বিধানসহ (যাবজ্জীবন ও মৃত্যুদণ্ড) এবং আর্থিক জরিমানার বিধান করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে।
রিটে, দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নিরাপত্তার লক্ষ্যে বিবাদীদের বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১০ এর ধারা ২(৩) ও ২৯(২) সংশোধন করে ভুয়া চিকিৎসকের সাজা তিন বছর ও জরিমানা ১ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা মৃত্যুদণ্ডসহ জরিমানা বৃদ্ধির জন্য সুপারিশ করা হবে না, এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
রিটে আইন সচিব, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্টারকে বিবাদী করা হয়েছে।
সোমবার (২১ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবী মো. জে আর খাঁন রবিন এই রিট দায়ের করেন।
আইনজীবী জে আর খাঁন রবিন বলেন, ‘রিটে দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নিরাপত্তার লক্ষ্যে আজ বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১০ এর ধারা ২৮(৩) ও ২৯(২) সংশোধন করে ভুয়া চিকিৎসকের সাজা তিন বছর ও জরিমানা ১ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা মৃত্যুদণ্ডসহ জরিমানা বৃদ্ধির আবেদন জানানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫(ক) ও ১৮(১)অনুচ্ছেদ অনুযায়ী স্বাস্থ্য সেবা ও জনস্বাস্থ্যের কথা উল্লেখ থাকলেও অনুচ্ছেদ ৩১ ও ৩২ অনুযায়ী মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্য সেবা একটি মৌলিক অধিকার। মানুষের এই স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে চিকিৎসকদের ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু বর্তমানে অনেক ভুয়া চিকিৎসক নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতিনিয়ত প্রতারণা করছে। শুধু তাই নয়, দেশের সাধারণ মানুষ এই সব ভুয়া চিকিৎসকদের কাছে গিয়ে প্রতিনিয়ত নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এমনকি শারীরিকভাবে স্থায়ী অক্ষমতাসহ অনেকেই মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছে।‘
অথচ বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইনের ধারা ২৮(৩) অনুযায়ী যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেকে নিবন্ধনকৃত একজন মেডিক্যাল চিকিৎসক বা ডেন্টাল চিকিৎসক বলে প্রতারণা করেন অথবা প্রতারণামূলকভাবে তার নাম বা পদবীর সঙ্গে নিবন্ধনকৃত মর্মে কোনো শব্দ, বর্ণ বা অভিব্যক্তি ব্যবহার করেন তার মিথ্যা পরিচয় দ্বারা কোনো ব্যক্তি প্রতারিত না হলেও তার জন্য তিনি তিন বছর কারাদণ্ড অথবা ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে। অন্যদিকে উক্ত আইনের ধারা ২৯ অনুযায়ী কেউ অনুমোদিত মেডিকেল কলেজ অথবা প্রতিষ্ঠান হতে এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রি অর্জন না করে তার নামের পূর্বে চিকিৎসক উপাধি ব্যবহার করলেও অনুরূপ সাজার বিধান রয়েছে।
এ বিষয়ে জে আর খাঁন রবিন বলেন, ‘১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫(সি) ধারা অনুযায়ী খাদ্য ও ওষুধ তৈরি বা বিক্রির জন্য মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীন কারাদণ্ড অথবা ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডসহ জরিমানার বিধান রয়েছে। মানুষের সার্বিক ক্ষতির দিক বিবেচনা করে উক্ত সাজা যুক্তিযুক্ত। কিন্তু একজন ভুয়া চিকিৎসকের চিকিৎসার কারণে মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবন ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় সাজা অত্যন্ত নগণ্য। এ কারণে ভুয়া চিকিৎসকদের সাজা মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন চাওয়া হয়েছে রিটে।’
রিটকারী আইনজীবী মো. জে আর খাঁন রবিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে খুব দ্রুতই এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।’