কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলার আরেক আসামি গ্রেফতার
২১ ডিসেম্বর ২০২০ ১৭:২১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার আরও এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে ঘটনায় জড়িত দু’জনকেই পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, নোয়াখালীতে আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপনে ছিল ওই আসামি।
সোমবার (২১ ডিসেম্বর) ভোরে নোয়াখালী জেলার সুধারামপুর উপজেলার মাইজদী বাজারের পাশে ফতেপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে নগরীর আকবর শাহ থানা পুলিশ।
আরও পড়ুন- ‘কান্নার শব্দ ঢাকতে’ উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ
গ্রেফতার মেহেদী হাসান আশিক রাব্বানী বাবু (২৩) নগরীর আকবর শাহ থানার পূর্ব ফিরোজ শাহ কলোনির ঈদগাঁও মাঠের পূর্বপাশে ই/পি লেইনে আব্দুল বাতেন মেম্বারের ভবনের পঞ্চম তলার বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম জাহেদের ছেলে।
একই মামলার আরেক আসামি রাকিবুল হাসান আরিয়ানকে (২০) গত ১৫ ডিসেম্বর গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। রাকিবুল নগরীর আকবর শাহ থানার জানারখিল আরিফ চৌধুরী বাড়ির ভাড়াটিয়া মমতাজ চৌধুরীর ছেলে।
আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহির হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, ঘটনার দুই দিন পর মেহেদী চট্টগ্রাম থেকে পালিয়ে যায়। নোয়াখালীতে খালার বাসায় সে আশ্রয় নিয়েছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আমরা তাকে গ্রেফতার করেছি। মেহেদীকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।’
মামলার এজাহারে বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশের ভাষ্য, ঘটনার শিকার ১৮ বছর বয়সী মেয়েটির বাসা আকবর শাহ থানা এলাকায়। তিনি নগরীর ওমরগণি এমইএস কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। রাকিবুলের সঙ্গে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে পরিবারের চাপে ঘটনার মাসখানেক আগে মেয়েটি সেই সম্পর্ক ভেঙে দেয়।
গত ১১ ডিসেম্বর বিকেলে বই কেনার কথা বলে মেয়েটি বাসা থেকে বের হয়। রাতে চরম অসুস্থ ও বিধ্বস্ত অবস্থায় বাসায় ফিরে কান্না শুরু করে। এসময় মেয়েটি অভিভাবকদের জানায়, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়ার কথা বলে তাকে ফোন করেছিল রাকিবুল। আহত অবস্থায় সে মেহেদীর বাসায় আছে জানিয়ে তাকে সেখানে যাওয়ার অনুরোধ করে। দুর্ঘটনার কথা শুনে মেয়েটি ওই বাসায় ছুটে যায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে সে দেখতে পায়, রাকিবুলের দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার বিষয়টি মিথ্যা। ফাঁকা বাসায় রাকিবুল ও মেহেদী মিলে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বাসায় ঢোকার পর তাদের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে মেয়েটি দু’জনের পায়ে ধরে কান্না শুরু করে। কিন্তু কান্নার চিৎকার যাতে কেউ শুনতে না পায় সেজন্য তারা উচ্চশব্দের সাউন্ডবক্সে গান ছেড়ে দেয়।
ওসি জহির সারাবাংলাকে জানান, এ ঘটনায় মেয়েটির মা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় রাকিবুল ও মেহেদীকে আসামি করা হয়। গ্রেফতারের পর রাকিবুল ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছিলেন। মেহেদীকেও জবানবন্দি নেওয়ার জন্য আদালতে হাজির করা হয়েছে।
রাকিবুল ও মেহেদী উভয়ই বখাটে হিসেবে এলাকায় পরিচিত। রাকিবুল চট্টগ্রাম নগরীর ওমরগণি এমইএস কলেজ ও জিইসি মোড়কেন্দ্রিক কথিত যুবলীগ নেতা মো. আলী সাহেদের কর্মী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন। ২০১৭ সালে চকবাজার থানায় দায়ের হওয়া একটি অস্ত্র মামলায় রাকিবুলের সঙ্গে আলী সাহেদও আসামি ছিলেন। রাকিবুলের বন্ধু মেহেদীও নিজেকে যুবলীগ কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন। মূলত রাজনৈতিক পরিচয়েই তারা বেপরোয়া কর্মকাণ্ড করেন বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।