Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিট পুলিশিংয়ে পাল্টে যাচ্ছে গ্রামের চিত্র


২৪ ডিসেম্বর ২০২০ ১৬:৫১

বরিশাল: বরিশাল রেঞ্জের আওতাধীন ৬ জেলার বিভিন্ন গ্রাম ও পাড়ায় শান্তি রক্ষা ও দাঙ্গা হ্রাস করতে বিট পুলিশিং কার্যকরী ভূমিকা রাখছে। বিট পুলিশিংয়ের ফলে চুরি-ডাকাতি, খুনখারাবি, নৃশংসতা, বর্বরতা ও নির্মমতার ঘটনা ক্রমাগত হ্রাস পাওয়ায় গ্রামের চিত্র ক্রমেই পাল্টে যাচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পুলিশ বাহিনীকে আরও বেশি জনমুখী করতে ও মানুষের দোরগোড়ায় পুলিশি সেবা পৌঁছে দিতে বেনজীর আহমেদ আইজিপির দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই সারাদেশে বিট পুলিশিং ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। গত ১৬ জুন এক ভিডিও বার্তায় ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের যে পাঁচ দফা নির্দেশনা দেন তিনি, এরমধ্যে বিট পুলিশিং অন্যতম। পরে ২১ জুন রাতে আরেকটি ভিডিও কনফারেন্সে বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পুলিশকে জনগণের কাছে নিয়ে যেতে ইউনিট প্রধানদের নির্দেশনা দেন আইজিপি। যদিও ২০১৭ সালের শেষ দিকে বরিশাল রেঞ্জে বিট পুলিশিং কার্যক্রম শুরু হয়। ওই থেকেই এ কার্যক্রমের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে ব্যাপক সফলতা পায় বরিশাল রেঞ্জ পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিভাগের প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রত্যেক ওয়ার্ডে বিট পুলিশিং কমিটি রয়েছে। প্রত্যেকটি কমিটির জন্য সংশ্লিষ্ট থানার একজন উপপরিদর্শক (এসআই) দায়িত্ব পালন করছেন। গ্রামে কোনো সমস্যা দেখা দিলে বিট পুলিশিংয়ের দায়িত্বে থাকা এসআইকে খবর দেওয়া হয়। তিনি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এছাড়া মাসে কমপক্ষে চারবার দায়িত্বরত এসআই কমিটির লোকজনের সঙ্গে আলাপ আলোচনায় বসেন।

বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. আরিফুর রহমান বলেন, বিট পুলিশিংয়ের গতিশীল কার্যক্রমে লোকজন আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হচ্ছেন। দাঙ্গা থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। এলাকায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, হত্যাকাণ্ডসহ নানা অপরাধ প্রবণতা হ্রাস পেয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ঝালকাঠি জেলার নলছিটি পৌরসভার বাসিন্দা মো. হাসান ফকির বলেন, ‘বিট পুলিশিংয়ের কার্যক্রম থাকায় গ্রামের সামাজিক পরিবেশ পাল্টে গেছে। অপরাধ প্রবণতা হ্রাস পেয়েছে। গ্রামে গ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হলে বিট পুলিশিং কার্যক্রমকে আরও এগিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।’

পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সেবা নিতে এখন আর থানায় যেতে হচ্ছে না। বিট পুলিশিং কার্যক্রমের ফলে থানা পুলিশের ওপর চাপ অনেকটাই কমে গেছে। ছোট ছোট অভিযোগ দ্রুত নিষ্পত্তি হয়ে যাচ্ছে।’

সুন্দর দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম-বিপিএম (বার), পিপিএম বলেন, ‘পুলিশ সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ আর পুলিশ হলো জনগণের সেবক। পুলিশের দায়িত্ব নিরাপত্তা দেওয়া। নিরাপদ দেশ গড়ার জন্য নিরাপত্তা দেওয়া একা পুলিশ বাহিনীর পক্ষে সম্ভব না। সমাজের সকল শ্রেণির মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনে তথ্য দিয়ে পুলিশকে যদি সহযোগিতা করে তবে নিরাপদ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।’

তিনি আরও বলেন, ‘জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিট পুলিশিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিট পুলিশ কর্মকর্তার দায়িত্ব হলো তার এলাকার সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখা এবং তাদের জননিরাপত্তা বিষয়ক কোনো সমস্যা আছে কি না সে সর্ম্পকে অবগত হওয়া। পুলিশ ও জনতা ঐক্যবদ্ধ হলে মাদক, চাঁদাবাজি, ইভটিজিং এবং সন্ত্রাস কোনো কিছুই থাকবে না।’

পুলিশ বরিশাল বিট পুলিশিং

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর