রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া ৪২ নাগরিকের অভিযোগ ভিত্তিহীন: সিইসি
২৪ ডিসেম্বর ২০২০ ১৯:০৪
ঢাকা: নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি, অসদাচরণকারী উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতিতে দেওয়া দেশের বিশিষ্ট ৪২ জন নাগরিকের চিঠিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা। তিনি বলেন, ‘কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়াই কমিশনের বিরুদ্ধে এই ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত ইসি সচিবালয়ের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিইসি এসব কথা বলেন। এ সময় কমিশনার রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদত হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
সিইসি বলেন, ‘তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে সংসদ এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিটি পদের বিপরীতে ২ থেকে ৮ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।’ নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা চলে গেছে এমন দাবিকে তিনি ভিত্তিহীন বলেও মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সচিবালরেয় ৩৩৯টি শূন্য পদে টেলিটকের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন আহ্বান করে ৫টি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। টেলিটকের মাধ্যমে ২ লাখ ৯৩ হাজার ৭২৮টি আবেদন জমা পড়ে। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে নৈর্ব্যত্তিক ও লিখিত পরীক্ষার গ্রহণের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’ ফলে নিয়োগের মাধ্যমে ৪ কোটি ৮ লাখ টাকার অনিয়ম হয়েছে মর্মে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন।
ইসির অপসারণ চেয়ে রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া ৪২ নাগরিকের চিঠিতে যা আছে
কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ ও ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ১৫ জন বিশেষ বক্তার জন্য কর্মপরিকল্পনায় ২ কোটি টাকার বরাদ্দই ছিলো না। সেখানে নির্বাচন কমিশনারদের বিশেষ বক্তা হিসাবে বক্তৃতা দেওয়ার নামে ২ কোটি টাকার আর্থিক অনিয়মের ঘটনাটি অসত্য তথ্যের ভিক্তিতে করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন নিয়মবর্হিভূতভাবে ৩টি করে গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছে এ্ই ধরনের অভিযোগ অসত্য ও ভিত্তিহীন। এছাড়াও বিভিন্ন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করায় নির্বাচনে ভোটদান সহজ এরং নির্বাচন স্বচ্ছ ও নির্ভরযোগ্য হচ্ছে। ইভিএম ক্রয়ে কোন ধরনের অনিয়মও হয়নি। এটি ক্রয়ের কোন তহবিল সরকারের কাছে নেই বরং সরকার সরাসরি ইভিএম ক্রয় বিল সেনাবাহিনীকে পরিশোধ করে। ফলে এই কাজে নির্বাচন কমিশন কোনো আর্থিক লেনদেনের সাথে সম্পর্কিত নয়। ফলে কমিশনের দুর্নীতির কোনো প্রশ্নই উঠে না।’
সিইসি লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ, বিভিন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। কোনো মিডিয়ায় অনিয়মের কোনো খবর প্রচার হয়নি। কোনো কোনো স্থানে নির্বাচন অনিয়মের খবর পেলে কমিশন সেখানে পুনরায় ভোটগ্রহণ করে। ২০১৯ সালে কুমিল্লার তিতাস এবং ২০২০ সালে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাচন অনিয়মের অভিযোগে বাতিল করা হয়েছে।’ নির্বাচন কমিশন ভোট অনিয়ম সংক্রান্ত যেকোনো অভিযোগ পেলে তা আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ইসি’র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি