উৎসবমুখর পরিবেশে দেশে ‘বড়দিন’ উদযাপন
২৫ ডিসেম্বর ২০২০ ১৭:৩৩
করোনা মহামারি থেকে মুক্তির প্রার্থনা ও পারস্পরিক সৌহার্দ্য বজায় রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে ঢাকাসহ সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হচ্ছে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ বড়দিন’। এ উপলক্ষে দেশের সব চার্চ রঙিন বেলুন ও ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। উৎসব নির্বিঘ্ন করতে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা।
সারাবাংলার স্টাফ ও ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্টদের পাঠানো খবরে ডেস্ক রিপোর্ট।
ঢাকা: রাজধানীর কাকরাইল সেন্ট মেরী ক্যাথিড্রাল চার্চ, তেজগাঁও ক্যাথলিক গির্জা, মিরপুর ব্যাপিস্ট চার্চসহ বিভিন্ন চার্চে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বড়দিন উপলক্ষে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও গির্জাগুলোয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
বরিশাল: বড়দিন উপলক্ষে জেলার অক্সফোর্ড, ক্যাথলিক ও ব্যাপটিস্ট সম্প্রদায়ের গির্জাগুলো মাদার মেরীর প্রতিকৃতি দিয়ে সাজানো হয়েছে। করোনার কারণে এ বছর ক্যালর অর্থাৎ যিশুখ্রিষ্টের কীর্তন বা বনভোজন হয়নি। নগরীর সদর রোড়ের সেন্ট পিটারর্স ক্যাথিড্রাল চার্চের ফাদার লাজারু গোমেজ বলেন, আমরা একে অপরের সহযোগিতা নিয়ে চলমান বৈশ্বিক মহামারি মোকাবেলা করে জয়ী হয়ে সামনে এগিয়ে যাবো। বেড়ে ওঠা শিশুরা মানব কল্যাণে কাজ করবে।
উপস্থিত ভক্তরা বলেন, যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিনে তারা সবাই আনন্দঘন পরিবেশে গির্জায় এসে প্রার্থনায় যোগ দিয়েছেন। প্রতিবছর তারা এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। ইশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছেন যাতে দ্রুত মহামারি থেকে দেশ ও বিশ্বকে তিনি মুক্ত করেন। ইশ্বর জননী ধন্যা কুমারী মারীয়ার পর্বোৎসবের মধ্যদিয়ে আগামী ১ জানুয়ারি সমাপ্তি ঘটবে বড়দিনের ছয় দিনব্যাপী অনুষ্ঠান।
গাজীপুর: কালীগঞ্জের খ্রিষ্টান পল্লীখ্যাত নাগরী এলাকায় সেইন্ট নিকুলাস গির্জায় সমবেত প্রার্থনার মধ্য দিয়ে সকালে শুরু হয় যিশু খ্রিষ্টের জন্মদিন উৎসব। আগত সকল শ্রেণি-পেশার যিশু ভক্তরা ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্য বিনিময় করেন। আয়োজন করা হয় বৃহৎ প্রার্থনা সভা। প্রার্থনা সভা পরিচালনা করেন ফাদার জয়ন্ত এস গোমেজ।
এর আগে সকালে গির্জায় ঘণ্টা ধ্বনি, সমবেত প্রার্থনা ও প্রচলিত রীতিনীতির মধ্যদিয়ে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের এ ধর্মীয় উৎসব শুরু হয়। নারী-পুরুষ ও শিশুরা যিশুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে জীবনযাপন ও করোনা সময়ে সকল দেশবাসীর মঙ্গল কামনা করেন।
নাটোর: যথাযথ ধর্মীয় আচার, আনন্দ-উৎসব ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে নাটোরে দিনটি উদযাপন করা হচ্ছে। বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া ধর্মপল্লী গির্জায় সকাল সাড়ে সাতটা ও সাড়ে নয়টায় দুই দফায় প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রার্থনায় বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীতে শান্তি কামনা করা হয়।
‘শুভ বড়দিন’ আজ
শুভ বড়দিনের কেক কাটা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা ও নাটোর জেলা প্রশাসক শাহরিয়ার ও বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়াস্থ ধর্মপল্লীর ফাদার রিকাশ রিবেরু সহ অন্যান্যরা।
নেত্রকোনা
নেত্রকোনার সীমান্ত এলাকা দুর্গাপুরে নানাা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পালিত হচ্ছে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন। যথাযথ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, আনন্দ-উৎসব ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে দিনটি।
এ উপলক্ষে জেলার দুর্গাপুর উপজেলার মনসা ভেদীকুডা ব্যাপ্টিস্ট মন্ডলিতে সকাল থেকেই দেখা গেছে উৎসবের আমেজ। ধর্মীয় সকল রীতি নীতি মেনে ইলিয়াস দালবৎ পাবনের পরিচালনায় উৎসবে যোগদেন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা।
এছাড়াও সবচেয়ে বড় ক্যাথলিক গীর্জা রানীখং মিশনে পালিত হয়েছে বড়দিন। আর এ দিন উপভোগ করতে সব ধর্মের নানা বয়সের মানুষের পদচারণায় মুখরিত ছিল মিশন চত্বর। দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠে দুর্গাপুরের বিরিশিরিসহ রানীখং মিশন।
শুক্রবার সকালে উপজেলার বিরিশিরিতে যিহোবা শালোম ইভানজেলিক্যাল হলিনেস চার্চে প্রার্থনার মধ্য দিয়ে দিবসের শুভ সূচনা করা হয়। এ সময় চার্চের ফাদার পিযুষ বাউল প্রার্থনা পরিচালনা করেন।
অন্যদিকে, উপজেলার সবচেয়ে বড় এবং নান্দনিক ক্যাথলিক গীর্জায় যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন উপলক্ষে ঈশ্বরের কাছে দেশ ও দেশের সকল জাতির শান্তি কামনায় প্রার্থনা করা হয়। এছাড়াও উপজেলার বিজয়পুর, ফারাংপাড়া, লক্ষীপুর বারোমারিসহ ছোট বড়, ব্যক্তিগত প্রায় ৬৪টি গির্জায় এ উৎসব পালিত হয়েছে।