Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

`যারা ইতিহাস সৃষ্টি করে তাদের নাম ইতিহাসে আসে না`


২৬ ডিসেম্বর ২০২০ ২১:১৮

ঢাকা: যারা ইতিহাস সৃষ্টি করে তাদের নাম ইতিহাসে আসে না বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রয়াত রাজনীতিবিদ হায়দার আনোয়ার খান জুনোর স্মরণসভায় তিনি এ কথা বলেন।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘যারা ইতিহাস সৃষ্টি করে তাদের নাম ইতিহাসে আসে না, এ কথা আমাকে বলেছিলেন তাজ উদ্দিন আহমেদ। তাদেরকে আমরা ভুলে যাই, সাধারণ মানুষ তাদেরকে স্মরণ করি না। আজকে যাদের অবদানে দেশ সৃষ্টি হয়েছে, তাদের স্মরণ করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করতে হবে। তাদেরকে যেন আমরা না ভুলি সে ব্যবস্থা করা। এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা ইতিহাসের জন্য জীবন দেন-দেশপ্রেমিক, আত্মত্যাগ করেন, মারা যান, তাদেরকে আমরা স্মরণ করি না; স্মরণ করি সেনাপতির নাম। মুক্তিযুদ্ধ করে যারা এই দেশ গড়েছেন, যে সাধারণ মানুষ; তাদের আমরা স্মরণ সভায় আনি না।’

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, `আজকে যদি বাংলাদেশকে ৬৫টি স্টেট বা প্রদেশে পরিণত করা হতো, তাহলে প্রতিটি প্রদেশে তাদের গৌরবজনক বিষয় নিয়ে বই লিখা হতো। একেকটা প্রদেশ তার গৌরবজনক সন্তানদেরকে নিয়ে বই লিখত। এ মাসের (ডিসেম্বর) শেষে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের পুষ্পস্তবক বিতরণ হলো না। যেখানে কয়েকজনের নাম চলে আসে। কিন্তু সেখানে হায়দার আনোয়ার খান জুনোর নাম আসে না।’

একজন সাবেক বিচারপতির বক্তব্য খণ্ডন করে নিজের রাজনৈতিক পরিচয় প্রসঙ্গে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমি কখনোই বিএনপি করি নাই। বিএনপি যদি আমার সব কথা শুনতো, তাহলে দেশেরও লাভ হতো। আমি কখনো বিএনপি করি নাই। তাদের দলের কোনো সদস্যও না। কিন্তু আমি সব রাজনৈতিক দলের। আমি গণতন্ত্র চাই। যারাই গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করে তাদের পক্ষেই আমি থাকবো।’

বিজ্ঞাপন

স্মরণসভায় ভার্চুয়ালি ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন প্রয়াত হায়দার আনোয়ার খান জুনোর ছাত্রজীবনে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘জুনু আমার ছোট ভাইয়ের সহপাঠী ছিল। তারা একসাথে বড় হয়েছে এবং একই বিষয়ে পড়ালেখা করেছে।’

হায়দার আলী আনোয়ার খানের বড় ভাই বিশিষ্ট বাম রাজনীতিক ও সিপিবির পলিটব্যুরোর সদস্য হায়দার আকবর খান রনো ভার্চুয়ালি ছোট ভাইয়ের দীর্ঘ কর্মময় জীবনের নানা ঘটনা স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, ‘হায়দার আনোয়ার খান জুনো দেশের ভেতরে মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়েছেন। তিনি অত্যন্ত মেধাবী একজন মানুষ ছিলেন। ছাত্র জীবনে তিনি প্রতিটা ক্ষেত্রে মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন, তিনি জীবনে কোনো ক্লাসেই দ্বিতীয় হননি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণ পেয়েছিলেন তিনি।’

সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদের সভাপতিত্বে এবং ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন প্রয়াত হায়দার আনোয়ার খান জুনোর মেয়ে অনন্যা লাবণী পুতুল।

স্বরণসভায় আরও বক্তব্য দেন সাবেক এমপি জহির উদ্দিন খান স্বপন, ঢাকা মহানগর ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি আবুল হোসাইন, কমিউনিস্ট পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল্লাহ কাফি রতন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।

হায়দার আনোয়ার খান জুনোর স্মরণসভায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন, বাংলাদেশের জাতীয় পার্টির সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার, সাহিত্যিক আলী ইমাম, কবি আমিনুর রহমান সুলতান ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি জসীমউদ্দীন প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন

প্রসঙ্গত বাম রাজনীতিবিদ হায়দার আনোয়ার খান জুনো গত ২৯ অক্টোবর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।

`যারা ইতিহাস সৃষ্টি করে ইতিহাসে আসে না` তাদের নাম