আমার বাড়ি, আমার খামার প্রকল্পে ‘লুটপাট’, ৪ কর্মকর্তা বরখাস্ত
২৭ ডিসেম্বর ২০২০ ০৮:৩৮
সাতক্ষীরা: জেলায় ‘আমার বাড়ি, আমার খামার’ প্রকল্পের টাকা নয়-ছয়ের অভিযোগ উঠেছে। এরইমধ্যে ১ কোটি ২৭ লাখ টাকা লুটপাটের অভিযোগে ৪ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলার ৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা প্রকল্পের সদস্যদের কাগজপত্র জালিয়াতি করে নিজেরাই ঋণের টাকা তুলে তা আত্মসাৎ করেছেন। গ্রাহকের কাছ থেকে সঞ্চয় ও ঋণের টাকা নিয়ে ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজেদের পকেটে রেখেছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের পাশাপাশি ফৌজদারি মামলা দায়েরের প্রস্তুতির কথাও জানিয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ২০১৪ সালে শুরু হয় ‘একটি বাড়ি, একটি খামার’ প্রকল্প। যার পরে নামকরণ করা হয় ‘আমার বাড়ি, আমার খামার’। সরকারিভাবে প্রচালিত জেলার বিভিন্ন উপজেলার গ্রামে গ্রামে গড়ে উঠেছে এই সমিতি। বর্তমানে সদর উপজেলায় এই প্রকল্পের আওতায় ১২ হাজার সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ১ হাজার সদস্যের টাকা আত্মসাৎ করেছেন প্রকল্পের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী। অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রকল্পের সদস্যের কাগজপত্র জালিয়াতি করে লক্ষ লক্ষ টাকা ঋণ তুলে নিজেদের পকেট ভরেছেন।
আবার অনেক সদস্যদের কাছ থেকে সঞ্চয় ও ঋণ পরিশোধের টাকা তুলে তা অফিসে জমাও দেননি। শুধু তাই নয় সদস্যদের সঞ্চয় ও ঋণ পরিশোধের বইও তাদের কাছে দেওয়া হয়নি। ঢাকা থেকে যাওয়া অডিট টিমের তদন্তে এসব তথ্য ধরা পড়ে বলে জানা গেছে। অডিট টিমের হিসাব অনুযায়ী ১ কোটি ২৭ লাখ টাকা ‘লুটপাট’ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯ লাখ টাকা উদ্ধার করেছেন চলতি দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা।
এসব ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শাখা ব্যবস্থাপক ও উপজেলা সমন্বয়কারী মেহেদী হাসান, জুনিয়র অফিসার আব্দুল মুকিব, সুপার ভাইজার রফিকুল ইসলাম ও শরিফুল ইসলামকে ইতিমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।
তবে অভিযুক্ত শাখা ব্যবস্থাপক ও উপজেলা সমন্বয়কারী মেহেদি হাসান, টাকা আত্মসাৎ করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘মনিটরিংয়ে কিছু দুর্বলতা থাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। তদন্তে পুরো বিষয়টিই পরিস্কার হওয়া যাবে।’
‘আমার বাড়ি, আমার খামার’ প্রকল্পের সাতক্ষীরা অঞ্চলের সিনিয়র অফিসার বিশ্বজিত সরদার বলেন, ‘সদর উপজেলার বৈকারি, কুশখালী, বাঁশদহা তিনটি ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি আর্থিক অনিয়ম হয়েছে। গরমিল পাওয়া ১ কোটি ২৭ লাখ টাকার মধ্যে ১৯ লাখ টাকা উদ্ধার হয়েছে। ইতিমধ্যে দায়িত্বে থাকা ৪ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিভাগীয় মামলা দিয়েছে প্রধান অফিস। তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার প্রস্তুতিও চলছে।’ এই টাকা উদ্ধার করার জন্য সব ধরনের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।