২০২৮ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রকে টপকে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশ হবে চীন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ (সিইবিআর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর বিবিসি।
শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) প্রকাশিত সিইবিআর’র বার্ষিক প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।
সেক্ষেত্রে, বৈশ্বিক অর্থনীতির নেতৃত্ব নিজেদের হাতে নিতে চীনকে অপেক্ষা করতে হবে আরও সাত বছর। বিবিসি জানিয়েছে, এই সময়কাল এর আগের ভবিষ্যৎ বাণীর চেয়ে পাঁচ বছর কম।
এর আগে, বিশ্বব্যাংক আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) দীর্ঘদিন ধরেই পূর্বাভাস দিয়ে আসছিল যে, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে টেক্কা দেবে চীন।
এদিকে সিইবিআর বলছে, ২০২৮ সালেই যুক্তরাষ্ট্রকে টপকে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশ হবে চীন। যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান হবে দ্বিতীয়, ভারত থাকবে তৃতীয় অবস্থানে।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশের করোনা মহামারিজনিত ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার সম্ভাব্য সময় বিবেচনায় নিয়ে গবেষণাটি সম্পন্ন হয়েছে।
প্রতিবেদনে আভাস দেওয়া হয়েছে, ২০২১-২৫ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৫.৭ শতাংশ। এরপর ২০২৬-৩০ সাল পর্যন্ত এ প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে বছরে ৪.৫ শতাংশে দাঁড়াবে।
অপরদিকে, ২০২১ সালে মহামারির ধকল সামলাতে যুক্তরাষ্ট্রকে হিমশিম খেতে হবে। ২০২২ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বছরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি হবে ১.৯ শতাংশ। এর পরবর্তী বছরগুলোতে প্রবৃদ্ধির হার হবে ১.৬ শতাংশ।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারি ও এ সংক্রান্ত অর্থনৈতিক বিপর্যয় নিশ্চিতভাবেই চীনের পক্ষে কাজ করবে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ওই প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে জানায়, বৈশ্বিক অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের অর্থনৈতিক শক্তির লড়াই।
সিইবিআর বলছে, মহামারিতে চীনের দক্ষ ব্যবস্থাপনা, কঠোর লকডাউন, পশ্চিমা দেশে দীর্ঘমেয়াদী প্রবৃদ্ধিতে আঘাত দেশটির অর্থনীতিতে উন্নয়ন ঘটিয়েছে।
সিইবিআর আরও বলছে, ২০৩০ সালের শুরুর দিক পর্যন্ত অর্থনৈতিক সূচকে জাপান বিশ্বের তৃতীয় দেশ হবে। তবে, ভারত অর্থনীতিতে জাপানকে টপকে যেতে পারে। তেমনটা হলে জার্মানি হবে চতুর্থ বা পঞ্চম দেশ।
অন্যদিকে, সিইবিআরের সূচকে অর্থনৈতিক সামর্থ্য অনুযায়ী যুক্তরাজ্য পঞ্চম বৃহত্তম দেশ। ২০২৪ সালে দেশটি ষষ্ঠ স্থানে চলে যেতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় ২০২১ সালে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে। তারপরও ২০৩৫ সাল পর্যন্ত ডলারে যুক্তরাজ্যের জিডিপি ফ্রান্সের চেয়ে ২৩ শতাংশ বেশি থাকবে।
সিইবিআর বলছে, ২০২০ সালে শীর্ষ ১০ বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ইউরোপের ১৯ শতাংশ অবদান ছিল। ইইউ এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বের কারণে ২০৩৫ সালে এটি ১২ শতাংশে নেমে যেতে পারে। বিশ্ব অর্থনীতিতে মহামারির প্রভাবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি হবে। তবে, প্রবৃদ্ধি ধীর গতির হবে না।
পাশাপাশি, কোভিড-১৯ মহামারির ধকল সামলাতে তহবিলের জন্য যেসব দেশ বেশি ঋণ নিয়েছে, তারা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলেও জানিয়েছে সিইবিআর।