‘ভ্যাকসিন বিতরণের বিষয়ে সঠিক তথ্য না জেনেই সমালোচনা করা হচ্ছে’
২৭ ডিসেম্বর ২০২০ ২০:২০
ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘জানুয়ারি শেষে অথবা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই দেশে ভ্যাকসিন চলে আসবে। এই ভ্যাকসিন মানুষের কাছে সুষ্ঠুভাবে বিতরণের জন্য সরকারের যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়া রয়েছে। দেশে ভ্যাকসিন দেওয়া কিভাবে হবে তার জন্য একটি গাইডলাইন প্রস্তুত করা হয়েছে। যারা ভ্যাকসিন প্রদানে সরকারের সমালোচনা করছে তারা সঠিক তথ্য না জেনেই কথা বলছে।’
রোববার (২৭ ডিসেম্বর) মহাখালীর ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরে ওষুধ এবং টিকার জন্য স্থাপিত ল্যাবরেটরি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড মোকাবিলায় বাংলাদেশ যে সফল হয়েছে সেকথা এখন কেবল আমরা নই, খোদ আমেরিকার গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এক নম্বর দেশ হিসেবে কৃতিত্ব দিয়েছে।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য আমাদের প্রশিক্ষিত জনবল রয়েছে, ভ্যাকসিন রাখার স্টোর প্রস্তুত করা হয়েছে, নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখতে কোল্ডবক্স ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করা হয়েছে। কিভাবে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে তার জন্য একটি গাইডলাইনও প্রস্তুত করা হয়েছে। যারা ভ্যাকসিন প্রদানে সরকারের সমালোচনা করছে তারা সঠিক তথ্য না জেনেই কথা বলছে।’
তিনি বলেন, ‘কোভিড মোকাবিলায় বাংলাদেশ যে সফল হয়েছে সেকথা এখন কেবল আমরা নই, খোদ আমেরিকার সংবাদ মাধ্যম ব্লুমবার্গ গত ৪-৫ মাসের বিশ্বব্যাপী করা জরিপ শেষে বাংলাদেশকে কোভিড মোকাবিলায় ২০তম হিসেবে ও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এক নম্বর দেশ হিসেবে কৃতিত্ব দিয়েছে। এটি আমাদের জন্য বিরাট স্বীকৃতি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্লুমবার্গের জরিপে খোদ আমেরিকাই রয়েছে ৪০তম অবস্থানে, ইউকে রয়েছে ৩৯তম অবস্থানে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারত, পাকিস্তান, ভুটান, শ্রীলংকা, মায়ানমার এই দেশগুলিরও উপরে রয়েছে বাংলাদেশ। এই কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার, এই কৃতিত্ব দেশের চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের, এই কৃতিত্ব মিডিয়াসহ সকল করোনা যোদ্ধাদের।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেব। প্রথম ধাপে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার ৩ কোটি ভ্যাকসিন ধাপে ধাপে দিতে ছয় মাস সময় লাগবে। পরে আমরা কোভ্যাক্সের ভ্যাকসিন পাবো। সেটাও একবারে দেবে না। ধাপে ধাপে আসবে। মোট সাড়ে ৫ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে এক বছরের বেশি সময় লাগবে।‘
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে বর্তমানে ৩০ লাখের মতো মহিলা গর্ভবর্তী অবস্থায় আছে ও ১৮ বছরের নিচে রয়েছে প্রায় ৩৭ ভাগ মানুষ। এক কোটি লোক দেশের বাইরে থাকে। তাতে আমাদের হিসাবে আছে, প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষের এই মুহূর্তে ভ্যাকসিনের প্রয়োজন হবে না। যে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে সেটাও প্রায় সাড়ে ৫ কোটি। কাজেই গ্যাপ (জনসংখ্যা বাকি) বেশি থাকছে না, যেটুকু থাকছে সেটুকুও আমরা পর্যায়ক্রমে পূরণ করে ফেলব।’
তবে, এসব কিছুর পরও মানুষকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করা অব্যাহত রাখতে হবে বলেও উল্লেখ করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমানসহ অন্যান্যরা।