Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রামে রোহিঙ্গাদের দ্বিতীয় দল, কাল যাবেন ভাসানচরে


২৮ ডিসেম্বর ২০২০ ২০:১৬

চট্টগ্রাম ব্যুরো: নোয়াখালীর ভাসানচরে যাবার উদ্দেশে কক্সবাজারের আশ্রয়কেন্দ্র থেকে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত ১ হাজার ৭৭২ জন রোহিঙ্গা চট্টগ্রামে পৌঁছেছে। নগরীর পতেঙ্গায় বিএফ শাহীন কলেজের মাঠে তাদের রাতযাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ৮টায় ৩০টি বাসে করে ভাসানচরগামী রোহিঙ্গাদের দ্বিতীয় দল চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায় এসে পৌঁছায়। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় তাদের নৌপথে নোয়াখালীর ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (বন্দর) অলক বিশ্বাস।

বিজ্ঞাপন

এর আগে প্রথম দফায় গত ৪ ডিসেম্বর কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ১ হাজার ৬৪২ রোহিঙ্গাকে ভাসানচর দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় দফায় একই আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ৪২৭টি পরিবারকে ভাসানচরে নেওয়া হচ্ছে। ভাসানচরগামী এক হাজার ৭৭২ জন রোহিঙ্গার মধ্যে ১৩০ জন প্রথম দলে যাওয়া রোহিঙ্গাদের আত্মীয়স্বজন।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (বন্দর) অলক বিশ্বাস সারাবাংলাকে বলেন, ‘কক্সবাজার থেকে ৩০টি বাস এসে পৌঁছেছে। বিএফ শাহীন কলেজের মাঠে রোহিঙ্গাদের রাতে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাল (মঙ্গলবার) সকাল ৯টায় পতেঙ্গা বোট ক্লাব থেকে তাদের নিয়ে জাহাজ ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দেবে।’

এর আগে সোমবার দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠ থেকে প্রথম পর্যায়ে রোহিঙ্গাদের বহনকারী ১৩টি এবং দ্বিতীয় ধাপে আরও ১৭টি বাস চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রা করে। বাসগুলোর সামনে ও পেছনে র‌্যাব, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া পাহারা দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের দ্বিতীয় দলের নিরাপত্তায় ভাসানচরে তিন শতাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা আজ (সোমবার) থেকেই সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন। পর্যাপ্ত সংখ্যক নারী পুলিশও রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় দল আসার পর ভাসানচরে ৩ হাজারের মতো রোহিঙ্গা বসবাস করবেন। ৩ হাজার মানুষের জন্য যতটুকু নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা দরকার হবে, আমরা ততটুকু করেছি।’

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ ও বান্দরবানের তমব্রু সীমান্ত দিয়ে মায়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা প্রবেশ শুরু করেন। সেসময় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার শিকার হয়ে ৭ লাখ ৪০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসে। নতুন-পুরনো মিলিয়ে বাংলাদেশে বর্তমানে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার বসবাস।

রোহিঙ্গাদের নিয়ে ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে পাঁচদফা প্রস্তাব উত্থাপন করেন। ২৯ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা পরিষদে প্রথমবারের মতো আলোচনা হয়। ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে প্রত্যাবাসন চুক্তি সই হয়।

২০১৮ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ৮ হাজার ৩৭৪ জনকে ফেরত নিতে রাজি হয় মিয়ানমার। ২ জুলাই জাতিসংঘের মহাসচিব ও বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন। ২৭ আগস্ট জাতিসংঘের প্রতিবেদনে নৃশংস গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ১৫ নভেম্বর প্রত্যাবাসনের প্রথম তারিখে পাঠানো যায়নি একজনকেও। ২০১৯ সালের ২২ আগস্ট চীনের মধ্যস্থতায় দ্বিতীয় তারিখ নির্ধারণের পরও পাঠানো যায়নি একজনকেও।

এ অবস্থায় নোয়াখালীর সাগরদ্বীপ ভাসানচরে সরকারি ব্যবস্থাপনায় অবকাঠামো নির্মাণ করে রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে সেখানে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

ছবি: শ্যামল নন্দী

ভাসন চর রোহিঙ্গা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর