৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ‘ডার্টি ওয়ার’: রিজভী
২৯ ডিসেম্বর ২০২০ ১৬:১৩
ঢাকা: ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ‘ডার্টি ওয়ার’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, “আগামীকাল ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কিত অধ্যায়। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের রাতে, অর্থাৎ ২৯ ডিসেম্বর ‘ভোট ডাকাতি’ হয়েছে। তাই ৩০ ডিসেম্বর দিনটিকে দেশবাসী ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে।”
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে অভাবনীয় রেকর্ড সৃষ্টিকারী র্যাব-পুলিশের সহায়তায় রাতে ব্যালট বাক্স পূর্ণ করে ক্ষমতা দখলের দুই বছর পূর্ণ হবে মঙ্গলবার রাতে। তাই ওই রাতটি দেশবাসীর কাছে ভোটাধিকার হরণের কালো রাত হিসেবে কলঙ্কিত হয়ে থাকবে।’
তিনি বলেন, “২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরে কালো রাতে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেয় আওয়ামী লীগ। সেদিন তারা গণতন্ত্রের গলায় ফাঁসির দড়ি ঝুলিয়েছিল। তাই ৩০ ডিসেম্বর কোনো ভোট হয়নি, যা হয়েছে তা হলো নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সম্মিলিত উদ্যোগে ভোট ডাকাতি। বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ভোট ডাকাতির নির্বাচনের খবর ফলাও করে প্রচার হয়েছে। আসলে ৩০ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেররা যা করেছেন তা গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিরুদ্ধে ‘ডার্টি ওয়ার’।”
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই দেশে স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে দেয়নি। প্রাণবন্ত গণতন্ত্রের জন্য যে দলীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং উদার সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রবণতা অপরিহার্য, তা আওয়ামী লীগ কখনোই রপ্ত করেনি। বাংলাদেশের নিজস্ব ভূমিতে যেন গণতন্ত্রের শেকড় গজাতে না পারে, সেজন্য তারা সবসময় সর্বশক্তি নিয়োগ করে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো কন্ঠরুদ্ধ করার নানা কালাকানুন, গুম, অপহরণ, বিচার বহির্ভূত হত্যার অমানবিক নিষ্ঠুরতার সীমাহীন আবর্তের মধ্যে দেশকে ঠেলে দিয়েছে তারা। স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দী পরও গেলো না আঁধার।’
তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। অথচ সিইসি নুরুল হুদার নেতৃত্বে যে কমিশন, সেই কমিশনের অধীনে আজ পর্যন্ত একটি নির্বাচনও সুষ্ঠু হয়নি। মানুষের ভোটের অধিকারকে এই কমিশন শুধু হরণই করেনি বরং মহান স্বাধীনতার মূল চেতনা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে তারা গুরুতর অসদাচরণ করেছেন। নির্বাচন কমিশনের এই ভূমিকা জনগণের বিরুদ্ধে সরকারের নির্দয় মনোবৃত্তির সারাংশ মাত্র। দেশের ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল’ গঠন করে ইসির ভোট ডাকাতি, অনিয়ম ও দূর্নীতির যে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন এবং তাদের বিচার দাবি করেছেন— এ দাবি দেশের ১৬ কোটি মানুষের দাবি।“
“সুতরাং ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল’ গঠন করে ইসির ভোট ডাকাতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিচার করার জন্য দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা যে দাবি জানিয়েছেন, সে দাবির পাশাপাশি ভোট ডাকাতির নির্বাচনে যে সরকার গঠিত হয়েছে সেই আওয়ামী সরকারের এই মুহূর্তে পদত্যাগ দাবি করছি,”— বলেন রুহুল কবির রিজভী।
ফাইল ছবি
৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কালো রাত্রি ডার্টি ওয়্যার ভোট ডাকাতি রুহুল কবির রিজভী