Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এনইসি বৈঠকে ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুমোদন


২৯ ডিসেম্বর ২০২০ ১৬:২৯

ঢাকা: অনুমোদন পেল অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৬৪ লাখ ৯৫ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ (দেশীয়) উৎস থেকে খরচরে লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৫৭ লাখ ৪৮ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা। আর বৈদেশিক উৎস থেকে আসবে সাত লাখ ৪৭ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা। এছাড়া মোট খরচের মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১২ লাখ ৩০ হাজার ১২০ কোটি টাকা এবং ব্যক্তি খাত থেকে ৫২ লাখ ৬৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা খরচের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। এছাড়া পরিকল্পনা মেয়াদে ১ কোটি ১৩ লাখ ৩০ হাজার নতুন কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিদেশে কর্মসংস্থান ৩২ লাখ ৫০ হাজার এবং দেশে ৮০ লাখ ৫০ হাজার কর্মসংস্থান হবে।

মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গণভবন থেকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও এনইসি চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড.শামসুল আলম পরিকল্পনার সার-সংক্ষেপ উপস্থাপন করেন।

বৈঠক শেষে এনইসি সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এ সময় বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন জিইডির সদস্য ড. শামসুল আলম। উপস্থিত ছিলেন, আইএমইডি সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য জাকির হোসেন আকন্দ, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, সরকারের উন্নয়ন রূপকল্প ও নির্বাচনি ইশতেহারের আলোকে পরিকল্পনা নীতির ধারাবাহিকতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায়। এছাড়া টেকসই উন্নয়ন অভিষ্টর (এসডিজি) লক্ষ্যগুলো এতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এসব লক্ষ্য অর্জনের প্রচেষ্টাকে অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তা গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় রাখা হয়েছে। গত জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছর পর্যন্ত এটি বাস্তবায়ন করবে সরকার।

ড. শামসুল আলম জানান, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নকালে বার্ষিক গড় জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) অর্জন হবে ৮ শতাংশ হারে। এবং পরিকল্পনার শেষ অর্থবছরে ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ। এতে দেশের মূল্যস্ফীতির লাগাম টানার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে চলতি অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ, ৫ দশমিক ৩ শতাংশ, ৫ দশমিক ২ শতাংশ, ৪ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ৪ দশমিক ৮ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হবে। পরিকল্পনায় বিনিয়োগের লক্ষ্য ধরা হচ্ছে মোট জিডিপির ৩৭ দশমিক চার শতাংশ। অর্থবছর ভিত্তিক লক্ষ্য হচ্ছে, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে জিডিপির ২০ দশমিক ৮ শতাংশ, ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশ, ৩৪ দশমিক ৫ শতাংশ, ৩৫ দশমিক ৬ শতাংশ, ৩৬ দশমিক ২ শতাংশ এবং ৩৭ দশমিক ৪ শতাংশ বিনিয়োগ।

ড. আলম আরও জানান, ২০২৫ সাল নাগাদ কর জিডিপির অনুপাত বর্তমানের ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ করা হবে। রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য শুল্কের ওপর নির্ভরতা কমাতে এই দুই লক্ষ্য অর্জনের জন্য রাজস্ব আইন অধিকতর সংস্কার এবং কর প্রশাসনে আধুনিকায়ন ও শক্তিশালীকরণে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের উপর জোড় দেওয়া হয়েছে।

আসছে ২৪৪ উন্নয়ন কৌশল

কোভিড-১৯ মোকাবিলাসহ অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ২৪৪টি উন্নয়ন কৌশল নেওয়া হয়েছে পরিকল্পনায়। শুধু করোনা মোকাবিলায় আসছে পাঁচটি কৌশল। এছাড়া আন্তঃসম্পর্কিত উন্নয়ন কৌশল রয়েছে ছয়টি। এর বাইরে পশ্চাৎপদ অঞ্চলের দারিদ্র্য সমস্যা মোকাবিলেয় ছয়টি কৌশল, খাতভিত্তিক উন্নয়ন কৌশল রয়েছে ২২৭টি। ১৪টি অধ্যায়ে এসব কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় কোভিড-১৯ এর প্রভাব মোকাবিলায় কৌশলগুলো হচ্ছে।

সরকারের উন্নয়ন রূপকল্প ও নির্বাচনি ইশতেহারের আলোকে পরিকল্পনায় ধারাবাহিকতার দিকটিতে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হবে। এক্ষেত্রে যেসব কার্যসম্পাদক সূচকে বাংলাদেশ এখনও পিছিয়ে আছে সেসব ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অর্থনীতিতে পিছিয়ে পড়া খাতগুলো সংস্কারের গতি বাড়ানোর বিষয়টি কোভিডের কারণে আরও বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। কোভিড-১৯ এর কারণে সৃষ্ট সাময়িক বেকারত্বসহ বিদেশ ফেরত কর্মীদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে কোভিড-১৯ মহামারিসহ ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে ক্রমান্বয়ে একটি সার্বজনীনন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা বা ইউনিভার্সেল হেলথ সিস্টেম প্রবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

কোভিড-১৯-এর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা এবং প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের হার বাড়াতে জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা হবে। এক্ষেত্রে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা ও উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুমোদন এনইসি টপ নিউজ বৈঠক


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর