উন্নয়নের বড় চ্যালঞ্জ দুর্নীতি— আলোচনা সভায় বক্তারা
২৯ ডিসেম্বর ২০২০ ১০:২৮
ঢাকা: বাংলাদেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে দুর্নীতি বড় একটি চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ওপর থেকে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। তাহলে নিচের দিকে এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে। অর্থাৎ বড় দুর্নীতি আগে রোধ করতে হবে। তাহলেই ছোট ছোট দুর্নীতি বন্ধ করা সহজ হবে।
শুদ্ধাচার ও দুর্নীতি প্রতিরোধ বিষয়ক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের আয়োজনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বক্তারা আরও বলেন, সরকারি কর্মকর্তারা জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে বয়স দুই-তিন বছর কমিয়ে থাকেন। জন্ম তারিখের মিথ্যা দিয়ে শুরু হয় জীবনের প্রথম দুর্নীতি। এসব বন্ধ করতে হবে। আগামী প্রজন্মের দায়িত্ব হচ্ছে নিজেরা দুর্নীতিমুক্ত থাকা এবং দুর্নীতির বিরোদ্ধে প্রতিবাদ করা।
জাদুঘরের গাঙচিল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের মহাপরিচালক মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মনিমুল হক। অতিথি ছিলেন বিজ্ঞান জাদুঘরের পরিচালক ইমতিয়াজ হোসেন। আলোচনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, চিকিৎসক,সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্তীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।
মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী বলেন, সরকারি কর্মকর্তারা জন্ম তারিখ নিয়েই দুর্নীতি করে থাকেন। আমার সিনিয়র জন্ম নিয়েছেন আমার পাঁচ বছর আগে। অথচ আমি যখন অবসরে যাব, এর পাঁচ বছর পরে আমার সিনিয়র অবসরে যাবেন। এটা কি সামঞ্জস্যপূর্ণ?
তিনি আরও বলেন, এখনকার বিয়ের অনুষ্ঠানে ৬০ লাখ টাকা খরচ করা হয়। প্রত্যেক অতিথির জন্য ৬০০-৭০০ টাকার খাবারের ব্যবস্থা থাকে। অথচ গরিবদের জন্য কোনো খাবার ব্যবস্থা রাখা হয় না। এসব বিয়েতে দাওয়াতে আসা অতিথিদের গাড়িচালকদের জন্য ২০০-৩০০ টাকার খবরের ব্যবস্থা রাখা হয়। আপনারা যে সরিষার তেল খান, তা মেশিনের তৈরি। এতে ইউরিক এসিডের পরিমাণ ঘানির তৈরি তেলের তুলনায় ৫ শতাংশ বেশি থাকে। ঘানিতে ভাঙানো তেলে ইউরিক এসিড কম থাকে। বাণিজ্যিকীকরণ ও অর্থনীতির স্রোতে দুর্নীতি অনেক বেড়ে যাচ্ছে। দুর্নীতি রোধ করতে হবে। আমরা যারা আছি আর নতুন প্রজন্মের যারা, সবাই মিলে দুর্নীতিকে একসঙ্গে রোধ করতে হবে।
মূল প্রবন্ধে মনিমুল হক বলেন, উন্নয়নশীল দেশে দুর্নীতি থাকলে উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। উন্নয়নের পরিমাণ কমে যায়। সমাজকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে আমাদের নৈতিক শুদ্ধাচার করতে হবে। অনেকের কোনো অভাব নেই, তবুও তারা দুর্নীতি করছেন। শুধু শিষ্টাচার আর নৈতিকতার অভাবেই দুর্নীতি করছেন।
নৈতিক শুদ্ধাচারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি গাছ থেকে ভালো ফল পেতে হলে দু’টি জিনিসে নজর দিতে হবে। বীজ ও জমি ভালো হতে হবে। উর্বর জমিতে গাছ লাগাতে হবে। আর যে গাছ লাগানো হবে, সেই গাছের বীজ যেন ভালো হয়। তাহলে সেখান থেকে ভালো ফল পাওয়া যাবে। একটি ভালো থাকলে হবে না, দু’টোই ভালো থাকতে হবে। তখনই ভালো ফল পাওয়া যাবে। একইভাবে পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের নৈতিক শুদ্ধাচারের চর্চা করতে হবে। এরই মধ্যে দিয়ে সমাজে দুর্নীতি কমে আসতে পারে।
আলোচনা সভা জাদুঘরের জিডি মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শুদ্ধাচার ও দুর্নীতি প্রতিরোধ সাবেক উপাচার্য মনিমুল হক