Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

টকশো দেখলে মনে হবে দেশে কিছুই হচ্ছে না: তথ্যমন্ত্রী


২৯ ডিসেম্বর ২০২০ ১৯:৪৭

চট্টগ্রাম ব্যুরো: তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘টেলিভিশনের টকশো দেখলে বোঝা যাবে সেখানে সরকারকে কী ভাষায় সমালোচনা করা হয়। অনেক সমালোচনা হচ্ছে। রাত ১২টার পর টকশোগুলো দেখলে মনে হবে দেশে কোনো কিছুই হচ্ছে না। তবে আমরা মনে করি এই সমালোচনা থাকতে হবে। সমালোচনা না থাকলে গণতন্ত্র নষ্ট হয়, গণতন্ত্রের সৌন্দর্য নষ্ট হয়।’

মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং রহুল কবির রিজভী আহমেদ প্রতিযোগিতা করে সরকারের সমালোচনা করেন। সকালে ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলন করে কড়া ভাষায় সরকারের সমালোচনা করেন, আর দুপুরে রিজভী আহমেদ সংবাদ সম্মেলন করে আরও কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন। এরপর প্রেস ক্লাবে গিয়ে গয়েশ্বর রায় বলেন— আমাদের কথা বলার কোনো অধিকার নেই। বিএনপি নেতারা সারাদিন সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন, আর সন্ধ্যায় বলেন তাদের কথা বলার অধিকার নেই।’

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমালোচনাকে সমাদৃত করার সংস্কৃতি লালন করেন। আমি যখন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলাম, তখন যেই পত্রিকা ব্যঙ্গ করে আমার কার্টুন ছাপিয়েছিল প্রথম পাতায়, সেই পত্রিকাকে জাতীয় পরিবেশ পদক দেওয়ার জন্য আমি নিজেই নাম প্রস্তাব করেছিলাম এবং তারা পেয়েছিল। কারণ আমরা মনে করি, দায়িত্বে থাকলে সমালোচনা হবে এবং সেই সমালোচনা সহ্য করার মানসিকতা দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীদের থাকতে হয়। না হলে বহুমাত্রিক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে না,’— বলেন তথ্যমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘যখন ভালো কাজের প্রশংসা হয় না, অহেতুক সমালোচনা হয়, তখন কিন্তু যারা ভালো কাজ করেন তারা হতাশ হন। তখন মানুষ ভালো কাজ করার জন্য উৎসাহিত হন না। অবশ্যই সমালোচনা হবে, সমালোচনা থাকবে, এটির পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসাও দরকার। না হয় রাষ্ট্র-সমাজ এগুবে না।’

গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রকে সঠিকভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে গণমাধ্যম। এটি রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। রাষ্ট্রের কোনো একটা স্তম্ভ ঠিকমতো কাজ না করলে এর ভিত নষ্ট হয়ে যায়। সেটি মাথায় রেখেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের সঙ্গে যারা যুক্ত আছেন, তারা যেন স্বাধীনভাবে ও স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারেন, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করছেন।’

‘করোনাকালে সবকিছু বন্ধ হয়ে গেলেও সাংবাদিকরা কাজ করে গেছেন। পৃথিবীতে সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি হলে একটি মহল ওঁৎ পেতে থাকে সমাজে অস্থিরতা তৈরির জন্য। করোনাকালে বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এর বিপরীতে দেশের মূলধারার গণমাধ্যম বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার কারণে এসব সুবিধাবাদীরা তেমন সুবিধা করতে পারেনি,’— বলেন তিনি।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের প্রশংসা করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই প্রেস ক্লাবে সব দলমতের মানুষ আছেন। চট্টগ্রামের সব মানুষের কল্যাণে এ প্রেস ক্লাব কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা প্রেস ক্লাবেও দলাদলি ছিল, এখন যে একদম নেই তা নয়। কিন্তু চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে তা নেই। এজন্য ক্লাবের নেতাদের ধন্যবাদ জানাই। সব জায়গায় রাজনীতিকে এনে সেখানে নিজেদের মধ্যে প্রকট বিভাজন  তৈরী করা সমীচীন নয়।’

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাসের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান ও কলিম সরওয়ার, বিএফইউজের সহসভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, ক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি সালাহউদ্দিন মো. রেজা বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব থেকে ‘মুজিব জন্মশতবর্ষ’ উপলক্ষে  প্রকাশিত বার্ষিকীর বিশেষ সংখ্যা ‘তথ্য সত্য-ভাষ্য’র মোড়ক উন্মোচন করেন তথ্যমন্ত্রী।

বিকেলে বঙ্গবন্ধু হলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

টক শো বিএনপি সমালোচনা সরকারের সমালোচনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর