Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রশাসন কর্মকর্তাদের নামে বিভাগীয় মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ


৩১ ডিসেম্বর ২০২০ ১০:১৪

ঢাকা: প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, নারীর প্রতি অসদাচরণসহ নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ সব অভিযোগ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে জমা হয়। গত কয়েক বছরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা বিভাগে এমন অভিযোগের পাহাড় জমেছে। এসব অভিযোগে দোষ প্রমাণিত হওয়ায় কিছু কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার নজিরও দেখা গেছে। আবার অনেককে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে, অনেককে অভিযোগ থেকে অব্যাহতিও দেওয়া হয়েছে। তদন্তাধীন অবস্থায়ও রয়েছে অনেক অভিযোগ। এবার সে সব দ্রুত শেষ করতে চায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। বিশেষ করে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ দ্রুত নিষ্পত্তি করতে চায় সরকার।

বিজ্ঞাপন

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ সব তথ্য জানা গেছে।

সূত্রে জানা যায়, গত দশ বছরে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের সংখ্যা তিন হাজারের ওপরে। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে কিছু আবার অনিষ্পত্তি রয়েছে। গুরুত্বর অভিযোগে বিভাগীয় মামলা দায়ের হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের হাতে বিভিন্ন ধরনের অর্ধশতাধিক মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত পর্যালোচনা সভায় তদন্তাধীন থাকা মামলাগুলো দ্রুত শেষ করার তাগিদ দেওয়া হয়। বিশেষ করে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যতগুলো মামলা পেন্ডিং রয়েছে তা দ্রুত নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ ইউসুফ হারুনের নির্দেশে তদন্তাধীন মামলা নিস্পত্তিতে কাজ করছেন কর্মকর্তারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, একেকটা মামলার সঙ্গে অনেককিছু জড়িত থাকে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তাকে যেমন অপেক্ষায় থাকতে হয় তেমনি যাদের হাতে মামলা থাকে তাদের কাজর্কম ব্যাহত হয়। প্রমোশন ব্যাহত হয়। এ সব কারণেই মামলার জট কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, বিভাগীয় মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে একটি গাইডলাইন তৈরি করা হচ্ছে। যা আগামী জানুয়ারির মধ্যেই শেষ করার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এই গাইডলাইন অনুযায়ী তদন্তাধীন মামলাগুলো নিষ্পত্তি করা হবে।

সূত্র মতে, প্রশাসন ক্যাডারের তদন্তাধীন মামলাগুলোর মধ্যে সাবেক সহকারী কমিশনার (কুড়িগ্রাম) রিন্টু বিকাশ চাকমা, সাবেক সহকারী কমিশনার এস এম রাহাতুল ইসলাম, সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সিনিয়র সহকারী কমিশনার নাজিম উদ্দীন, ওএসডি সিনিয়র সহকারী সচিব এ কে এম ইহসানুল হক, নওগাঁর সাবেক সহকারী কমিশনার বি এম তারিক উজ জামান, ওএসডি সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ ফারুক আহম্মেদ। সাবেক এডিসি (পিরোজপুর) বেগম ঝুমুর বালা, মেহেন্দিগঞ্জের সাবেক ইউএনও কাজী মো. আলিমউল্লাহসহ এমন দুই ডজন কর্মকর্তাদের তদন্তাধীন মামলা নিয়ে বসছেন জনপ্রশাসনের কর্মকর্তারা। এসব মামলার কোনোটির তিনমাস, ছয়মাস কোনোটি বছর ধরে ঝুলে আছে নিষ্পত্তির আশায়।

বিজ্ঞাপন

আইন অনুযায়ী, অভিযোগ দায়েরের পর প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে অভিযোগ গঠনের আগে জনপ্রশাসন সচিব কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করবেন। কিংবা ব্যক্তিগত শুনানি গ্রহণ করবেন। এই পর্যায়েই দোষীকে শাস্তি বা অব্যাহতিও দেওয়া যায়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দোষী ব্যক্তি দলীয় মাধ্যম ব্যবহার করে, আরও ওপর থেকে তদবির করে থাকে ফলে দোষীকে ন্যায্য শাস্তি দেওয়া যায় না। আবার একই কারণে তদন্ত ঝুলে যায়।

এ প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন বলেছেন, ‘জনগণের সেবার মান ও সুশাসন নিশ্চিত করতে সরকার জিরো টলারেন্স নীতিতে এগোচ্ছে। সে নীতি মাথায় রেখে বিধি মেনে প্রশাসনের কর্মকর্তারা কাজ করছেন। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে তা দ্রুত শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

জানা গেছে, বিভাগীয় মামলা নিষ্পত্তি করতে শৃঙ্খলা ও তদন্ত অনুবিভাগ মিলে টিম গঠন করে কাজ করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের ই-ফাইলিং কার্যক্রমে যাবতীয় তথ্য উপাত্ত যুক্ত করা হচ্ছে। অনলাইনে এসব যুক্ত হলে এক রুম থেকে অন্য রুমে ফাইল টানাটানির ঝামেলা কমবে। মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা।

ক্ষমতার অব্যবহার প্রশাসন কর্মকর্তা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর