Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অমর্ত্য সেনের বাড়ি নিয়ে মুখোমুখি কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার


৩১ ডিসেম্বর ২০২০ ১৯:৪১

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বোলপুরের বাড়ি নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল এবং কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। খবর ডয়চে ভেলে।

এদিকে, বাড়ি বিতর্কে অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল সরকার। এ নিয়ে ঝামেলা তৈরির দায় তারা চাপিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ওপর। কিন্তু বিজেপি সরকার দাবি করেছে, বাড়ির বিষয়টি সম্পূর্ণই বিশ্বভারতীর এখতিয়ারে, এ ব্যাপারে তাদের কিছু করণীয় নেই।

বিজ্ঞাপন

ওদিকে, বিশ্বভারতী’র সীমানা লাগোয়া বাড়ি প্রতীচী। হঠাৎই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, ওই বাড়ির কিছু অংশ সেন পরিবারের এখতিয়ারভুক্ত নয়।

এ ব্যাপারে ক্ষোভ জানিয়েছেন ৮৭ বছর বয়সী কৃতী বাঙালী অমর্ত্য সেন। তিনি জানান, প্রায় ৮০ বছর আগে বাড়ি তৈরি করা হলেও এতদিন কোনো অভিযোগ করা হয়নি। এখন আচমকা বাড়ির বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।

অন্যদিকে, কেন্দ্র সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা বিশ্বভারতী’র এই বিতর্কে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি কেন্দ্রের শাসক দলের ষড়যন্ত্র দেখছে। অমর্ত্য সেনকে ‘দাদা’ সম্বোধন করে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রীর এই আহ্বানকে ধন্যবাদের সঙ্গে গ্রহণ করেছেন অমর্ত্য সেন। তিনি বলেছেন, চিন্তাভাবনার মধ্যে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল এসে পড়েন।তাদেরকে বাদ দিয়ে শুধু একদিকে সাম্প্রদায়িকতা করাটা তার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু, বাড়ি নিয়ে বিতর্কের সঙ্গে যে তার যোগ থাকতে পারে, তা আগে ভাবেননি তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি পেয়ে তার মনে হয়েছে, নিশ্চিত যোগ আছে।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, শান্তিনিকেতনের ‘প্রতীচী’র মধ্যে বিশ্বভারতীর নিজস্ব জমি ঢুকে গেছে। রজতকান্ত রায় উপাচার্য থাকাকালীন মৌখিকভাবে বিষয়টি অমর্ত্য সেনকে একাধিকবার জানিয়েছিলেন। কিন্তু অধ্যাপক সেন তা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

বিজ্ঞাপন

অপরদিকে, বিশ্বভারতীর পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ বাংলার বুদ্ধিজীবীরা রাস্তায় নেমেছেন। বিক্ষোভে সামিল কবি সুবোধ সরকার ডয়চে ভেলেকে বলেন, অমর্ত্য সেনের ওপর যে ধরনের অন্যায় করা হচ্ছে, সেটা সারা ভারতজুড়েই চলছে। লেখক, সাংবাদিক সবার ওপরই যে অত্যাচার চলছে, তার নবতম সংযোজন অমর্ত্য সেন।

তিনি বলেন, নোবেলজয়ী অমর্ত্য যদি বিশ্বভারতীর জমি যদি কব্জা করেই থাকেন, তাহলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। যেহেতু, তিনি তাদের সুরে সুর মেলাচ্ছেন না, তাই তাকে টেনে নামানোর চেষ্টা চলছে।

এ পরিস্থিতিতে বিজেপি কিছুটা চাপে রয়েছে বলে জানিয়েছে ডয়চে ভেলে। তারা এই বিতর্ক থেকে নিজেদের দূরে রাখতে চাইছে। কৌশলে বলছে এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপার।

এ ব্যাপারে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলেকে বলেন, বিষয়টি একেবারেই বিশ্বভারতী’র অভ্যন্তরীণ। বাকিটা সে পরিবারের ভাই-বোনদের বিষয়। এই বিতর্ক নাগরিক সমাজ প্রত্যাশা করে না। এতে সরকারি বুদ্ধিজীবিরা প্রতিবাদ জানাতেই পারেন। পুরোটাই পরিকল্পিত প্রতিবাদ, সেখানে তারা যা বলছেন তাও শিখিয়ে দেওয়া।

বিষয়টি নিয়ে বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ তৃণমূল প্রধানকে কটাক্ষ করে বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তথ্যপ্রমাণ দেওয়া উচিত। কারণ উনি সমস্যার মধ্যে ছুটে গিয়ে ঝোল টানছেন। আবার অধ্যাপক সেনকে আক্রমণ করে তিনি বলেছেন, জমিচোরকে কি তবে নোবেল দেওয়া হয়েছে?

পাশাপাশি, অমর্ত্য সেনকে নিয়ে বিশ্বভারতী যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে তা নিয়ে নাখোশ সেখানকা শিক্ষার্থীরাও। অচিরেই তারা এ বিষয়টি নিয়ে রাস্তায় নামার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন।

এছাড়াও, কেন্দ্র সরকারের পরামর্শে চলার কারণে বিশ্বভারতী তাদের নিজস্ব অনন্যতা হারাচ্ছে বলেও মনে করছেন প্রতিষ্ঠানটির অনেক সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষার্থী।

অমর্ত্য সেন তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গ সরকার বাড়ি নিয়ে বিতর্ক বিজেপি বিশ্বভারতী মমতা ব্যানার্জি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর