৩০০ দিনে দেশে প্রাণ হারিয়েছেন ১২৫ চিকিৎসক, প্রণোদনা মাত্র একজনের
১ জানুয়ারি ২০২১ ২৩:০৫
ঢাকা: দেশে প্রথমবারের মতো তিন জনের মাঝে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ মহামারি সময়ে সবচাইতে বেশি অগ্রণী ভূমিকা পালন করে গেছে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীরা যারা সরাসরি রোগীর সংস্পর্শে এসে চিকিৎসা দিয়েছে। ব্যতিক্রম নয় বাংলাদেশও। দেশের কোভিড-১৯ রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীরা।
এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ সংক্রমণের শুরু থেকে ৩০০ তম দিন পর্যন্ত দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে দুই হাজার ৮৯০ জন চিকিৎসকের মাঝে। এছাড়াও এক হাজার ৯৮২ জন নার্স ও তিন হাজার ২৮৫ জন স্বাস্থ্য কর্মী কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে সারা দেশে। চিকিৎসকদের সর্ববৃহৎ সংগঠন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) তথ্য অনুসারে এই সময়ে দেশ হারিয়েছে ১২৫ জন চিকিৎসককে। দেশে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব মোকাবিলার শুরুতে প্রণোদনার ঘোষণা দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র একজন চিকিৎসক প্রণোদনা পেয়েছেন। বিষয়টিকে হতাশাজনক বলে মনে করছেন চিকিৎসক নেতারা।
এক নজরে ৩০০ দিনে যে সকল চিকিৎসকদের হারিয়েছি (মাস ভিত্তিক):
এপ্রিল-
দেশে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পরে ৫ এপ্রিল সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (মেডিসিন) ডা. মঈন উদ্দিনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়। ৭ এপ্রিল তার শ্বাসকষ্ট শুরু হলে প্রথমে তাকে সিলেটে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৮ এপ্রিল সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৫ এপ্রিল সকাল পৌনে আটটার দিকে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এটিই চিকিৎসক হিসেবে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে মৃত্যুবরণ করার প্রথম ঘটনা।
মে-
৩ মে- রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ১৭ ব্যাচের ছাত্র ও দেশের আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজিস্ট এবং ল্যাবরেটরি মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক কর্নেল (অব:) ডা.মো.মনিরুজ্জামান ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
১১ মে- ফরেনসিক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আনিসুর রহমান মৃত্যুবরণ করেন কোভিড-১৯ উপসর্গ নিয়ে। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মৃত্যুবরণ করেন।
১২ মে- ইবনে সিনা হাসপাতালের রেডিওলোজী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মুক্তিযোদ্ধা ডা. মেজর (অব.) আবুল মোকারিম মো. মহসিন উদ্দিন কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
১৮ মে- মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ডা. আজিজুর রহমান রাজু কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
২২ মে- স্বাস্থ্য অধিদফতরের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক ডা. এম এ মতিন সিলেট শামসুদ্দিন আহমেদ মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যান।
২২ মে- গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. কাজী দিলরুবা খানম ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
২৫ মে- চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডা. সৈয়দ জাফর হোসাইন কোভিড-১৯ উপসর্গ নিয়ে মারা যান।
২৬ মে- গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. আমিনা খান কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
২৬ মে- রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ বিশেষজ্ঞ ডা. আব্দুর রহমান মারা যান।
২৭ মে- বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মোশাররফ হোসেন মারা যান।
২৮ মে- ক্যাপ্টেন (অব.) ডা মো. এ. এফ. এম সাইদুল ইসলাম মারা যান কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে।
৩১ মে- ডা. ওয়াহিদুজ্জামান আকন্দ বাবলু এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
জুন
এই মাসে সবচাইতে বেশি চিকিৎসক মারা যান। এর মাঝে ২ জুন ইউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. মনজুর রশিদ চৌধুরী, ৩ জুন চট্টগ্রামের মেরিন সিটি মেডিক্যাল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক (মেডিসিন) ডা. এহসানুল করিম, ইব্রাহিম মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দীন ও ডিজি হেলথের অবসরপ্রাপ্ত ইভালুয়াটার অফিসার ডা. এ কে এম ওয়াহিদুল হক মৃত্যুবরণ করে।
এছাড়াও ৪ জুন মারা যান ফরেনসিক মেডিসিনের কিংবদন্তী চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল অফিসার ডা. মুহিদুল হাসান ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এন আই খান মারা যান।
৫ জুন মারা যান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এস এ এম গোলাম কিবরিয়া ও বেসরকারি পোশাক কারখানায় কর্মরত ডা. ইহসানুল কবির চৌধুরী। ৬ জুন করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যান সাভার ইপিজেড এর সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার (অব.) ডা. আবুল কাসেম খান। ৭ জুন মারা যান বেসরকারি স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের প্রধান ও পরিচালক ( মেডিক্যাল সার্ভিসেস) অধ্যাপক ডা. মির্জা নাজিম উদ্দিন। ৮ জুন মারা যান ডা. রাজিয়া, ল্যাবএইড হাসপাতালের অ্যানেস্থেশিওলজি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. সাখাওয়াত হোসেন ও চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আবু বকর সিদ্দিক।
৯ জুন মারা যান বরিশালের ডা. আনোয়ার হোসেন ও ইমপালস হাসপাতালের অ্যানেস্থেশিওলজি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. জলিলুর রহমান খান।
১০ জুন মারা যান মেরি স্টোপস ক্লিনিকের সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার ডা. তানজিলা রহমান। ১২ জুন মারা যান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পেডিয়াট্রিক বিভাগের অধ্যাপক ডা. গাজী জহিরুল হাসান, জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহমুদ মানোয়ার, জেড এইচ শিকদার মহিলা মেডিক্যাল কলেজের চক্ষু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এ কে এম ফজলুল হক ও চট্টগ্রামের বেসরকারিভাবে কর্মরত ডা. আরিফ হাসান।
১৩ জুন মারা যান বেসরকারি বিআরবি হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের প্রধান ডা. মোহাম্মাদ সাজ্জাদ হোসাইন।
১৪ জুন বিএমএ’র আজীবন সদস্য চট্টগ্রামের ডা. সাদেকুর রহমান ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক ডা. নজরুল ইসলাম।
১৪ জুন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক (ডেন্টাল) ডা. নজরুল ইসলাম মৃত্যুবরণ করেন।
১৫ জুন মারা যান বিসিআইসির সাবেক অতিরিক্ত প্রধান মেডিক্যাল অফিস ডা. তৌফিকুন্নেছা ও কক্সবাজার জেলার সাবেক সিভিল সার্জন ডা. আ ন ম আব্দুল হাই।
১৬ জুন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ডা. এ. কে. এম মুজিবুর রহমান মারা যান।
১৭ জুন একইদিনে মারা যান চার চিকিৎসক। তারা হলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালের সিনিয়র আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. নুরুল হক, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. আশরাফুজ্জামান, দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডা. শাহ আব্দুল আহাদ ও এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. রফিকুল হায়দার লিটন।
১৯ জুন বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ও প্রতিষ্ঠানটির ডার্মাটোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. এমদাদুল্লাহ খান মারা যান।
২০ জুন মারা যান বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত অধ্যাপক ডা. শফিক আহমেদ, কুমিল্লার সেন্ট্রাল মেডিক্যাল কলেজের শিশু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুজিবুর রহমান রিপন ও ইমপালস হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. বজলুর রহমান।
২১ জুন মারা যান চট্টগ্রামের নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ ডা. ললিত কুমার দত্ত ও জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সহযোগী অধ্যাপক ডা. সুনীল কুমার সরকার মারা যান।
২৩ জুন নারায়ণগঞ্জের ডা. মো. আলী আসগর ও ডা. উপেন্দ্র নাথ পাল মারা যান।
২৪ জুন মারা যান তিনজন চিকিৎসক-সিরাজগঞ্জের ডা. মো. ইউনুস আলী খান, ডা. মো. সমিরুল ইসলাম বাবু ও ডা. এস এম সাইফুল ইসলাম মারা যান।
২৫ জুন মারা যান ডা. ফিরোজা বানু মিনু মারা যান।
২৬ জুন ডা. মোহাম্মদ হোসেন চট্টগ্রাম ম্যাক্স হাসপাতালে মারা যান।
২৭ জুন- জুন জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মো. আসাদুজ্জামান ও সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মানসিক রোগ বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. গোপাল শংকর দে মারা যান।
২৯ জুন মারা যান ঢাকা রতন’স ডেন্টালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চীফ কনসালটেন্ট ডা. সৈয়দ তমিজুল আহসান রতন।
জুলাই
১ জুলাই মারা যান গাজীপুরের ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের শিশু বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. গোলাম সারওয়ার, বিশিষ্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. অধ্যাপক ডা. মো. রুহুল আমিন ও হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এম এ ওয়াহাব।
৪ জুলাই মারা যান স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফিজিওলজি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও বিএমএ-র আজীবন সদস্য অধ্যাপক ডা. কে এম মুনতাকিম চৌধুরী।
৫ জুলাই মারা যান স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ কে এম নুরুল আনোয়ার।
৭ জুলাই ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. মো. সাজ্জাদ হোসেন মারা যান।
১৪ জুলাই চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গাইনি অ্যান্ড অবস বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. সুলতানা লতিফা জামান আইরিন মারা যান।
১৭ জুলাই কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এস এম নুর উদ্দিন আবু আল বাকী রুমি, বাংলাদেশ ডাক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার ডা. আবদুল হামিদ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ইনডোর মেডিক্যাল অফিসার ডা. কোহেল করিম মারা যান।
১৮ জুলাই জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল হোসাইন খান চৌধুরী মারা যান।
২৫ জুলাই কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের সাবেক পরিচালক ব্রি. জেনারেল ডা. মো শহীদুল্লাহ কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ে মারা যান।
২৬ জুলাই অর্থোপেডিক সার্জন ডা. বদিউজ্জামান হীরা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
২৮ জুলাই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও সোসাইটি অব সার্জনস অব বাংলাদেশ-এর সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. টি আই এম আব্দুল্লাহ আল ফারু কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
২৯ জুলাই ডা. নারগিম মুর্শিদা বানু পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
আগস্ট
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী ৩ আগস্ট মারা যান।
৬ আগস্ট মারা যান স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক ডা. এফ বি এম আব্দুল লতিফ।
৮ আগস্ট ডা. মো. গোলাম মোস্তফা মারা যান।
৯ আগস্ট মারা যান সিরাজগঞ্জের শহীদ মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজের অর্থোসাজারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রেজোয়ানুল বারী শামীম।
১০ আগস্ট মারা যান রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডা. মো. মোস্তাক হোসেন আনসারী।
১১ আগস্ট মারা যান স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজের নাক-কান-গলা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. আসাদুল হক খান।
১৬ আগস্ট কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যান ডা. আফতাব উদ্দিন আহমেদ ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক ডা. মো আব্দুর রহমান।
২০ আগস্ট কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয় মারা যান পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের সাবেক উপ-পরিচালক ডা. সৈয়দ আখতার হোসেন ও জনস্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের সাবেক সহ-পরিচালক ডা. এ বি এম সিদ্দিকুল ইসলাম।
২৮ আগস্ট মারা যান বিএমএর আজীবন সদস্য ডা. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ও কুমিল্লা জেলার সাবেক সিভিল সার্জন মুক্তিযোদ্ধা ডা. মো আব্দুল মতিন পাটোয়ারী কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
সেপ্টেম্বর
২ সেপ্টেম্বর মারা যান ডা. বি এম ফারুক কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যান বগুড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে।
৩ সেপ্টেম্বর মারা যান ইব্রাহীম মেডিক্যাল কলেজের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক ডা. শামসুন নাহার বেলা।
৭ সেপ্টেম্বর মারা যান অধ্যাপক ডা. এ এফ এম সিদ্দিকুর রহমান ও অধ্যাপক ডা. মো. হুমায়ুন কবীর।
৮ সেপ্টেম্বর মারা যান অধ্যাপক ডা. সুরাইয়া রওশন আর বেগম ও জনস্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের সাবেক পরিচালক ডা. নির্মলেন্দু চৌধুরী।
১৭ সেপ্টেম্বর মারা যান ডা. মো ওবায়দুর রহমান কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে।
২৮ সেপ্টেম্বর ডা. হেদায়েতুল ইসলাম মারা যান কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে।
অক্টোবর
১ অক্টোবর মারা যান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ হোসেন।
১১ অক্টোবর কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যান অধ্যাপক ডা. মির্জা মাজহারুল ইসলাম,
১৩ অক্টোবর মারা যান ডা. কাউসার আহমদ মজুমদার
১৪ অক্টোবর মারা যান ডা. রমেশ চন্দ্র নাথ ও ডা. মো খলিল উদ্দিন
২৫ অক্টোবর মারা যান অধ্যাপক ডা. এ কে এম মাসুদুর রহমান
২৯ অক্টোবর মারা যান মুক্তিযোদ্ধা ডা. সেলিম আহমেদ ও
৩০ অক্টোবর কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এম এ জলিল।
নভেম্বর
১ নভেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান ডা. সৈয়দ সাজ্জাদ কামাল হিরু
৩ নভেম্বর এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান মমেক ১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী ডা. নাসির উদ্দিন আহমেদ।
৮ নভেম্বর এ এন জেড হাসপাতালে মারা যান অধ্যাপক ডা. এ বি এম আলী আকবর বিশ্বাস।
১৪ নভেম্বর মমেক ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ডা. এ বি এম মাকসুদুল সালেহীন মারা যান
১৫ নভেম্বর ডা. মো. রেজাউর রহমান প্রধান মারা যান রংপুর কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে।
১৮ নভেম্বর চমেক ব্যাচ ১১ এর শিক্ষার্থী ডা. নুরুল ইসলাম মৃত্যুবরণ করেন।
১৯ নভেম্বর ডা. আ জ ম শফিউল আলম শাহ্ (বাবু) বিএসএমএমইউতে মৃত্যুবরণ করেন।
২৯ নভেম্বর ডা.মজিবুর রহমান খান হীরা মৃত্যুবরণ করেন।
২৯ নভেম্বর ডা. বুশরা সারওয়ার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
ডিসেম্বর
৩ ডিসেম্বর শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. এ কে এম শামসুল হক মৃত্যুবরণ করেন।
৬ ডিসেম্বর কুমেক ব্যাচ ৪ এর শিক্ষার্থী ডা. আইরিন পারভীন মৃত্যুবরণ করেন
৯ ডিসেম্বর ডা. সাইদুল ইসলাম মৃত্যুবরণ করেন
১৩ ডিসেম্বর ডা. রাশেদ সারওয়ার আলম রনি মৃত্যুবরণ করেন।
১৩ ডিসেম্বর অধ্যাপক ডা. মো. আবদুল কাদির খান মৃত্যুবরণ করেন
১৯ ডিসেম্বর ডা. গাজী শফিকুল আলম চৌধুরী ইউনাইটেড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন
২০ ডিসেম্বর অধ্যাপক ডা. আবদুল মুক্তি সরকার মৃত্যুবরণ করেন
২১ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. মোহাম্মদ হাসান মুরাদ মৃত্যুবরণ করেন
২১ ডিসেম্বর ঢাকা বক্ষব্যাধি হাসপাতালের প্রাক্তন কনসালটেন্ট ডা. মো. নিজাম উদ্দিন ভুঁইয়া মৃত্যুবরণ করেন।
২৫ ডিসেম্বর নিবেদিতা শিশু হাসপাতালের পরিচালক ও শিশু হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. আনোয়ারুল করিম বাবুল মৃত্যুবরণ করেন।
২৮ ডিসেম্বর ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি, সিলেটের সাবেক প্রভাষক ডা. শেখ সায়েম মৃত্যুবরণ করেন।
২৮ ডিসেম্বর জাতীয় বক্ষব্যাধি ইন্সটিটিউট ও হাসপ[আতালের বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এ কে এম শামসুল হক মৃত্যুবরণ করেন।
৩০ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ডা. লুতফর কাদের লেনিন মৃত্যুবরণ করেন।
এ ক্ষতি পূরণ হওয়ার নয়: বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল সারাবাংলাকে বলেন, আমরা দেশের অনেক প্রখ্যাত চিকিৎসকদের হারিয়েছি এই কোভিড-১৯ মহামারি সময়ে। এই ক্ষতি অপূরণীয়। আমরা হারিয়েছি এমন অনেক অধ্যাপককে যাদের জায়গা পূরণ হতে আরও অনেক সময় প্রয়োজনও। এছাড়াও রোগীদের সরাসরি সংস্পর্শে যায় অ্যানেস্থিশিয়ার চিকিৎসকরা। তারাও আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেও অনেকে। এমনিতেই আমাদের দেশে অ্যানেস্থিশিয়ার চিকিৎসক সঙ্কট আছে। তার উপরে এমন অনেক চিকিৎসকের চলে যাওয়া নিঃসন্দেহে অপূরণীয় ক্ষতি।
তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যদি পেশাগত দিক বিবেচনা করা হয় তবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক শহিদ হয়েছেন চিকিৎসকরা। কোভিড-১৯ মহামারি কালেও দেশের জন্য সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু তাদের সুরক্ষার বিষয় নিয়ে ছিল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা। এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত প্রণোদনা প্যাকেজ নিয়েও আমাদের মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কর্মকর্তাদের উদাসীনতা।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে কিন্তু অনেক সরকারি পেশাজীবী প্রণোদনা পেয়ে গেছে ইতোমধ্যেই। চিকিৎসকদের মধ্যে শুধু ডা. মইন পেয়েছেন। এছাড়াও আর কারো নামের তালিকা এখনো মন্ত্রণালয় অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠান নাই। এটা দুর্ভাগ্যজনকই না শুধু একই সঙ্গে হতাশারও। এর জন্য দায়ী শুধুমাত্র স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদাসীনতা।
ডা. দুলাল বলেন, সামনে যে ভ্যাকসিন আসবে সেটি নিয়েও আমি আসলে শঙ্কিত কারণ দেখা যাচ্ছে খোদ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যক্তি বিচ্ছিন্ন ভাবে বিভিন্ন স্থানে বলছেন সরকারের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা আগে ভ্যাকসিন পাবেন। এক্ষেত্রে সারা বিশ্বে যেখানে ফ্রন্টলাইনার হিসেবে চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীরা ভ্যাকসিন নিচ্ছে সেখানে বাংলাদেশে কিভাবে এমন কথা বলে তা বোধগম্য হয় না।
তিনি বলেন, আমি আসলে বর্তমানে এই অতি কথনে বিশ্বাসী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উপরে আর ভরসা রাখতে পারি না। তবে তাও আশা করবো রাষ্ট্র অতি দ্রুত এই প্রণোদনার বিষয়টি বাস্তবায়ন করবে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে চিকিৎসকদের সুরক্ষার বিষয়ও নিশ্চিত করবে।
বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, চিকিৎসকদের হারানোর মধ্য দিয়ে দেশ ও জাতির যে ক্ষতি হয়েছে তা কোনো প্রকারের ক্ষতিপূরণ দিয়ে সারানো যাবে না। এটি অপূরণীয় ক্ষতি। তবে রাষ্ট্র বলেছে প্রণোদনার বিষয়ে আর তাই রাষ্ট্রেরই দায়িত্ব ছিল দ্রুততার সঙ্গে সেই প্রণোদনার ব্যবস্থা করা। আমরা সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসকদের প্রণোদনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। যারা এই কোভিড-১৯ মহামারিকালে শহিদ হয়েছেন তাদের বিষয়েও গুরুত্বের সঙ্গে ভাবা উচিৎ। আশা করি সরকারের পাশাপাশি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতর এই বিষয়গুলো নিয়ে আরও আন্তরিক হবে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, করোনা মহামারির সময়ে দেশে চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে যেসব চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। ইতোমধ্যেই মৃত্যুবরণকারী সরকারি চিকিৎসকের তালিকা অর্থমন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। যেহেতু বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে তাই আশা করছি কিছু দিনের মধ্যে সরকার ঘোষিত অর্থ সবাই পেয়ে যাবেন।
উল্লেখ্য, দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ শুরুর দিকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা ও মৃত্যুবরণকারীদের জন্য ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২৩ এপ্রিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট অনুবিভাগ থেকে জারি করা এক পরিপত্রে এ বিষয়ে বলা হয়, করোনাভাইরাসে পজিটিভ হলে গ্রেড ১ থেকে ৯ পর্যন্তরা পাবেন ১০ লাখ টাকা আর মারা গেলে পাবেন ৫০ লাখ টাকা, গ্রেড ১০ থেকে ১৪ পর্যন্তরা আক্রান্ত হলে সাত লাখ ৫০ হাজার টাকা আর মারা গেলে পাবেন ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আর ১৫ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মকর্তারা আক্রান্ত হলে পাবেন পাঁচ লাখ টাকা আর মারা গেলে পাবেন ২৫ লাখ টাকা।
ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের সম্মানীর জন্য ২০২০-২১ অর্থ বছরের বাজেট প্রস্তাবনায় ৮৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ‘স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাবদ ক্ষতিপূরণের জন্য বিশেষ অনুদান’ খাতে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে করোনায় মৃত্যুবরণ করা চিকিৎসকদের মধ্যে মাত্র একজন ছাড়া আর কেউই এই ক্ষতিপূরণের অর্থ পায়নি।
২৭ এপ্রিল সরকারের কাছে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের আবেদন করেন দেশে প্রথম চিকিৎসক হিসেবে মৃত্যুবরণকারী সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দিনের স্ত্রী। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিভাগ তাঁর আবেদনের ভিত্তিতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠায়। পরবর্তীতে সেপ্টেম্বরের পরে তাদের ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হলেও অন্য কারো বিষয়ে আর ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায় নাই।
উল্লেখ্য, দেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ৩০০ দিনে দেশে ৩২ লাখ ৩৯ হাজার ৭০১টি নমুনা পরীক্ষা করে পাঁচ লাখ ১৪ হাজার ৪৯৯ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে দেশে মারা গেছে সাত হাজার ৫৭৬ জন।