Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সরকারি টাকায় টিলা কেটে রাস্তা করলেন ইউপি সদস্য


৩ জানুয়ারি ২০২১ ১০:২০

মৌলভীবাজার: পরিবেশ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পাহাড়ি টিলা কেটে সাবাড় করছেন স্থানীয় এক ইউপি সদস্য। শুধু তাই নয়, টিলার মাটি রাতের আঁধারে ট্রাক ভর্তি করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করার অভিযোগও উঠেছে। ওই ইউপি সদস্য দুটি প্রাকৃতিক টিলা কেটে রাস্তা নির্মাণ করেছেন তাও আবার সরকারি টাকায়।

অভিযুক্ত ব্যক্তি মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। নাম মনু মিয়া। টিলা কাটায় চরম হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য।

বিজ্ঞাপন

এ ছাড়া সরকারি কাজ বাস্তবায়নে অর্থ নয়ছয় এর অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্য মনু মিয়ার বিরুদ্ধে। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি নিয়ে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়েছেন।

জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে টিআর প্রকল্পে উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের রঙ্গীরকুল-পাঁচপীর জালাই রাস্তা নির্মাণে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১৩২ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। একই অর্থ বছরে ইউনিয়নের কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্পের আওতায় ২ লাখ টাকা ব্যয়ে কালা মিয়ার বাড়ি থেকে অর্জুণকুর্মি রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরু হয়। আর এই দু’টি কাজের দায়িত্ব পান জয়চন্ডী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার অভিযুক্ত মনু মিয়া।

শুরু থেকে স্থানীয় লোকজন কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ আনেন। একপর্যায়ে স্থানীয়রা বিষয়টি লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানান।

স্থানীয়দের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, রঙ্গীরকুল-পাঁচপীর জালাই রাস্তা নির্মাণে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১৩২ টাকার মধ্যে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকার কাজ হয়েছে। এ ছাড়া কালা মিয়ার বাড়ি থেকে অর্জুণকুর্মি রাস্তায় ২ লাখ টাকার মধ্যে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকার কাজ হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে উল্লেখ রয়েছে, সরকারি কিংবা বেসরকারি মালিকানাধীন কোনো ধরনের টিলা কাটা যাবে না।

সরেজমিনে দেখা যায়, রঙ্গীরকুল-পাঁচপীর জালাই রাস্তায় মলাঙ্গি টিলায় প্রায় এক হাজার ফুট টিলা ১০ থেকে ১২ ফুট গভীর করে কাটা হয়। যেভাবে খাড়া করে টিলা কাটা হয়েছে, তাতে আগামী বর্ষা মৌসুমেই টিলা রাস্তায় ধসে পড়বে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা শঙ্কা প্রকাশ করেন।

মাটি কাটা এবং বিক্রিতে ইউনিয়নের দিলদারপুর গ্রামের এলাইচ মিয়ার স্কেভেটর ও ট্রাক্টর ব্যবহার করা হয়েছে বলেও স্থানীয়রা জানান।

অভিযুক্ত মেম্বার মনু মিয়া বলেন, ‘টিলা না কাটলে রাস্তা হবে না। পাহাড়ে যেতে রাস্তা লাগে। এটাকে পাহাড় কাটা বলে না।’

তিনি বলেন, ‘কেউ অভিযোগ দিতেই পারে। তবে রঙ্গীরকুল-পাঁচপীর জালাই রাস্তার কাজের প্রজেক্ট হচ্ছেন চেয়ারম্যান, আমি নয়। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন কমরু প্রজেক্ট চেয়ারম্যান।’

কুলাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শিমুল আলী সাংবাদিকদের জানান, তিনি নিজে দেখেছেন রঙ্গীরকুল-পাঁচপীর জালাই রাস্তার কাজে অনিয়মের চিত্র। এমনকি কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।

এ ব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পরিবেশ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার জেলার সহকারী পরিচালক মো. বদরুল হুদা সারাবাংলাকে বলেন, ‘এই প্রথম আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। আমি দ্রুতই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠিন আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’

উন্নয়ন কাজ রাস্তা নির্মাণ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর