Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ভ্যাকসিনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ প্রকাশ করা উচিত’


৩ জানুয়ারি ২০২১ ১৩:৪৮

ফাইল ছবি

ঢাকা: করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ প্রকাশ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (০৩ জানুয়ারি) সকালে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। ।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সাংবাদিকরা খুব সচেতনভাবে করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে পত্র-পত্রিকায় লিখছেন। তাদের লেখার মাধ্যমে আমরা এ সম্পর্কে জানতে পেরেছি। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে বা সুস্পষ্টভাবে কোনো বক্তব্য আমরা পাইনি।’

‘আমরা যেটা পত্র-পত্রিকায় দেখেছি সেটা হলো— ভ্যাকসিন সংগ্রহের ক্ষেত্রে গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেছেন যে, ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে বেক্সিকোর মাধ্যমে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন আনছেন তারা,’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘টঙ্গীতে বেক্সিমকোর যে কোল্ড স্টোরেজ আছে, ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে আনা ভ্যাকসিন সেখানে সংরক্ষণ করা হবে এবং সেখান থেকে সরকারের কোল্ড স্টোরেজে পৌঁছে দেবে বেক্সিমকো। পরে সেখান থেকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে যেখানে যেটা যাওয়া বা দেওয়া দরকার সেখানে সেটা দেওয়া হবে।’

‘আমরা বলতে চাই, ভ্যাকসিনের একটা সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ জনগণের সামনে প্রকাশ করা উচিত। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ সেভাবে কিছু বলেননি,’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানমের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তিনি খুবই সমাজ-সচেতন একজন মানুষ ছিলেন। ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার মৃত্যুতে আমরা একটা শূন্যতার মধ্যে পড়ে গেলাম। আয়শা খানমের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।’

বিজ্ঞাপন

জাতীয় প্রেসক্লাবে নবনির্বাচিত কমিটিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জাতীয় প্রেসক্লাবে যারা নির্বাচিত হয়েছেন, তাদেরকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। একই সাথে নতুন কমিটি দল-নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা শুনতে পারছি যে, উচ্চপর্যায়ের মানুষদের জন্য এরইমধ্যে তালিকা প্রস্তুত হয়ে গেছে। গুলশান ক্লাব, ঢাকা ক্লাব, উত্তরা ক্লাব— এই সমস্ত ক্লাবে যারা সদস্য আছেন, তাদের তালিকা করা হচ্ছে।সরকারের উচ্চ পদস্ত কর্মকর্তা যারা আছেন তাদের জন্য করা হচ্ছে, মন্ত্রীদের জন্য করা হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ কীভাবে এই ভ্যাকসিন পাবে, কখন পাবে সেই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য আমরা সরকারের কোন দফতরের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত পাইনি। আমরা চাই, সাধারণ মানুষ যেন বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পায়।

টিকা বাংলাদেশে কবে পৌঁছাব— তা নিয়ে জনগণকে সরকারের সঠিকভাবে তথ্য দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বেক্সিমকো কত কমিশন পাচ্ছে জানতে চেয়ে তিনি বলেন, ‘এই যে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিটিউট অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার থেকে ভ্যাকসিন কিনেছে। দেয়ার আর পারচেজ অব ফর্মুলা অ্যান্ড দে উইল প্রডিউস ভ্যাকসিন, তারা তৈরি করবে। তার পর সেটা বেক্সিমকো বাংলাদেশে নিয়ে আসবে। আমাদের প্রশ্ন হলো— এটা তো পরিষ্কার হতে হবে জনগণের কাছে, ভ্যাকসিন সরকার না কিনে বেক্সিমকো কিনল কেন?’

বেক্সিমকোর কি এখানে কমিশন আছে? কত কমিশন আছে? বেক্সিমকোর কত কমিশন আছে?— সেটা আমরা জানতে চাই। মূল্য কত দিতে হবে। সিরাম ইনস্টিটিউটকে সরকার টাকা দিচ্ছে। কার মাধ্যমে দিচ্ছে? বেক্সিমকোর ফার্মাসিটিক্যালসের মাধ্যমে দিচ্ছে। হোয়াই। সরকার নিজে সিরাম ইনস্টিটিউটকে দিচ্ছে না কেনো?— প্রশ্ন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন সংগ্রহ, ভ্যাকসিন সংরক্ষণ, ভ্যাকসিন বিতরণ অত্যন্ত প্রফেশনাল, টেকনিক্যাল ও বিশেষ ব্যাপার। আমরা পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারছি যে, আজ-কালকের মধ্যেই সম্ভবত আজকেই ৬‘শ কোটি টাকা বেক্সিমকোর মাধ্যমে সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছে দেবে। সেটার পর তারা ৬ মাসে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেবে। তাতে করে দেখা যাচ্ছে যে, প্রতিমাসে ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আসবে। এটি প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল।’

করোনা সংক্রামণে সরকারের তথ্য সঠিক নয় মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার তরফ থেকে বলা হচ্ছে যে, গতকাল পর্যন্ত ৫ লাখ ১৫ হাজার ১৮৪ জন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে এবং মারা গেছে ৭ হাজার ৫১৯জন। আমরা বার বার বলেছি এই তথ্য সঠিক নয়। অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে বাড়িতে। তারা কিন্তু রিপোর্টও করছেন না, হাসপাতালেও যাচ্ছেন না, বাড়িতে মারা যাচ্ছেন অথবা সংক্রমিত হচ্ছেন। সরকারের পরীক্ষা করবার যে নীতি চলছে এটা যথেষ্ট নয়। আমরা মনে করি যে, এটা গ্রোস নেগলেজেন্সি।’

তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টা মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িত, এ দেশের মানুষের সঙ্গে জড়িত। এটা নিয়ে সরকারের সুষ্ঠু বক্তব্য নিয়ে আসা উচিত, পরিকল্পনা করা উচিত। আমরা আগেও বলেছি, যে তথ্য সরকার দিচ্ছে তা সঠিক নয়। আমরা করোনা সংক্রামণ ও মৃত্যুর সঠিক পরিসংখ্যান দাবি করছি।’

ভ্যাকসিন নিয়ে বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘করোনা সংক্রমণের বিষয় সম্পর্কে স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছে বিএনপি। এ কমিটি সদস্য হলেন, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন ও অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক হারুন অর রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুস সালাম এবং বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয় সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম।

‘এই কমিটি অবিলম্বে ভ্যাকসিন সংগ্রহ থেকে শুরু করে প্রদান পর্যন্ত যাবতীয় তথ্যাদি সংগ্রহ করবে এবং সেই তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে জাতির সামনে তুলে ধরবে,’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপির চেয়ারপারসন বিএনপির মহাসচিব বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর