‘আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে দক্ষ জনশক্তির বিকল্প নেই’
৩ জানুয়ারি ২০২১ ১৯:১৩
ঢাকা: মহামারির পর আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে টিকে থাকার জন্য বাংলাদেশকে নতুন কৌশল অবলম্বন করতে হবে বলে মনে করেন বাহরাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম। এ জন্য মানবসম্পদকে দক্ষ করে গড়ে তোলার বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
শনিবারের (২ জানুয়ারি) সারাবাংলা ডটনেটের বিশেষ আয়োজন ‘সারাবাংলা ফোকাস’ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে এবারের পর্বের বিষয় ছিল ‘২০২১: নতুন বছরের প্রত্যাশা’। সারাবাংলাডটনেটের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট এম এ কে জিলানীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও যুক্ত ছিলেন, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন কর্মী কে এ এম মোর্শেদ, বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ ও নিউইয়র্কের মেট্রোপলিটন লার্নিং ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মাসুদুল হাসান
অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিরা বলেন, করোনাভাইরাস মহামারিতে কেটে গেছে ২০২০ সাল। নতুন বছরে করোনা থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীসহ ব্যাংকিং, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের যেসব দুর্বলতা গুলো করোনা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন বছরে নতুন বিশ্বে টিকে থাকার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।
আন্তর্জাতিক উন্নয়নকর্মী কে এ এম মোর্শেদ বলেন, ‘করোনাকালীন সময়ের দুর্বলতাগুলো যেন আগামী দিনে সমস্যা তৈরি করতে না পারে, সেজন্য আমরা সরকারের সঙ্গে কাজ করছি।’ এছাড়া করোনাভাইরাস চলে গেলেও নতুন বছরে আমাদের সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের পদ্ধতিটা বদলে ফেলা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
এছাড়া আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে বাংলাদেশের টিকে থাকার জন্য নতুন নতুন কৌশলের কথাও জানান অতিথিরা।
এ বিষয়ে কে এ এম মোর্শেদ জানান, ইথিওপিয়াসহ নতুন বাজারের কথাও চিন্তা করছে বাংলাদেশ।
মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘২০২১ সালে কর্মসংস্থান ও প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে গেলে বাংলাদেশকে বিনিয়োগ, বাণিজ্য এবং মানবশক্তির ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। করোনার পর যেসব বাজার তৈরি হবে, তাতে প্রবেশ করার জন্য এখনই কৌশল অবলম্বন করতে হবে।’
আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে নতুনভাবে প্রবেশ করার জন্য দক্ষ জনশক্তির কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এজন্য তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং নতুন দক্ষতায় অবশ্যই হাইজিন যুক্ত করা উচিত।’
এছাড়া বাংলাদেশের সার্টিফিকেটের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের শ্রমিকদের দক্ষতা অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে।’ এসব জায়গায় যেন ফাঁকফোকড় না থাকে সেজন্য কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই অনেক বেশি সচেতন হওয়ার প্রতি জোর দেন তিনি। এছাড়া অভিবাসন ব্যয় যাতে সরকার নির্ধারিত ব্যয়ের বাইরে না যায় সেদিকে নজরদারি করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, ‘পুরনো বছরের ক্ষতি সামলে ঘুরে দাঁড়ানোর বছর ২০২১। আয় বৈষম্য দূর করার জন্য নতুন বছরে কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে এবং সাধারণ মানুষকে মানসম্মত শিক্ষা ও চিকিৎসার সুযোগ দিতে হবে।’
এছাড়া ব্যাংকিং খাতকে টিকিয়ে রাখতে হলে আগামীতে এ খাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও শৃঙ্খলা আনতে হবে বলে মনে করেন ড. নাজনীন। সরকারি ব্যাংকগুলোতে অনেক সংশোধন এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন ‘বেসরকারি ব্যাংকগুলোর দিকেও এখন আমাদের নজর দিতে হবে। সেজন্য বেসরকারি ব্যাংকের বোর্ডে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টিতেও জোর দিতে হবে।’
নতুন বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও এগিয়ে যাবে, এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন অতিথিরা। সরকারি-সরকারি খাত, সিভিল সোসাইটি সবাই মিলে কাজ করলে বাংলাদেশের উন্নয়নের গতি আরও বেগবান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।
[প্রসঙ্গত, সারাবাংলা ফোকাস সপ্তাহের প্রতি শনি, সোম এবং বুধবার সন্ধ্যা ৭ টা ৩০ মিনিটে সারাবাংলা ডট নেটের ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলে লাইভ সম্প্রচারিত হয়]
২০২১: নতুন বছরের প্রত্যাশা আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারে দক্ষ জনশক্তি সারাবাংলা ফোকাস