Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হুমকির মুখে বিমানখাত, বন্ধ রিজেন্ট এখনও চালু হয়নি


৪ জানুয়ারি ২০২১ ০৮:১৫

ঢাকা: করোনায় যেসব সেক্টর লোকসানের মুখে পড়েছে তার মধ্যে অন্যতম দেশের বিমানখাত। ২০২০ সালের প্রথম নয় মাসে এই খাতটিতে লোকসান হয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি। করোনাকাল যত বাড়বে এই লোকসানের পাল্লা ততই ভারি হবে। এদিকে রাজস্ব কম হওয়ায় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ফ্লাইট বন্ধ করেছে রিজেন্ট এয়ারওয়েজ। আর করোনা মহামারির কারণে চলতি বছর বিশ্বের এয়ারলাইন্স ইন্ডাস্ট্রির ৮ হাজার ৪০০ কোটি ডলার ক্ষতি হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইএটিএ)।

বিজ্ঞাপন

এখনও চালু হয়নি রিজেন্টের ফ্লাইট

বিমান সংস্থাগুলো আড়াই হাজার কোটি টাকার যে লোকসানের কথা বলা হচ্ছে সেটা সরকারের মালিকানাধীন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস এবং বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলোর সংগঠন এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ দিয়েছে। করোনাকালের আগে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ গন্তব্যে প্রতিদিন দেড় শতাধিক ফ্লাইট পরিচালনা করতো বাংলাদেশ বিমান, ইউএস-বাংলা, নভোএয়ার ও রিজেন্ট এয়ারওয়েজ। এই চারটি এয়ারলাইনস বছরে ৫০ লাখের মতো যাত্রী বহন করে। চলতি বছর আরও বেশি যাত্রী পরিবহনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল তাদের। এ জন্য বহরে নতুন উড়োজাহাজ যুক্ত করা ও ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর সব পরিকল্পনা এলোমেলো হয়ে গেছে। বর্তমানে দেশীয় এই চার সংস্থার মোট ৪৫টি উড়োজাহাজ আছে। বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক গন্তব্যে ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক না হওয়ায় সুপরিসর উড়োজাহাজগুলো অধিকাংশ সময় অলস বসিয়ে রাখতে হচ্ছে। আর বেসরকারি সংস্থার মধ্যে রিজেন্ট এয়ারওয়েজ নানা সংকটে পড়ে গত ফেব্রুয়ারি থেকে ফ্লাইট বন্ধ রেখেছে। ওই সময় তিন মাসের জন্য ফ্লাইট বন্ধ হচ্ছে বলে ঘোষণা দিলেও নয় মাস পার হয়ে গেলেও তাদের ফ্লাইট আর চালু হয়নি। কবে চালু হবে তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। সব মিলে করোনায় হুমকির মুখে বিমানখাত।

বন্ধ রয়েছে বিমানের ফ্লাইট

করোনার মধ্যেও ব্যবসায়িক ঝুঁকি নিয়ে দেশের বেসরকারি এয়ারলাইন্স ইউএস বাংলা মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম আকর্ষণীয় শহর আরব আমিরাতের দুবাইয়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করবে। এছাড়া বাংলাদেশ বিমান সিলেট ও লন্ডন ভ্রমণকে সহজ করতে অক্টোবর থেকে সরাসরি সিলেট থেকে লন্ডন ফ্লাইট চালু হয়েছে। তবে অধিকাংশ আন্তর্জাতিক রুটে রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট বন্ধ রয়েছে। আর সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বাংলাদেশ বিমান কার্গো ফ্লাইট অব্যাহত রেখেছে। আর অভ্যন্তরীণ রুটে ঢাকা, চট্টগ্রাম,কক্সবাজার ও সিলেট ছাড়া সব রুটের ফ্লাইট বন্ধ রয়েছে। কারণ যাত্রী পাচ্ছে না বিমান। একই সাথে অনেক দেশের সঙ্গে এখনও বাংলাদেশের ফ্লাইট চালু হয়নি। এমনকি নতুন করে অনেক দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। ফলে সেসব দেশ লকডাউন রয়েছে। যার কারণে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও বন্ধ রয়েছে। তবে করোনার মধ্যে বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন ১ আগস্ট থেকে দেশের বিমানবন্দর ব্যবহার করে অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ বা বিদেশে গেলে যাত্রীদের নিরাপত্তা ও বিমানবন্দর উন্নয়ন ফি যোগ করে। ফলে আন্তর্জাতিক কিংবা অভ্যন্তরীণ রুটে বিমানের টিকিটের দাম কিছুটা বেড়েছে।

বিজ্ঞাপন

লকডাউনে শুধু চীনের সঙ্গে চালু ছিল ফ্লাইট

করোনাভাইরাসের কারণে ২১ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাজ্য, চীন, হংকং, থাইল্যান্ড ছাড়া সব দেশের সঙ্গে যাত্রীবাহী সব বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা দেয় বেবিচক। কিন্তু কিছিুদিন পরেই যাত্রী স্বল্পতা এবং করোনার জন্য যুক্তরাজ্য, চীন, হংকং, থাইল্যান্ড নিজেরাই বাংলাদেশে আসবে না বলে জানিয়ে দেয়। এরপর বেবিচক করোনাভাইরাসের কারণে আবার সাতদিন ফ্লাইট বন্ধের সময়সীমা বাড়িয়ে ৭ এপ্রিল করে। কিন্তু তখন আবার সাধারণ ছুটি বাড়ানো হয়। বিকল্প ভেবে না পেয়ে বেবিচক আবার সেই নিষেধাজ্ঞা ১৪ তারিখ পর্যন্ত বহাল রাখে। এরপর আবারও সেটি বাড়িয়ে ৩০ এপ্রিল করা হয়। যা আবার দুই দফায় বাড়িয়ে ৩১ মে পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ১ জুন থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চলাচল শুরু হলেও আন্তর্জাতিক রুটে বিমান চলাচল শুরু হয় ১৬ জুন থেকে। ১৬ জুন প্রথম প্রহরে রাত ২টা ১০ মিনিটে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট ৩৩ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকায় আসে। এরপর রাত ৩টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে ২৭৪ জন যাত্রী নিয়ে দোহার উদ্দেশে ছেড়ে যায় কাতার এয়ারওয়েজের উড়োজাহাজটি। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট চলাচল হয় এমন ১৭টি দেশের মধ্যে করোনাকালে কেবল চীনের সঙ্গেই সীমিত পরিসরে যাত্রী ফ্লাইট চালু ছিল।

করোনা ভাইরাস বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস বিমানখাত লকডাউন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর