উপমন্ত্রী নওফেলের নাম ভাঙিয়ে টাকা হাতিয়ে ধরা
৪ জানুয়ারি ২০২১ ২২:০২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণার অভিযোগে হোটেল কর্মীসহ দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মাদকসহ গ্রেফতার একজনকে জামিন পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তার স্ত্রীর কাছ থেকে ২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন দু’জন, যারা নিজেকে উপমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন।
সোমবার (৪ জানুয়ারি) নগরীর কোতোয়ালী থানা পুলিশ এ সংক্রান্ত মামলার ভিত্তিতে নগরীর স্টেশন রোডে গোল্ডেন ইন হোটেলে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতার দুজন হল- শিহাব উদ্দিন সিদ্দিকী (২৬) ও গোল্ডেন ইন হোটেলের মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস ম্যানেজার মো. সোলায়মান (৪১)।
বেসরকারি সাউথ ইস্ট ব্যাংকের জুবিলী রোড শাখার সিনিয়র অফিসার তাসলিমা সাখাওয়াতের দায়ের করা একটি মামলার ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন।
ওসি মহসীন সারাবাংলাকে জানান, গত বছরের ১৭ নভেম্বর তাসলিমার স্বামী ইফতিয়াজ সাঈদ ঢাকার কমলাপুরে র্যাবের হাতে মাদকসহ গ্রেফতার হন। গ্রেফতারের পর ইফতিয়াজ তার স্ত্রীকে শিহাবের মোবাইল নম্বর দিয়ে তার যোগাযোগ করতে বলেন। ইফতিয়াজ স্ত্রীকে জানান, শিহাব তাকে ১ লাখ টাকা দেবেন, সেই টাকা দিয়ে তিনি জেল থেকে বের না হওয়া পর্যন্ত যেন খরচ বহন করেন। পরদিন সন্ধ্যায় শিহাবের কথামতো তাসলিমা গোল্ডেন ইন হোটেলে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন।
‘এসময় শিহাব নিজেকে উপমন্ত্রী মহোদয়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচয় দেন। উপমন্ত্রীর র্যাবের সাথে সমঝোতা করে ইফতিয়াজকে জামিনে মুক্ত করানোর আশ্বাস দেন শিহাব। তাসলিমাকে ১ লাখ টাকা না দিয়ে পরবর্তীতে বরং আরও ২ লাখ টাকা নেন। টাকা নেওয়ার পর থেকে শিহাব তাসলিমাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন। এভাবে প্রায় ১৫ দিন যাবার পর তাসলিমা তাগাদা দিতে থাকলে সে জানায়, উপমন্ত্রীর মাধ্যমে ম্যাজিস্ট্রেটকে রাজি করিয়ে জামিন নিয়ে দেবেন। এজন্য আরও ৬ লাখ টাকা দাবি করেন। তাসলিমা টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে শিহাব বিশ্বাস স্থাপনের জন্য তার কাছে উপমন্ত্রীর সঙ্গে হোয়াটস অ্যাপে ভিডিও কলে কথা বলার একটি ভূয়া স্ক্রিণশট পাঠান।’
ওসি জানান, তাসলিমা বিষয়টি উপমন্ত্রী পিএস রাহুল দাশকে জানান। রাহুল উপমন্ত্রীকে বিষয়টি জানান। উপমন্ত্রী শিহাব নামে কাউকে চেনেন না এবং তার সঙ্গে কখনো কথা হয়নি বলে জানান। এরপর তাসলিমা রাহুল দাশকে নিয়ে থানায় গিয়ে মামলা করেন।
গ্রেফতার সোলায়মানের বিষয়ে ওসি মহসীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘শিহাব ও সোলায়মান দু’জনই উপমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা করেন। তাসলিমা শিহাবের খোঁজে হোটেলে গেলে সোলায়মান তাকে জানান, শিহাব উপমন্ত্রীর কাছের মানুষ। এভাবে নানা কথাবার্তা বলে শিহাবকে টাকা দেওয়ার জন্য তাসলিমাকে প্রলুব্ধ করেন সোলায়মান। এছাড়া সোলায়মান পুলিশকে জানিয়েছে, শিহাব উপমন্ত্রীর রেফারেন্সে হোটেলের কক্ষে থাকছিলেন। বাস্তবে হোটেলের নথি বইয়ে তেমন কিছু লেখা ছিল না।’
গ্রেফতার দু’জনের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি বলে জানান ওসি মহসীন।