বেরোবিতে পরীক্ষার ফল প্রকাশ, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত
৫ জানুয়ারি ২০২১ ১৮:০৯
রংপুর: মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টারের ফল প্রকাশসহ ৮ দফা দাবিতে গত এক সপ্তাহ ধরে চলা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কাছে শেষ পর্যন্ত নতি স্বীকার করল বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) ভোর চারটায় কর্তৃপক্ষ ফল প্রকাশ করলে আন্দোলন থেকে সরে আসেন শিক্ষার্থীরা। তবে বাকি দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে ফের আন্দোলনে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন তারা।
এর আগে সোমবার (৪ জানুয়ারি) দুপুর থেকে কবি হেয়াত মামুদ ভবনে তালা দিয়ে আন্দোলনে নামেন ইংরেজি বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে না নেওয়ায় আন্দোলন বড় হতে থাকে। পরে ভবনের সামনে মধ্যরাতের শীতেও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন কর্ণপাত না করায় শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশণের ঘোষণা দিলে গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ভাইরাল হয়।
পরে রাত দুইটায় প্রক্টর আতিউর রহমান ও ছাত্র-উপদেষ্টা নূর আলম সিদ্দিক এসে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে উঠে যাওয়ার আহ্বান করলে আন্দোলন আরও বেগবান হয়। পরে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে ভোর চারটায় ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক মুশরিফুর জিলানীসহ প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা এসে মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টারের ফল প্রকাশ করলে আন্দোলন সাময়িক স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে দুপুর থেকে চলমান আন্দোলনে সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে হস্তক্ষেপ না করায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, সিনিয়র শিক্ষকসহহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টাসহ বিভাগের শিক্ষকদের ফোন দিলেও কেউই কল রিসিভ করেননি বলে অভিযোগ তাদের। এছাড়াও চলমান আন্দোলনে ইংরেজি বিভাগের কোন শিক্ষককেই দেখা যায়নি। প্রশাসনের এমন কর্মকাণ্ডে প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা পালন করায় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, সাংবাদিকসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা ক্ষুব্ধ হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ২০১২ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর নয় বছরেও শিক্ষাজীবন শেষ না হওয়ায় হতাশ তারা। শিক্ষকদের গ্রুপিং, রেষারেষি এবং অন্তঃকোন্দলের কারণে চার বছর সেশনজটে থাকায় চাকরির বয়স প্রায়ই শেষের পথে। এর আগে ২৮ ডিসেম্বর বেশকিছু দাবি নিয়ে প্রশাসন ভবনে তালা দিয়ে শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করলে সাতদিনের মধ্যে ফল প্রকাশের আশ্বাস দেয়। এতে সাময়িকভাবে কর্মসূচি স্থগিত হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের পরও দাবি পূরণ না হওয়ায় আবারও আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছিলাম আমরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে অতিদ্রুত মাস্টার্স দ্বিতীয় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। কিন্তু আমরা কাউকেই বিশ্বাস করি না। বাকি সাত দফা দাবি আগামীকালের মধ্যে পূরণ না করলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাব।
এদিকে ইংরেজি বিভাগের প্রধান মোহসিনা আহসান, উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ ক্যাম্পাসে না আসায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।