Saturday 26 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের প্রয়োজন দক্ষ জনশক্তি আর উন্নত অবকাঠামো’


৫ জানুয়ারি ২০২১ ১৯:১৮ | আপডেট: ৫ জানুয়ারি ২০২১ ২৩:১৩

ঢাকা: দেশের বর্তমান জনসংখ্যার একটি বড় অংশই তরুণ। তাদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারলে এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে পারলে সত্যিকারের তারুণ্যের বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব বলে মনে করেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)-এর সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর।

সোমবার (৪ জানুয়ারি) সারাবাংলা.নেটের বিশেষ আয়োজন ‘সারাবাংলা ফোকাস’ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব সম্ভাবনার কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে এবারের পর্বের বিষয় ছিল ‘তারুণ্যের বাংলাদেশ, তথ্যপ্রযুক্তিতেই সম্ভাবনা’। সারাবাংলা.নেটের সাংবাদিক রাজনীন ফারজানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও যুক্ত ছিলেন মাই আউটসোর্সিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী তানজিরুল বাশার।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, ‘করোনার সময়ে প্রতিটি ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি উপলব্ধি করেছে মানুষ। তাই চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে প্রবেশের আগে ব্লক চেইন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এ ধরনের দক্ষতা বাংলাদেশের অর্জন করতে হবে।’ এছাড়া বাংলাদেশকে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে হলে এখনই তরুণদের নিয়ে কাজ শুরু করার ওপর জোর দেন তিনি।

বিশ্ববাজারে টিকে থাকতে হলে দক্ষ জনশক্তির বিকল্প নেই উল্লেখ করে তানজিরুল বাশার বলেন, ‘করোনার কারণে এখন বাংলাদেশের জন্য অনেক সুযোগ তৈরি হয়েছে।’

ইন্টারনেট ও দক্ষ মানবসম্পদ একটি আরেকটির পরিপূরক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে রাজধানীর বাইরে থেকেও অনেক কাজ হচ্ছে। যেমন, যশোর থেকে চালডালের সব কার্যক্রম চলছে। বিপিওর অনেক কাজ যশোর হাইটেক পার্ক থেকে হচ্ছে।’

তবে দক্ষতা অর্জনের ক্ষেত্রে বড় বাধা ইন্টারনেট সুবিধা। রাজধানী ও বড় বড় শহরে হাই স্পিড ইন্টারনেট থাকলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রাহকরা এখনো এ সেবা থেকে বঞ্চিত। এ বিষয়ে সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, ‘লাভবান না হওয়ায় মোবাইল কোম্পানিগুলো যেমন সেসব জায়গায় হাই স্পিড ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে না, তেমনি ব্যয়বহুল হওয়ায় সেসব জায়গায় ব্রডব্যান্ড সেবা দেওয়া যাচ্ছে না।’ সেক্ষেত্রে মোবাইল ইন্টারনেটের দাম কমানোর ব্যাপারে বিটিআরসিকে দায়িত্ব নিতে হবে বলে জানান তিনি। আর মোবাইল কোম্পানিকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে সরকারের ই-সেবা চালু করার কথা বলেন সৈয়দ আলমাস।

তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়লেও গত দেড় বছরে তেমন কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেনি। এ প্রসঙ্গে আলমাস কবীর বলেন, ‘ভালো প্রতিষ্ঠান গড়ে না ওঠলেও সরকারের বেশ কিছু প্রকল্প আছে যেখান থেকে মানসম্মত প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।’ উদাহরণ হিসেবে তিনি বেসিস, বিআইটিএম-এর প্রশিক্ষণ কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন। বলেন, যারা এসব জায়গা থেকে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে তারা খুব ভালো কাজ করছে। সম্প্রতিকালে চালু হওয়া অনলাইন প্রশিক্ষণেও অনেক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

মানবসম্পদকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এগিয়ে আসার কথা বলেন সৈয়দ আলমাস। তিনি বলেন, ‘শিক্ষা পরবর্তী যে প্রশিক্ষণ নিতে হয়, সেটা সিলেবাসে অন্তভুর্ক্ত করা গেলে অথবা ইন্টার্নশিপ বাধ্যতামূলক করলে সময়ের অপচয় হবে না। এছাড়া শিক্ষা ব্যবস্থায় আইটি, বিপিও যুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন তানজিরুল বাশার।

বিপিও খাতে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অনেক সুযোগ আছে উল্লেখ করে তানজিরুল বাশার বলেন, ‘এই কাজ পাওয়ার জন্য আমাদের অনেক প্রস্তুতি প্রয়োজন। দক্ষ জনশক্তি, অবকাঠামো উন্নয়ন ও কান্ট্রি ব্র্যান্ড অনেক বেশি জরুরি। ভালো উদাহরণ তৈরি করতে পারলে বাংলাদেশের জন্য কাজ পাওয়া অনেক সহজ হবে।’

মহামারির সময়ে নারীরা অনেক বেশি ফ্রিল্যান্সিং কাজে যুক্ত হয়েছে জানিয়ে অতিথিরা বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারীদের জন্য তথ্যপ্রযুক্তিতে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।’

বাংলাদেশের সামনের সুযোগকে কাজে লাগানোর জন্য ভালো অবকাঠামো, প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট সেবা এবং হাইটেক পার্কগুলোর কাজ শিগগিরই শেষ করার দাবি জানান সৈয়দ আলমাস কবীর। তাহলেই দক্ষ জনশক্তি তৈরির কাজ আরও ত্বরান্বিত হবে বলে মনে করেন তিনি।

তথ্যপ্রযুক্তিতেই সম্ভাবনা তানজিরুল বাশার তারুণ্যের বাংলাদেশ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের প্রয়োজন দক্ষ জনশক্তি আর উন্নত অবকাঠামো সারাবাংলা ফোকাস সৈয়দ আলমাস কবীর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর