Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘মন্ত্রণালয়ের অব্যবস্থাপনায় জাতি আগেও ভুগেছে, আগামীতেও ভুগবে’


৯ জানুয়ারি ২০২১ ১৮:৪৯

ঢাকা: বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই-মাহবুব বলেছেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিজে স্বচ্ছ নয়। তাদের মাথায় কী আছে, আমার বুঝের অভাব আছে। তাদের অব্যবস্থাপনার জন্য জাতি এর আগেও ভুগেছে। আমি মনে করি, তারা আগামীতেও আমাদের ভোগাবে।’

শনিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে বিএমএ মিলনায়তনে বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের ‘বিএইচআরএফ সংলাপ কোভিড-১৯ টিকা ব্যবস্থাপনা: প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন ডা. রশিদ-ই-মাহবুব।

ডা. রশিদ-ই-মাহবুব বলেন, ‘‘আমরা সিরাম ইন্সটিটিউট থেকে ভ্যাকসিন আনবো। এই জায়গাটাতে একটা ধোঁয়াশা আছে ‘আমরা’ নিয়ে। এটা কী বেক্সিমকো আনছে, না আমরা আনছি? বেক্সিমকো যদি না এনে থাকে তাহলে সে কী দালালি নিচ্ছে? বাংলাদেশ সরকার কেন সরাসরি আনতে পারল না, এটা আমাদের জানতে হবে। তা না হলে এটা (ধোঁয়াশা) থাকবে। এটা কিন্তু আমাদের জানার দরকার ছিল। মডার্না, ফাইজার কিন্তু ভ্যাকসিন বাংলাদেশে বিক্রি করতে চায়। আমরা বলছি আমাদের চেইন কোল্ড নাই। সত্যিই কী আমরা ইভ্যালুয়েট করে দেখেছি? বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেক্টরে না থাকতে পারে কিন্তু অন্যান্য সেক্টরে এই ফ্যাসিলিটি এভেইলেবল।’’

তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, মন্ত্রণালয় আমাদেরকে তথ্য সঠিকভাবে দিচ্ছে কি-না? আমার কাছে মনে হচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিজের কাছে স্বচ্ছ নয়। তাদের অব্যবস্থাপনার জন্য জাতি এর আগেও ভুগেছে এবং আগামীতেও তারা আমাদেরকে ভোগাবে বলে মনে করি। দেশে প্রথম টিকা কে পাবে, সেটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ঠিক করতে হবে। আজকে রাশিয়া ও চীন তো আমাদের কাছে (টিকা পাঠাতে) চাইতেও পারত। তাদের জন্য দরজাটা বন্ধ রাখছেন কেন? তারা কীভাবে দেবে, আমাদের প্রক্রিয়ার মধ্যে যদি আসে, তাহলে আমরা কিন্তু নিতে পারি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণ মানুষকে কিভাবে টিকা দেওয়া হবে, এ টিকা কারা ফ্রি পাবে সেটাও স্পষ্ট করতে হবে। প্রায়োরিটি হিসেবে কাকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে তাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা আছে। কিন্তু পৃথিবীর অনেক দেশে কিন্তু সেটি মানে না। ইন্দোনেশিয়ায় তো রাজনীতিবিদরা আগে পাচ্ছে। আপনারা বলছেন, একটা অ্যাপ তৈরি করবেন। কতদিন লাগবে আপনাদের অ্যাপ তৈরি করতে? সেই অ্যাপে ঢুকতে পারবে কি না। কারণ সেই অ্যাপের কোয়ালিটি কী রকম হবে? এগুলো কিন্তু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। এ বিষয়গুলো যদি সমাধান করা যায় তাহলে কোভিড-১৯ টিকা বিতরণ কোনো বিষয় না।’

সবকিছু ঠিকভাবে তদারকি করা হলে জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী ভ্যাকসিন পাওয়া যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই-মাহবুব বলেন, ‘আমি মনে করি, বাংলাদেশের সক্ষমতা আছে। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে সাহস আছে, তাদের এক খণ্ডও থাকত তাহলে জাতি অনেক দূর এগিয়ে যেত। কিন্তু দুর্নীতি করতে তো তাদের কোনো সমস্যা নাই। তারা যদি ঠিকভাবে তদারকি করে তাহলে কিন্তু আমরা মনে করি আমাদের জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী আমরা ভ্যাকসিন পাবো। আগে, পরে তো হতেই পারে। সবাই কী ভ্যাকসিন নেবে? সবাইকে কিভাবে দেবে? সাধারণ মানুষকে কিভাবে দেবেন, সে তো ডাকলেও আসবে না। আর যে জটিলতা আমরা দেখেছি, আমাদের পরীক্ষার নাম তালিকাভুক্তির জন্য তাতে সাধারণ মানুষ কিন্তু বিপদে পড়েছে। যারা ক্ষমতাবান, তাদের কিন্তু ভিন্ন কোটা আছে, সে কোটায় তারা নিয়ে গেছে।’

‘আমি মনে করি এই প্রশ্নগুলি যদি সবার কাছে করা যায় তবে কোভিড ইজ নট এ প্রবলেম।’ আমাদের এখানে সংক্রমণের মাত্রা কম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যদি পাঁচের নিচে আসে তবে তো আমরা বলবো সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ হয়েই গেছে।’

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমএসএসইউ) ফার্মাকোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।

আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) মহাসচিব ডা. এম এ আজিজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ ও জনস্বাস্থ্যবিদ আবু জামিল ফয়সাল।

আলোচনা সভায় অনলাইনে যুক্ত ছিলেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম।

জাতি টপ নিউজ স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর