আমাদের দাবায়ে রাখা যায় না, প্রমাণ করেছি: শেখ হাসিনা
১১ জানুয়ারি ২০২১ ১৫:৩৯
ঢাকা: নিজেদের অর্থায়নে পদ্মাসেতু করার সিদ্ধান্তই সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পরিবর্তন করে দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশে পরনির্ভরশীল না। বাংলাদেশের মানুষ সম্পর্কে জাতির পিতা বলেছিলেন কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। আমাদের যে দাবায়ে রাখা যায় না, সেটা আমরা প্রমাণ করেছি।’
‘কিন্তু আমাদের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। সবসময় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আত্মমর্যাদা নিয়ে আমাদের চলতে হবে। কাজেই ২০২১ সাল, এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’, বলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
সোমবার (১১ জানুয়ারি) সকালে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি সরকারি বাসভবন থেকে গণভবন মন্ত্রিপরিষদ কক্ষ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, বাংলাদেশ সচিবালয় প্রান্তে যুক্ত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০২১ সালের প্রথম মিটিং আমরা করছি। সবাইকে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা। এই বছরটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০২১ সালে আমরা আমাদের মহান নেতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছি। আর সেই সাথে ২০২১ সালে এসে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকীর সঙ্গে আবার আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে যাচ্ছি। সেই জন্য বাংলাদেশের জন্য এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সৌভাগ্য, তারা আমাকে ভোট দিয়ে সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। তাই আমাদের রজতজয়ন্তী ও সুবর্ণজয়ন্তীতে সরকারে থাকার সুযোগ পেয়ে মানুষের সেবা করতে পারছি। আজ আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার সব শর্ত পূরণ করেছি। জাতির পিতা চেয়েছিলেন বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত গড়ে তুলতে। আমরা তার জন্মশতবার্ষিকীতে করোনাভাইরাসের কারণে অনেক অনুষ্ঠান করতে পারেনি। লোকসমাগম করতে পারেনি। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য স্থির করেছি, বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না, প্রতিটি ঘর আলোকিত হবে। শিক্ষা স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করবো, কর্মসংস্থান করবো। দেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাবো।’
‘আজকে আমাদের দীর্ঘসময় রাষ্ট্র পরিচালনা করার একটা সুযোগ হয়েছে। আজ সারাবিশ্বে বাংলাদেশকে সম্মান জানায়। সারাবিশ্ব বাংলাদেশের কথা শুনলে, আগে যেমন বাংলাদেশ বললে, বাংলাদেশের কথা শুনলে বলতো; বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঝড় বন্যা, দারিদ্রতা এখন আর সে কথা কেউ বলে না, বরং বলে বাংলাদেশে সারাবিশ্বে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
২০২১ সাল এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের জন্য যেটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, যখন পদ্মা সেতু নিয়ে প্রশ্ন করা হল এবং আমাদের দুর্ভাগ্য প্রশ্ন করার পিছনে আমাদের দেশেরই কিছু স্বনামধন্য লোকেই জড়িত, এটাই হচ্ছে সব থেকে দুর্ভাগ্যের বিষয়। সামান্য এক ব্যাংকের এমডি পদের লোভে এই পদ্মা সেতু বন্ধ করার ব্যবস্থা নিয়েছিল। যাই হোক, বোধহয় একটা আঘাত এলে মানুষ অনেক সময় সচেতনও হয় এবং নিজের কাজ করা শেখে। তো আমরা সেটাই শিখেছি। সবসময় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আত্মমর্যাদা নিয়ে আমাদের চলতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মনে করি যে, নতুন ২০২১ সাল আমাদের দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করুক। করানোভাইরাসের হাত থেকে দেশবাসী রক্ষা পাক। বিশ্বব্যাপী এই সমস্যা, বিশ্বের মানুষও মুক্তি পাক। আমার প্রবাসী বাঙালিরাও মুক্তি পাক। সেই সাথে সাথে আমরা আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি। ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারি এই কামনাই করি।’ আমাদের বিশাল উর্বর ভূমি এবং আমাদের দেশের মানুষ; তাদের নিয়েই আমরা দেশকে গড়বো এবং সেটা আমরা করতে পারছি বলেও জানান তিনি।