ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড: ৩০ লাখ করে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ
১১ জানুয়ারি ২০২১ ১৫:৫৬
ঢাকা: রাজধানীর গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে পাঁচ জনের মৃত্যুর ঘটনায় নিহতদের মধ্যে চার জনের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রত্যেককে ১৫ কোটি টাকা করে কেন ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে না এবং ওই হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিলে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
সোমবার (১১ জানুয়ারি) বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য অধিদফতরকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অনীক আর হক, মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ ও হাসান এম এস আজিম। তাদের সঙ্গে ছিলেন নিয়াজ মোহাম্মদ মাহবুব ও সাহিদা সুলতানা শিলা। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষে শুনানি করেন মোস্তাফিজুর রহমান খান ও কাজী এরশাদুল আলম। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করে আইনজীবী অনীক আর হক বলেন, ‘আদালত নিহত প্রত্যেক পরিবারকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রত্যেককে ১৫ কোটি টাকা করে কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না এবং ইউনাইটেড হাসপাতালের লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।’
২০২০ সালের ১৫ জুলাই রাজধানীর গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে পাঁচ জনের মৃত্যুর ঘটনায় নিহতদের চার পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে ওই অগ্নিকাণ্ডে নিহত মনিরুজ্জামানের পরিবার আদালতের বাইরে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করে নেওয়ায় সে বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি হাইকোর্ট।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন একক ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৭ মে রাতে ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে এসি বিস্ফোরণের আগুনের সূত্রপাট ঘটে। পরে ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত পাঁচজনের পরিচয়ও শনাক্ত করা হয়। নিহতদের মধ্যে চারজন পুরুষ ও একজন নারী। তারা হলেন- রিয়াজুল আলম (৪৫), খোদেজা বেগম (৭০), ভেরুন অ্যান্থনি পল (৭৪), মো. মনির হোসেন (৭৫) ও মো. মাহবুব (৫০)।
এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়।
ওই রিটের শুনানির পর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের আইজি, ফায়ার ব্রিগেড কর্তৃপক্ষ ও রাজউকের কাছে পৃথক পৃথক রিপোর্ট চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। পরে আদালতে দাখিল করা তিনটি প্রতিবেদনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার তথ্য উঠে আসে।