Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চসিক নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের তৎপরতায় ইসির ‘না’


১১ জানুয়ারি ২০২১ ২১:১৫

ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম ব্যুরো: মন্ত্রী-সংসদ সদস্যসহ সরকারের সুবিধাভোগী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রচারণায় অংশ না নেওয়া এবং নির্বাচনি এলাকায় অবস্থান না করাসহ প্রার্থীদের এ সংক্রান্ত আচরণবিধি মেনে চলার তাগিদ দিয়ে নির্দেশনা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এদিকে প্রধান দুই মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগের এম রেজাউল করিম চৌধুরী ও বিএনপির শাহাদাত হোসেন পরস্পরের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন।

সোমবার (১১ জানুয়ারি) চসিক নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান এ নির্দেশনা জারির পাশাপাশি অভিযোগের বিষয়েও পদক্ষেপ নিয়েছেন।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে স্থগিত হওয়া চসিক নির্বাচনের প্রচারণা পুনঃতফসিল অনুযায়ী গত ৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়। প্রচারণা শুরুর পর চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনের সংসদ সদস্য শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল তিনদিন নগরীতে অবস্থান করেন। এছাড়া সাবেক মন্ত্রী সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন নগরীতে অবস্থান করে নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন ঘরোয়া বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন বলে মৌখিক অভিযোগ বিএনপি নেতাদের। এর আগে গত ১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে এম রেজাউল করিম চৌধুরীর সমর্থনে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের দলীয় সাংসদরা বৈঠক করেছিলেন। সরকারি সার্কিট হাউজ ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা তাদের মেয়র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনি কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত মন্ত্রী-সাংসদদের নির্বাচনি এলাকায় অবস্থানসহ সার্বিক কর্মকাণ্ড নজরে আসার পর সোমবার রিটার্নিং অফিসার নির্দেশনাটি জারি করেছেন।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গত ৮ জানুয়ারি থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হয়েছে। সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালা, ২০১৬ এর ২২ অনুযায়ী সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নির্বাচন পূর্ব সময়ে কোনো ধরনের নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার ভোটার হলে তিনি তার ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবেন। কিন্তু উক্ত সময়ে প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান নির্বাচনি কাজে সরকারি প্রচারযন্ত্র, সরকারি যানবাহন, অন্য কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ এবং সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে ব্যবহার করতে পারবেন না।

আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি মানে প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, সরকারের মন্ত্রী, চিফ হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধী দলীয় উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাদের সমমর্যাদার কোনো ব্যক্তি এবং সংসদ সদস্য ও সিটি করপোরেশনের মেয়র।

জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ‘নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী যাদের সংশ্লিষ্ট এলাকায় থাকার অথবা নির্বাচনি প্রচারে অংশ নেওয়ার এখতিয়ার আছে, তারাই যেন থাকেন, এর বাইরে যেন কেউ না আসেন, সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।’

এদিকে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে দুটি অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে। বিএনপির প্রার্থী শাহাদাত হোসেন সোমবার জমা দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, নগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে তার নির্বাচনী পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে এবং প্রচারণার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। শাহাদাতের পক্ষে চট্টগ্রাম নাগরিক ঐক্য পরিষদ রোববার রেজাউলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে গাড়িবহর নিয়ে শোডাউনের অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

এর মধ্যে পোস্টার ছেঁড়া ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ বাকলিয়া থানাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন রিটার্নিং অফিসার। রেজাউলের শোডাউনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন রিটার্নিং অফিসার।

এম রেজাউল করিম চৌধুরীর পক্ষে মহানগর আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক হাসান মাহমুদ শমসের লিখিত অভিযোগে বলেছেন, নগরীর নাসিমন ভবনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের পাশে তাদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। অভিযোগটি কোতোয়ালী থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রিটার্নিং অফিসার।

জানতে চাইলে রিটার্নিং অফিসার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ‘প্রতিটি অভিযোগের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

পুনঃতফসিল অনুযায়ী আগামী ২৭ জানুয়ারি চসিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে।

চট্টগ্রাম টপ নিউজ নির্বাচন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর