বিদেশে আটকেপড়া শ্রমিকদের দেশে আনতে প্রণোদনা দেওয়ার সুপারিশ

ঢাকা: করোনা পরিস্থিতির কারণে বিদেশে বেকার অবস্থায় আটকেপড়া শ্রমিকদের দেশে ফেরত আনতে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার সুপারিশ করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির বৈঠকে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত বাংলাদেশি কর্মীদের পাসপোর্ট নবায়নের সুবিধার্থে সেখানে মোবাইল পাসপোর্ট সেন্টার স্থাপনের পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। বৈঠকে কমিটির সদস্য প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ, অধ্যাপক মো. আলী আশরাফ, মৃনাল কান্তি দাস ও পংকজ নাথ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কমিটি সূত্র জানায়, করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশ্বব্যাপী এক অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ দেশে বাংলাদেশি শ্রমিকরা ভয়াবহ সংকটে পড়েছে। অনেকে বেকার হয়েও করোনার কারণে দেশে ফিরতে পারছেন না। আবার অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও নবায়ন করতে না পারায় দেশে ফিরতে সমস্যা হচ্ছে। ফলে আটকে পড়া শ্রমিকদের মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে। এদিকে করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মানার কারণে বিমানের ব্যয় নির্বাহের জন্য ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। যা বেকার হওয়া শ্রমিকদের জন্য নতুন সংকট তৈরি করেছে। এ নিয়ে কমিটির সদস্যরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

সূত্র জানায়, ওইসব জটিলতা নিরসন করে কীভাবে বিদেশে অবস্থানরত শ্রমিকদের দেশে ফেরত আনা যায় সে বিষয়ে কমিটির পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। বিশেষ করে প্রবাসীকর্মীদের সুবিধার্থে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভাড়া সাময়িকভাবে কমানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে যেসব কর্মীর চাকরি চলে গেছে, তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের কাছ থেকে বিশেষ ভর্তুকি নিয়ে বিমান মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে।

এছাড়া বৈঠকে বিদেশে অবস্থানরত কর্মীদের পাসপোর্ট সেবা প্রদানের জন্য, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে মোবাইল পাসপোর্ট অফিস (মেশিনসহ) স্থাপন করা যায় কিনা সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। আর দেশের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখতে ভিজিট ভিসায় যারা বিভিন্ন দেশ সফর করছেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যাতে দেশে ফিরে আসেন, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে ভ্রমণকারীদের কাছে থেকে আন্ডারটেকেন নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত অক্টোবর মাসে সংসদীয় কমিটির বৈঠকেও বিদেশে আটকেপড়া শ্রমিকদের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, আবুধাবিতে বাংলাদেশি কিছু সংখ্যক কর্মীকে করোনা মহামারির জন্য ঢুকতে না দিয়ে ফেরত পাঠায়। ওই সময় বিমানকে তাদের আবার নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়। তবে বিমান কর্তৃপক্ষ সেসময় বিনা ভাড়ায় তাদের নেয়নি। এধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, কমিটির পক্ষ থেকে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

আটকেপড়া প্রণোদনা বিদেশে শ্রমিক সুপারিশ