বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল-ভাস্কর্যের নিরাপত্তা নিয়ে আদালতকে জানাল পুলিশ
১২ জানুয়ারি ২০২১ ১৯:০১
ঢাকা: সারাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ও ম্যুরালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে পুলিশের আইজিপির পক্ষে হাইকোর্টে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে। এই নিরাপত্তা সার্বক্ষণিক বজায় থাকবে বলেও জানানো হয় ওই প্রতিবেদনে। এসব বিষয়ে আগামী ২১ জানুয়ারি অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (কনফিডেনশিয়াল) মো. হায়দার আলী খানের স্বাক্ষরে পাঠানো প্রতিবেদনটি বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি শাহেদ নুর উদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চে জমা দেওয়া হয়।
আদালতে ওই দিন রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী বশির আহমেদ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
আদেশের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার সাংবাদিকদের বলেন, `আদালতের নির্দেশে পুলিশ প্রধানের পক্ষ থেকে আদালতে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।’
এতে বলা হয়েছে, সারাদেশের জেলা-উপজেলা সদরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যত ম্যুরাল ও ভাস্কর্য ছিল সেগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, গোয়েন্দা বাহিনী নজরদারিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া এলাকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনগণকে ম্যুরাল ও ভাস্কর্যের নিরাপত্তা ও রক্ষণাবেক্ষণে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।`
আদেশের পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আরও বলেন, `সারাদেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১ হাজার ২২০টি ভাস্কর্য-ম্যুরাল নির্মাণের কাজ চলছে। এরই মধ্যে ১ হাজার ২০১টি ভাস্কর্যের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ১৯টি ভাস্কর্যের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে বলে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।`
এ ছাড়া জেলা-উপজেলা সদর ও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স কার্যালয় একই এলাকায় হলে এর যেকোনো একটি স্থানে ম্যুরাল-ভাস্কর্য নির্মাণ করলেই হবে। সব জায়গায় প্রয়োজন হবে না।
একই সঙ্গে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ দেশের সকল জেলা-উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপনে অগ্রগতি জানতে চেয়েছেন আদালত। এ বিষয়ে আগামী ২১ জানুয়ারি অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।`
গত ৭ ডিসেম্বর হাই কোর্ট বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও ভাস্কর্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেয়।
সেই সঙ্গে আগামী এক মাসের মধ্যে জেলা-উপজেলা সদরে জাতির জনকের ম্যুরাল স্থাপনের অগ্রগতির বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
সে নির্দেশেই মন্ত্রিপরিষদ, গণপূর্ত সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের পক্ষ থেকে জাতির পিতার ম্যুরাল- ভাস্কর্য স্থাপন এবং এর নিরাপত্তা বিষয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হয়, যা মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) আদালতে উপস্থাপন করা হলো।
গত বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে আদালত বলেছিল, একাত্তরের যে দিনটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, সেই ৭ মার্চকে ‘জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস’ ঘোষণা করে এক মাসের মধ্যে গেজেট প্রকাশ করতে হবে।
এ ছাড়া মুজিববর্ষের মধ্যেই দেশের সব জেলা-উপজেলা কমপ্লেক্সের সামনে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন করতে হবে।
সেদিন আদালত এই আদেশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানিয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল।
এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের দেওয়া একটি প্রতিবেদন গত বছর ৭ ডিসেম্বর আদালতে দাখিল করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার সেটি আদালতে উপস্থাপন করেন। রিটকারী আইনজীবী আইনজীবী বশির আহমেদও সে সময় শুনানিতে যুক্ত ছিলেন।
এর আগে ৭ মার্চকে ঐতিহাসিক জাতীয় দিবস হিসেবে কেন ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। তারই ধারাবাহিকতায় এসব নির্দেশনা দেন আদালত।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এমআই