Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রতিবন্ধীদের জন্য সাড়ে ৪ শ কোটি টাকায় হচ্ছে ক্রীড়া কমপ্লেক্স

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৪ জানুয়ারি ২০২১ ০৮:১৬

ঢাকা: সাভারে প্রতিবন্ধীদের জন্য তৈরি হচ্ছে ক্রীড়া কমপ্লেক্স। এজন্য ‘বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৪৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই ক্রীড়া কমপ্লেক্স তৈরি করা গেলে বিশেষ ধরনের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি, যেমন— সেরিব্রাল পালসি (সিপি), দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, শ্রবণ প্রতিবন্ধী, বধির-অন্ধ, অটিস্টিক, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বা মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের খেলাধুলার সুযোগ তৈরি হবে। এর মাধ্যমে তাদের সুস্থ বিনোদনের পথ তৈরি করা সম্ভব হবে।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, সমাজের একজন সুস্থ ও স্বাভাবিক নাগরিকের মতো বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদেরও সমঅধিকার ও সুযোগ পাওয়ার অধিকার রয়েছে। সেই সুযোগ দিয়ে সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপনের পথ তৈরি করা গেলে তাদেরও সমাজের মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হবে। এর জন্য বিশেষায়িত ব্যক্তিদের বিশেষ স্কুল, কারিগরি সেবা ও পুনর্বাসন ব্যবস্থা যেমন প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক পরিবেশ। বিশেষ করে এসব বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু-কিশোরদের জন্য সুইমিং পুল, জিমনেশিয়াম নির্মাণ ও ফুটবল, ক্রিকেট খেলার সুবিধা বাড়ানো একান্ত জরুরি। সে কারণেই প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হচ্ছে।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, প্রকল্পটির প্রস্তাব পাওয়ার পর ২০১৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়েছে। ফলে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন ও গণপূর্ত অধিদফতর।

বিজ্ঞাপন

সূত্র জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী তৃতীয় বিশ্বের ১০ শতাংশ মানুষ বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। প্রতিবন্ধী শনাক্তকরণ কর্মসূচি অনুযায়ী ১৫ লাখ ৪০ হাজার ৮০০ জন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তাদের জন্য যে পরিমাণ সেবা, সুযোগ বা বিনোদনমূলক সুবিধা রয়েছে, তা পর্যাপ্ত নয়। এই বিপুল জনগোষ্ঠীর জন্য যদি কোনো প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো, প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও বিনোদনের ব্যবস্থা করা যায়, তবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদেরও উন্নয়নের মূলধারায় যুক্ত করা সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরাও জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের মানবসম্পদে পরিণত করা গেলে তারা আর সমাজের বোঝা হিসাবে থাকবে না।

প্রতিবন্ধীদের জন্য হাতে নেওয়া এই প্রকল্পের মূল কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে— পূর্ত কাজ; একাডেমিক, ডরমিটরি ও হোস্টেল ভবন তৈরি; গ্যালারি ও ড্রেসিং রুম তৈরি; আবাসিক ব্লক, ফুটবল ও ক্রিকেট মাঠ তৈরি; সুইমিং পুল, মসজিদ, শিশুদের খেলার মাঠ, রাস্তা, সীমানা প্রাচীর ও গেট স্থাপন; সাব-স্টেশন স্থাপন ও বহিঃবিদ্যুতায়নের ব্যবস্থা করা এবং ক্রীড়া সামগ্রী ও অফিস সরঞ্জাম, জিম ইক্যুইপমেন্ট, কম্পিউটার, যানবাহন ও আসবাবপত্র কেনা। এছাড়া শিক্ষা সফর ও কারিগরি পরিদর্শনের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে প্রকল্পে।

পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য সাবেক সদস্য (সচিব) আবুল কালাম আজাদ সারাবাংলাকে বলেন, সমাজের একজন সাধারণ নাগরিকের যেমন বিভিন্ন অধিকার রয়েছে, তেমনি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদেরও অধিকার রয়েছে। বরং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন হওয়ার কারণে তাদের জন্য বাড়তি সুযোগ-সুবিধা তৈরি করা প্রয়োজন। তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের সুযোগ তৈরির মাধ্যমে সমাজের মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এ কারণে এসব ব্যক্তির জন্য উপযোগী ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক পরিবেশ তৈরি করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এ পরিপ্রেক্ষিতেই প্রকল্পটির প্রক্রিয়াকরণ শেষে একনেকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে।

সারাবাংলা/জেজে/টিআর

ক্রীড়া কমপ্লেক্স

বিজ্ঞাপন

মেগা নিলাম শেষে কোন দল কেমন হলো?
২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:১১

আরো

সম্পর্কিত খবর