ধানের উৎপাদন বাড়াতে আরও ভালো জাত লাগবে: কৃষিমন্ত্রী
১৪ জানুয়ারি ২০২১ ১৯:৪৬
ঢাকা: ধানের উৎপাদন বাড়াতে আরও ভালো জাত উদ্ভাবনের আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। একইসঙ্গে উচ্চফলনশীল জাতগুলো কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে কৃষি মন্ত্রণালয় ও কৃষিসংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বড় আকারের প্রকল্প নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ভবিষ্যতে ধানের উৎপাদন নিয়ে মাঠ পর্যায় থেকে যেন ভুল তথ্য না আসে সে ব্যাপারেও কঠোর সতর্ক বার্তা দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের (ব্রি) বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালার উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্যে এমন নির্দেশনা উঠে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় গাজীপুর ছাড়াও ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে অতিথিরা যুক্ত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘ধানের নতুন জাত উদ্ভাবন করলেও সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ১৭ কোটি মানুষ। প্রতিদিনই নতুন মুখ যুক্ত হচ্ছে। আবার জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবও রয়েছে। চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, ধানের উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে। ধানের উৎপাদনশীলতা আরও বাড়াতে হবে। উৎপাদনশীলতা ২০ শতাংশ বাড়াতে পারলেও হয়। উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ভালো জাত লাগবে। জিংক, আয়রন, ক্যালসিয়াম একই জাতে যদি বাড়াতে পারেন তাহলে কাজে দেবে। কৃষকের এত জমি নেই যে জিংক বা আয়রন পেতে আলাদা আলাদা মাঠে ফসল করবে। তাই একইজাতে জিংক, আয়রন, ভিটামিন সব থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এতগুলো জাত আপনারা (ব্রি) দিয়েছেন! কিন্তু ব্রি-৮৭-এর উৎপাদনশীলতা অনেক বেশি। নতুন উদ্ভাবিত জাতগুলো কৃষক পর্যায়ে নেওয়া অনেক কঠিন। উচ্চফলনশীল জাতগুলো কৃষক পর্যায়ে নেওয়ার জন্য একটি বড় আকারের প্রকল্প নিতে হবে। সবগুলো গবেষণা প্রতিষ্ঠান মিলে উচ্চফলনশীল কিছু জাত বাছাই করুন। সবগুলো প্রতিষ্ঠান মিলে সম্মিলিতভাবে বসে সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এই জাতগুলো ছড়িয়ে দিতে হবে।’
ধানের উৎপাদন নিয়ে ভুল তথ্য যাতে না আসে তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘পরিসংখ্যান নিয়ে আমাদের একটি ঝামেলা আছে। ধানের উৎপাদন, এরিয়া, কোন জাত কতটুকু- কিছু এলাকা নির্ধারণ করে আমরা তা ক্রস চেক করতে চাই। মাঠ পর্যায়ে যারা কৃষি কর্মকর্তা রয়েছেন তাদের অবশ্যই সঠিক তথ্য দিতে হবে। গত বছর ৫ লাখ টন ধান উৎপাদন হয়েছে। এ বছর বন্যার কারণে যদি ৫০ হাজার টন কমিয়ে দিই- তা হবে না। প্রকৃত তথ্য বের করতে হবে। এজন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সঙ্গে অন্যান্য কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠাকেও যুক্ত করা হবে।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এ বছর পাঁচ বার বন্যা হয়েছে। আম্পানও হয়েছে। এসব মোকাবিলা করেই আমাদের খাদ্যশস্য উৎপাদন করতে হয়। যে বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয় না সে বছর আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকি। এবার আমনের ফলন কম হওয়ায় কৃষক ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে। চালের দাম বেশি হওয়ায় গরিব মানুষের একটু কষ্ট হচ্ছে। আবার যারা খুব বেশি গরিব, ওএমএসের চাল পাচ্ছে তাদের খুব কষ্ট হচ্ছে না। নিম্ন আয় ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির কষ্ট হচ্ছে। গত দুই তিন বছর কৃষকরা ধানের ন্যায্যমূল্য পায়নি।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহ্সান রাসেল, গাজীপুরের সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, কৃষি সচিব মেসবাহুল ইসলাম, কৃষি অর্থনীতিবিদ এম এ সাত্তার মন্ডল, কৃষি সাংবাদিক শাঈখ সিরাজ ও ব্রি’র মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর।
সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম