চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজারে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর জন্য অপেক্ষমাণ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। সংঘাতের খবর পেয়ে রেজাউল করিম ওই এলাকায় গণসংযোগ না করে ফিরে যান।
শনিবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে লালখান বাজার ওয়ার্ডের টাইগারপাস বটতল মোড়ে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগ সমর্থিত লালখান বাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল হাসনাত মো. বেলাল এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুমের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয় বলে জানা গেছে।
লালখান বাজার ওয়ার্ডে রেজাউল করিম চৌধুরীর পূর্বনির্ধারিত গণসংযোগ কর্মসূচি ছিল। টাইগারপাস বটতল মোড়ে পথসভার একটি কর্মসূচি ছিল।
জানা গেছে, রেজাউলকে স্বাগত জানাতে বটতল মোড়ে জড়ো হন কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল হাসনাত মো. বেলাল ও তার অনুসারীরা। পরে সেখানে আসেন দিদারুল আলম মাসুম ও তার অনুসারীরা। একপর্যায়ে দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে ধাওয়া ও ইটের টুকরা নিক্ষেপ শুরু হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেণে আনে।
নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সদস্য আবুল হাসনাত মো. বেলাল শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী। দিদারুল আলম মাসুম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
জানতে চাইলে আবুল হাসনাত বেলাল সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রায় দেড় হাজার নেতাকর্মী নিয়ে আমি রেজাউল ভাইয়ের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। দিদারুল আলম মাসুমের নেতৃত্বে একটি মিছিল ঢুকে পড়ে আমাদের ভেতরে। আমার সঙ্গে নারী কর্মীরাও ছিল। তারা হঠাৎ হামলা শুরু করে। হামলায় আমার চারজন কর্মী আহত হয়েছেন। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।’
দিদারুল আলম মাসুম বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ মিছিলের পেছন থেকে হামলা করেছে তার (বেলাল) লোকজন। আমার ছয়-সাতজন কর্মী আহত হয়েছে।’
মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিমের সঙ্গে থাকা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. ইলিয়াস সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, লালখান বাজার ওয়ার্ডে গণসংযোগ করলেও সংঘাতের খবর পাবার পর টাইগারপাস বটতল এলাকায় তারা আর যাননি।
নগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) বিজয় কুমার বসাক বলেন, ‘মেয়র প্রার্থীর প্রচারণায় অংশগ্রহণ নিয়ে দুপক্ষে হালকা সমস্যা হয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।’
লালখান বাজার ওয়ার্ডে আবুল হাসনাত বেলাল ও দিদারুল আলম মাসুম উভয়ই কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের সমর্থনপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে সমর্থনের দৌড় থেকে ছিটকে পড়েন মাসুম। পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির বেলাল মনোনয়ন পেলে বিরোধিতায় সরব হন মাসুম।
ওই ওয়ার্ডে আগের তিনবারের কাউন্সিলর এফ কবির আহমেদ মানিকও দলের সমর্থন চেয়েছিলেন। সমর্থন না পেলেও তিনিও প্রার্থী হয়েছেন। বেলাল সমর্থকদের অভিযোগ, বিদ্রোহী প্রার্থী মানিকের পক্ষ নিয়ে মাসুম তার অনুসারীদের দিয়ে বেলালের কর্মী-সমর্থকদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করাচ্ছেন।