Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ মানুষ কর্তৃত্ববাদী সরকারের অধীনে’

শাহীনূর সরকার
১৭ জানুয়ারি ২০২১ ১৫:৫৮

ঢাকা: “বর্তমানে ‘গণতান্ত্রিক সংকট’ মোকাবিলা করছে বিশ্ব। গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ মানুষ এমন পরিবেশে বাস করছে যার অধীনে কর্তৃত্ববাদী সরকার রয়েছে। কিন্তু সেখানে বলা হচ্ছে গণতন্ত্র আছে। আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীর ৬৭ শতাংশ মানুষ এমন রাজনৈতিক পরিবেশে বসবাস করছেন যেখানে পূর্ণ গণতন্ত্র নেই। এশিয়াতেও এমন অনেক দেশ আছে যেগুলো গণতান্ত্রিকও নয়, কর্তৃত্ববাদও নয়।”

বুধবার (১৩ জানুয়ারি) সারাবাংলা ডটনেটের বিশেষ আয়োজন সারাবাংলা ফোকাসের আলোচনার বিষয় ছিল ‘গণতন্ত্রের আড়ালে কর্তৃত্ববাদ: কোনদিকে বিশ্ব’। সেখানে বক্তাদের আলোচনায় এসব কথা উঠে আসে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা ডটনেটের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট এমএকে জিলানীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো আনু আনোয়ার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. আসিফ মোহাম্মদ শাহান এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।

আলোচনায় গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখার জন্য গণতান্ত্রিক প্রাতিষ্ঠানগুলোর কাঠামোর গুরুত্ব তুলে ধরেন বক্তারা। ড. আসিফ মোহাম্মদ শাহান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে যে কর্তৃত্ববাদের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে সেটা অনেকটা ট্রাম্পকেন্দ্রিক। কিন্তু সেদেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক যে কাঠামো তা এতো চমৎকারভাবে সাজানো যে, কেউ ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা করলে, প্রতিষ্ঠানগুলো তাতে বাধা দেবে।’ যুক্তরাষ্ট্রেও সম্প্রতি যা ঘটছে তা এক অর্থে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাফল্য বলে মনে করেন তিনি।

ড. শাহান বলেন, ‘কর্তৃত্ববাদের বিস্তার যে দেশগুলোতে দেখা যাচ্ছে, সেখানকার প্রতিষ্ঠানগুলো যথেষ্ট শক্তিশালী কি না, তা দেখতে হবে। তাহলেই বোঝা যাবে বিশ্ব কর্তৃত্ববাদের দিকে কতদূর পর‌্যন্ত অগ্রসর হতে পারবে।’

বিজ্ঞাপন

বিভিন্ন দেশের প্রেক্ষাপট বুঝে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করলেই গণতন্ত্র টিকে থাকবে বলে মনে করেন তিনি। বলেন, ‘পপুলিজম প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করে দিলে তার ফল ভোগ করতে হবে। আবার প্রতিষ্ঠান ঠিকমতো ভূমিকা রাখলে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব।’

গণতন্ত্রের যে নিম্নমুখী প্রভাব, তার জন্য গণতন্ত্র নিজেই অনেকটা দায়ী উল্লেখ করে আনু আনোয়ার বলেন, ‘কর্তৃত্ববাদ উত্থানের দুটি কারণ হতে পারে। এদের মধ্যে একটি হলো, গণতন্ত্র চরম পর্যায়ে উন্নীত হওয়া, আরেকটি হলো গণতন্ত্রের সুফল সবাই সমানভাবে পায়নি। সমাজের উঁচুশ্রেণির মানুষ এটা এতোবেশি পেয়েছে যে সাধারণ মানুষ গুরুত্ব পায়নি। আর এই প্রবণতার ফলই হলো ট্রাম্প আর নরেন্দ্র মোদি।’

ভবিষ্যতে কেমন শাসনব্যবস্থা পৃথিবীতে দেখা যাবে, এমন প্রশ্নের জবাবে আনু আনোয়ার বলেন, ‘শাসনব্যবস্থার লক্ষ্য হলো জীবনমানের উন্নয়ন। পরিবর্তিত সমাজ ও রাষ্টের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে নতুন নতুন ধারণা তৈরি করে চলেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানিরা। গণতন্ত্রের ভুলত্রুটি চিহ্নিত করে ভবিষ্যতে হয়তো নতুন কোনো ব্যবস্থা সফল হবে বলে মনে করেন তিনি। বলেন, দেশ, স্থান, কাল, পাত্র ভেদে এটা ভিন্ন হতে পারে।’

রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘অর্থনৈতিক ও সামাজিক গণতন্ত্রের আলোচনাকে বাদ দিয়ে রাজনৈতিক গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব নয়। কর্তৃত্ববাদ সরকার ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও কীভাবে করায়ত্ব করা যায় সেদিকে নজর দেবে।’ সেজন্য বিশ্বের জনগণকে একটি ইতিবাচক শক্তির জায়গায় জাগ্রত করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

প্রিন্স বলেন, ‘কর্তৃত্ববাদী শাসনকে চ্যালেঞ্জ করে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য সব শ্রেণির মানুষকে সোচ্চার করতে হবে। একদিকে যেমন নির্বাচনি ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে, অন্যদিকে সবার ভোটের অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে হবে।’ একইসঙ্গে অর্থনৈতিক বৈষম্যও দূর করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

সারাবাংলা/এসএসএস

কর্তৃত্ববাদ গণতন্ত্র সারাবাংলা ফোকাস

বিজ্ঞাপন

আজ সশস্ত্র বাহিনী দিবস
২১ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:১৬

আরো

সম্পর্কিত খবর