ইউনাইটেডে অগ্নিকাণ্ড: ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের আদেশ স্থগিত
১৭ জানুয়ারি ২০২১ ১৮:০১
ঢাকা: গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের আদেশ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। রোববার (১৭ জানুয়ারি) ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতের বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানের এই আদেশ দেন।
আদালতে ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষে শুনানি করেন মোস্তাফিজুর রহমান খান। আর রিটের পক্ষে শুনানি করেন অনিক আর হক। তার সঙ্গে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী নিয়াজ মোহাম্মদ মাহবুব।
আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের আদেশ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানের চেম্বার জজ আদালত।’
এর আগে, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন আদালত।
গত ১১ জানুয়ারি অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মধ্যে চার জনের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। আদেশে ১৫ দিনের মধ্যে এ ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছিল।
একইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রত্যেককে ১৫ কোটি টাকা করে কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না এবং ওই হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিলে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। চার সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য অধিদফতরকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
২০২০ সালের ১৫ জুলাই রাজধানীর গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় নিহতদের চার পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে ওই অগ্নিকাণ্ডে নিহত মনিরুজ্জামানের পরিবার আদালতের বাইরে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করে নেওয়ায় সে বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৭ মে রাতে ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে শীতাতপ যন্ত্র (এসি) বিস্ফোরণের আগুনের সূত্রপাত ঘটে। পরে ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত পাঁচজনের পরিচয়ও শনাক্ত করা হয়। তারা হলেন- রিয়াজুল আলম (৪৫), খোদেজা বেগম (৭০), ভেরুন অ্যান্থনি পল (৭৪), মো. মনির হোসেন (৭৫) ও মো. মাহবুব (৫০)।
পরে এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানির পর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি), ফায়ার ব্রিগেড কর্তৃপক্ষ ও রাজউকের কাছে পৃথক পৃথক প্রতিবেদন চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। পরে আদালতে দাখিল করা তিনটি প্রতিবেদনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার তথ্য উঠে আসে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এমও